[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
রাঙ্গামাটিতে চোখ রাঙাচ্ছে ম্যালেরিয়া, ৫ মাসে আক্রান্ত ৬৭৬ জনবাঘাইছড়িতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দিলেন জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দবান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ দুই রোহিঙ্গা নারী আটকবাল্যবিবাহ আইনে শাস্তির বিধান থাকলেও সচেতনতার অভাব: খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকদীঘিনালায় মাদকদ্রব্য বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে ৭বিজিবি’র সভারামগড় কৃষি অফিসের বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণযুবককে অপহরণ করে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী লামায় ৩ সন্ত্রাসী আটকখাগড়াছড়ির পানছড়িতে প্রশিক্ষণের আড়ালে প্রতারণার ঘটনায় গ্রেপ্তার- ৩তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে জনবল নিয়োগ ও শিক্ষা বৃত্তিতে বৈষম্য বন্ধের দাবিমাটিরাঙ্গায় কৃষকের দক্ষতা ও টেকসই কৃষি নিয়ে দিনব্যাপী কর্মশালা
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

বমু রিজার্ভ বনের কাঠ কাটা ও পাচারের সত্যতা পায়নি তদন্ত কমিটি

॥ লামা উপজেলা প্রতিনিধি ॥
লামা বন বিভাগের লামা রেঞ্জের আওতাধীন সংরক্ষিত বনাঞ্চল ‘বমু রিজার্ভের’ কাঠ কাটা ও পাচারের সত্যতা পায়নি চট্টগ্রাম বন সংরক্ষক কার্যালয় হতে গঠিত তদন্ত কমিটি। অভিযোগকারীর প্রতিনিধিদের বমু রিজার্ভে দেখানো স্থান গুলোতে তদন্ত কমিটি, বন বিভাগের লোকজন দিনব্যাপী তল্লাশী চালিয়ে কাটা গাছের কোন চিহ্ন বা কাঠ পাচারের সত্যতা না পাওয়ার বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির আহবায়ক চট্টগ্রাম বন সংরক্ষক কার্যালয়ের উপ বন সংরক্ষক এম.এ. হাসান।

দিনব্যাপী তদন্ত শেষে রাতের লামা বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তার কার্যালয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের সহকারী বন সংক্ষক মোঃ রাশিক আহসান, চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের ফরেস্ট রেঞ্জার মোঃ আবদুল মালেক, লামা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম আতা এলাহি, হাবিবুর রহমান, জসিম উদ্দিন, আরিফুল ইসলাম, সাংবাদিক মোঃ ফরিদ উদ্দিন, নুরুল করিম আরমান, খগেশ প্রতি চন্দ্র খোকন, বেলাল আহমদ, রফিকুল ইসলাম সহ প্রমূখ।

বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য এবং স্থানীয় জনসাধারণ সাথে কথা বলে জানা যায়, বমু বিট এলাকা বমু বিলছড়ি ইউনিয়ন তথা চকরিয়া উপজেলাধীন হওয়ায় ২০০৫ সালের পূর্বে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ভৌগলিক কারণে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ হতে এর দুরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। পাহাড়িপথে সার্বক্ষণিক নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগের কোন সুযোগ না থাকায় এবং বনাঞ্চলের চারিপাশ লামা উপজেলা বেষ্টিত হওয়ায় এবং বমুবিট এলাকাটি অনেকপূর্ব থেকেই জবরদখলপূর্ণ এলাকা হিসাবে বন বিভাগের নজরদারি থাকায় ২০০৫ সালে বিটটি লামা বন বিভাগের অন্তর্ভুক্ত হয়। বমুবিট এলাকাটি লামা বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণে আসার প্র্বূ থেকেই জবরদখল প্রবন হওয়ার দরুণ সরকারী বন ও সরকারী বন সম্পদ রক্ষার্থে ২০২১ সনে বনভূমি জবরদখলকারীদের তালিকা প্রস্তুত করে তা কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে উচ্ছেদ প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। যার বাস্তবায়ন সরকারের দিক নির্দেশনা মোতাবেক প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সরকারী তথ্য মতে সংরক্ষিত বমু রিজার্ভ মোট বনভুমির পরিমান ২১৭৮.৮৪ একর। তন্মধ্যে সংরক্ষিত বন ভুমির পরিমান ২০২৭. ৪২ একর অবশিষ্ট ১৫১.৪২ একর রক্ষিত বনভুমি। ১৯৮৯-৯০ সন হতে ২০২৩-২৪ সন পযন্ত পর্যায়ক্রমে মোট ১০৩০ একর বনভূমিতে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে স্বল্প মেয়াদি নানা প্রজাতির চারা লাগিয়ে নতুনভাবে বন সৃজন করে সামাজিক বনায়ন বিধিমালা অনুযায়ী স্থানীয় জনগোষ্ঠী ৯১৭ জন উপকারভোগী নির্বাচন করে চুক্তিপত্র সম্পাদিত হয়। উপকারভোগীরা বাগান রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে। ইতিমধ্যে বমু বিট এলাকায় ২০১৬-১৭ সন হতে এ পযন্ত ২৫০ একর সামাজিক বনায়নের গাছ সরকারি ভাবে নিলাম করে উপকারভোগীদের মাঝে লভ্যাংশের হিস্যা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। যার দরুণ উপকারভোগীদের মাঝে তথা বমু এলাকার জনগনের মধ্যে অভুতপূর্ব সাড়া পরেছে। নিলামে উল্লেখিত ২৫০ একর সামাজিক বনায়নের গাছ বিক্রয়ের পর উক্ত স্থানে ২৫০ জন উপকারভোগীদের সম্পৃক্ততায় ২য় আবর্তে পুনরায় ২৫০ একর সামাজিক বনায়ন সৃজন করা হয় যা বর্তমানে সফল বাগান ও দৃষ্টিনন্দিত।

সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী আমির হোসেন, তহুরা বেগম ও মোহাম্মদ হোসেন জানান, বনভুমি জবরদখল তথা যেকোন বন অপরাধ দমনে লামা বন বিভাগের জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছে। বেশকিছু দিন যাবৎ স্বার্থন্বেশী একটি মহল বমু বিটের সরকারী বাগানের ক্ষতিসাধন করতে না পেরে এবং বনভুমিতে নতুনকরে জবরদখল করতে না পেরে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলে লামা বন বিভাগের বমু বিট, লামা রেঞ্জ ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নামে ফেসবুক ও নামসর্বস্ব এক পত্রিকায় অসত্য, ভিত্তিহীন কল্পকাহিনী প্রচার করে আসছে। যার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই। বন বিভাগের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট বমু বিটের রিজার্ভের সেগুন গাছ অবৈধভাবে কর্তন ও জোতের কাঠের আড়ালে পাচারকাজে বনবিভাগের কয়েকজন দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী জড়িত বিষয়ক অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৪/০৫/২০২৫ইং তারিখ চট্টগ্রাম বন সংরক্ষকের দপ্তর হতে গঠিত তদন্ত টিম সরেজমিনে বাগানএলাকা তদন্তে আসেন। মূল অভিযোগকারী তার অসত্য, ভিত্তিহীন, কাল্পনিক অভিযোগ প্রমানে ব্যর্থ হয়ে সরকারী দপ্তরকে অহেতুক হয়রানি করছে।

প্রতিবেদক সরেজমিনে বমু বিটের নন্দীরবিলের চড়ুইবিল এলাকার সেগুন বাগানে গিয়ে স্থানীয় চাষী আমির হোসেন ও মোহাম্মদ হোসেন নামক চাষীর সাথে কথা বলে জানা যায় সেগুন বাগানটি ১৯৯১-৯২ সনে সৃজিত এবং ২০১৭ সালের পূর্বেই প্রায় অর্ধেক পরিমান সেগুন বাগান বিনষ্ট হলে সেখানে ২০১৭-১৮ সনে ১০ হেক্টর সামাজিক বনায়ন সৃজন করে ২৫ জন উপকারভোগী ও তাদের কমিটির সভাপতি রুহুল আমীন এবং সেক্রেটারী আবু বক্করের দায়িত্বশীল পাহারা ও গাছ রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর থেকে ওই বাগানে আর কোন গাছ কাটাকাটি হয় নাই। ফলে সেগুন বাগানটি এত সুন্দর হয়েছে যে কোন ব্যক্তিরই পছন্দ হবে। এদিকে পানিস্যাবিল ওয়েদ্দারঘোনা এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ২০১০-১১ সনে বন বিভাগ ১০ হেক্টর সেগুনবাগান সৃজন করে ২৫ জন উপকারভোগীদের রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব দেওয়ায় সেটিও একটি সফল বাগানে পরিনত হচ্ছে। উক্ত ১০ হেক্টর সেগুন বাগানের গাছের বয়স ১৩/১৪ বছর তাই বাগানের গাছগুলির ম্যাচুরিটি আসে নাই।

লামার জোত মালিক ও একাধিক কাঠ ব্যববসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায় বমু বিটে মাত্র ২০ হেক্টরের মতো সেগুন বাগান আছে এবং তা অক্ষত ও দৃষ্টিনন্দন। বন বিভাগ সরকারের বিধি অনুসরণ পূর্বক জোত ভূমির শুধুমাত্র সেগুন, গামার ও কড়ই প্রজাতির কাঠ কর্তন করার অনুমতি দিয়ে থাকে। তাতে বনের কাঠ মিশানোর কোন সুযোগ নেই। তথাকথিত এক সাংবাদিক বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর নিকট থেকে বিশেষ সুবিধা চেয়ে আল্টিমেটাম দেন, তাকে চাঁদা না দিলে কেউ কাঠের ব্যবসা করতে পারবে না। এইসব কাল্পনিক অভিযোগ তার সৃষ্টি।