এমন একটা দেশে বসবাস করছি যারা ক্ষমতাবান তারা আইন মানেন না
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
রাঙ্গামটি জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হাবিব উল্লাহ মারুফ বলেছেন, পরিবেশের ক্ষতিকারক পাহাড় কাটায় জড়িতদের বিরদ্ধে মামলা করুন এতে কোন ভয় নাই। প্লাষ্টিকের ক্ষতিকর বিষয়ে স্কুলের প্রত্যেকটি শ্রেণী কক্ষে আলোচনা করুন। দুঃখের বিষয় আমরা এমন একটি দেশে বসবাস করছি যারা ক্ষমতাবান তারা আইন মানেন না। বুধবার (২৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের আয়োজনে সকাল সাড়ে ১০ঘটিকায় প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ পালন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মোঃ মোবারক হোসেন, পরিচালক স্থানীয় সরকার বিভাগ, মোহাম্মদ রুহুল আমীন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), মোঃ আজহারুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত সিভিল সার্জন, জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট, পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কর্মকর্তা সহ মোঃ হাবিবুর রহমান জেলা সমন্বয়ক, ব্রাক রাঙ্গামাটি, জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুন, সরকারি বেসরকারি পদস্থ কর্মকর্তা সাংবাদিকবৃন্দ, বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছ্রাত-ছাত্রীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, প্লাস্টিকের কারনে ভয়াবহ দূষণ বেড়ে গেছে, রাঙ্গামাটিও তার বাইরে নয়। প্লাস্টিকের দূষণ ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। তাই ক্যান্সার থেকে বাঁচতে হলে প্লাস্টিক বর্জন করতেই হবে। তিনি বলেন, সভা সমাবেশ বা যে কোন স্থানে আলাপ আলোচনায় অন্তত একবার হলেও প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে কথা বলুন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রতিটি শ্রেণী কক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে প্লাস্টিকের দূষনের বিষয়ে আলোচনা করুন। আইন প্রয়োগ করে সামাজিক এ সমস্যার নিরসন হবে না, যতক্ষণ না আমরা সবাই সচেতন হচ্ছি। কাপ্তাই হ্রদ দূষণ হচ্ছে। ট্যুারিস্ট বোট, হাউজ বোটগুলোর রেজিস্ট্রেশনও নেই। তিনি বলেন, আমরা এমন একটি দেশে বসবাস করছি যারা ক্ষমতাবান তারা আইন মানেন না। এসময় তিনি বন বিভাগের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, বন বিভাগের লোকজন কি করছেন, সমস্যা হলে আমার কাছে আসেন কিন্তু বন আইনগুলো পড়েন না। সে যেই হোক পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে মামলা করুন। তিনি সকলের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে বলছি, কিন্তু আমিও দোষী যে, আমার অফিসেই প্লাস্টিকের বোতলে অনেককে পানি দিতে হয়েছে। তবে আগামী থেকে আর দেয়া হবে না। তিনি বলেন, বিশুদ্ধ বাতাসের শহর রাঙ্গামাটিতেও মানুষের মাঝে শরীরে মরণব্যাধী ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাই নিজে সচেতন হোন, জনগনকে সচেতন করুন। আমরা গরীব রাষ্ট্রের মানুষ। পরিবেশ দূষনের ভয়াবহতা থেকে আমাদেরকেই বাঁচতে হবে এবং বাঁচাতেও হবে।
এর আগে যেপুটি সিভিল সার্জন বলেন, প্লাস্টিক ব্যবহার করার কারনে আপনি ক্ষতির সন্মুখিন হচ্ছেন আর পরিবেশকে দূষণ করছেন। তিনি বলেন, আমাকেও ভাবাচ্ছে যে, রাঙ্গামাটিতে বিভিন্ন রোগ বেড়েই চলেছে। প্লাস্টিকের মোড়কে বিভিন্ন কোম্পানীর বোতলজাত করা পানির বিষয়ে বলেন, এসব একবারই ব্যবহার করুন বার বার নয়। এছাড়াও বিভিন্ন বক্তরা পরিবেশ দূষনের বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।
পরে পরিবিশের উপর রচনা প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহনকারী ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে পুরস্কারের ক্রেষ্ট প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।