যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় সেখানেই যেন আলোর নিচে অন্ধকার
॥ কাাপ্তাই উপজেলা প্রতিনিধি ॥
রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলা যেন আলোর নিচেই অন্ধকার। যেখানেই বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় সেখানে জনগন বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হয়। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাস্যকর বিভিন্ন মন্তব্য করে আসছে। ঝড় নেই, তুফান নেই, কিন্তু বিদ্যুৎ নেই। এ যেন পল্লী বিদ্যুৎকেও হার মানিয়েছে। চব্বিশ ঘণ্টায় ১২/১৫বার বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার ফলে লোকজনের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
কাপ্তাই উপজেলায় সরকারি, বেসরকারি,শিল্প কলকারখানা, ব্যাংক,বীমা স্কুল,কলেজ,পলিটেকনিক, মাদরাসাসহ বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার ফলে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সঠিক ভাবে সঠিক সময়ে কাজ সরবরাহ করতে না পাড়ায় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের। শিল্প কলকারখানা ব্যাংক ও বীমা কোমপআনীর সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদ্যুৎতের ভেলকি বাজিতে কোটি টাকার লেনদেন করতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। একদম খারাপ অবস্থা। এটা পল্লী বিদ্যুৎতের চেয়ে বাজে অবস্থা বলে মন্তব্য করেন।
কাপ্তাই নতুন বাজার বণিক কল্যান সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ জয়নাল আবেদীন জানান, গত বছরের চেয়ে এবার বেশিরভাগ বিদ্যুৎ যাতায়াত করছে। কাপ্তাই ৪নং ইউনিয়নের আপষ্ট্রিম জেটিঘাট সাপ্তাহিক শনিবার পাহাড়ি/বাঙালী হাটবার। এই দিনেই কোটি টাকার ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে। কিন্তু বিদ্যুৎ সময় মত না থাকায় ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের একটা লোকসানে পড়ে। এত বছরের বিদ্যুৎ বিভাগ তাঁদের এ ধরনের সমস্যা সামাধান করতে না পাড়ায় চরম ব্যর্থতা ও দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে বলে এলাকার ভুক্তভোগীরা তাদের চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট অধ্যক্ষ রূপক কান্তি বিশ্বাস জানান, শুক্রবার তাদের পলিটেকনিকে একটি বৃত্তিমূলক সেমিনার ছিল। দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা হতে সেমিনারে প্রায় ২০০জন প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ যোগদান করেন। উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান মোঃ রুহুল আমিন। সেমিনার শুরুর হওয়ার সময় ২বার বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে করে গরমে সকলের মাঝে বিরক্ত সৃষ্টি হয়। এছাড়া বার, বার বিদ্যুৎ যাওয়া আসা করার ফলে পলিটেকনিক এর ইলেকট্রনিকের বিভিন্ন কাজে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান।
এ বিষয়ে কাপ্তাই আবাসিক প্রকৌশলী শামসুল আরেফিন জানান, কাপ্তাই ৩৩কেভি বিদ্যুৎ সংযোগ (লাইন)। পাহাড়ি পথে বিদ্যুৎ লাইন গেছে ২০কিঃমি। বিদ্যুৎ তাড়ের প্রায় ৩০/৫০ফুট উপরে পাহাড়ি পথে গাছ সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে গাছ ও ডালপালা ভেঙে তারের ওপর পরে এত সাথে সাথেই বিদ্যুৎ চলে যায়। এটা কোন লোডশেডিং নয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ সমস্যা। পুনরায় সংযোগ দিতে সময় লেগে যায়। তিনি আরও জানান, রাজস্থলী, বিলাইছড়ি ও কাপ্তাই উপজেলা তাদের দেখতে হচ্ছে। এর মধ্যে জনবল সংকট চরমে। ওপর মহলের চাপতো আছেই। তবে কাপ্তাই শিলছড়ি ও রাজস্থলী উপজেলায় আরও দুটি সাবস্টেশন স্থাপন করা হবে। এবং বিদ্যুৎ বিভাগ বছরের শেষে আরও একটি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বিদ্যুৎ ট্রান্সমিটার স্থাপন করা হলে বিদ্যুৎতের সমস্যায় আর লোকজনকে পড়তে হবেনা বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রুহুল আমিন জানান, বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে একাধিকবার উপজেলা আইন শৃঙ্খলা সভায় আলোচনা হয়েছে বলে জানানো হয়। বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে বলা হলে বিদ্যুৎ বিভাগ তাঁদের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে যান।