আন্দোলনের নামে দেশের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা হচ্ছে: উষাতন তালুকদার
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে, প্রথমে ডিসেম্বর, পরে জুন এখন শোনা যাচ্ছে সেটাও নাকি সম্ভব না। অন্য দিকে আন্দোলনের নামে দেশের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা হচ্ছে। আপনাদের মধ্যে এখন ক্ষমতার লোভ দানা বেঁধেছে, সাধারণ জনগণ এমনটাই কানাঘুষা করছে। এটা কি বার্তা দেয় এগুলো বুঝতে হবে। মঙ্গলবার (২০ মে) সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের ৩৬ বছর পূর্তি ও ২৯ তম কেন্দ্রীয় সম্মেলন উপলক্ষে রাঙ্গামাটিতে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্ত্যবে তিনি এসব কথা বলেন।
রাঙ্গামাটি শহরের জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ এর সভাপতি নিপন ত্রিপুরা এর সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুমিত্র চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ম্রানুসিং মারমা প্রমুখ।
ঊষাতন তালুকদার বলেন, যা দেখছি দেশে এখন আইনশৃঙ্খলা বলতে কিছুই নেই। অন্তবর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, শুনেছি উপদেষ্টা পরিষদ ও এর নীতি নির্ধারক অনেকেই বিদেশের নাগরিক। তবে কি এখন বিদেশি নাগরিকরা দেশ চালাচ্ছেন ? পার্বত্য চুক্তির কথা উল্লেখ কওে তিনি বলেন, চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য আমরা অন্তবর্তি সরকারের কাছে গিয়েছি। কিন্তু তারা এখনো কোন উদ্যোগ নেয়নি। পরে তিনি বলেন, দেশের সকল জাতি, গোষ্ঠি, রাজনৈতিক দল, সরকারসহ সকলের কাছে দাবি জানাই সবাই আন্তরিকতার সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যাগুলো সমাধানের পথ খুঁজি। কিন্তু দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠি ও সরকার তা করছে না চুক্তি বাস্তবায়নে এই সরকার তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছে না। এটা চরম হতাশার একই সাথে আমার ক্ষুদ্ধ হচ্ছি।
পার্বত্যবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সকল প্রকার বিভেদ ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থি ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করুন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে বৃহত্তর আন্দোলনে জুম্ম ছাত্র সমাজ অধিকতর সামিল হউন। ঊষাতন তালুকদার আরও বলেন, বিভেদ সৃষ্টি করে যাদের জন্ম তারাই আজ ‘এগত্তর এগত্তর’ বলে গলাবাজি করছে। তারা চুক্তি করার সময় কি এক মিনিটও সময় দিয়েছিল, আলোচনায় এসেছিল ? সেটা যখন করেনি, তাহলে কোন অজুহাতে চুক্তির বিরোধিতা করছেন ? এগত্তর তো আপনারাই হননি, এখন কেন মুখে ফেনা তুলছেন। তাই ঐসব বিভেদপন্থিদের নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। তারা একেক সময় একেক জনের ঘাড়ে সওয়ার হন। যেমনটা অধ্যাপক আনু মোহাম্মদের ঘাড়ে চেপে মাইকেল চাকমা সংস্কার কমিশনের সভায় যোগ দিয়েছেন।
ইউপিডিএফ এর উদ্দেেেশ্য ঊষাতন তালুকদার বলেন, তারা পাহাড়িদের মনে স্থান না পেয়ে দিল্লীর সুহাস চাকমাকে গুরু মানতে শুরু করেছে, তাদের মতিভ্রম হয়েছে। তারা ভাবছে সন্তু লারমা শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু আমি বলবো ওরা বোকার স্বর্গে বসবাস করছে। ইউপিডিএফের এসব ছল চাতুরি পাহাড়ের জুম্মরা বুঝে গেছে তাই প্রত্যাখান করেছে। তারা নতুন নতুন ফর্মূলা দিয়ে জুম্মদের বোকা বানাতে চাচ্ছে। এসব বিভেদ পন্থিদের সম্পর্কে জনগণকে সতর্ক ও সচেতন করার দায়িত্ব ছাত্রসমাজকেই নেয়ার আহবান জানাই। তিনি আরো বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদ এখন প্রায় শেষ, সাম্রাজ্যবাদীদের চোখ এখন বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। বাংলাদেশের ওপর তাদের এখন চোখ পড়েছে। সাম্রাজ্যবাদীরা মিয়ানমারের প্রাকৃতিক সম্পদ, অন্যদিকে চীনকে শায়েস্তা করতে ছক করছে। আমাদের দেশকে সিরিয়া, আফগানিস্থান বানানোর পাঁয়তারা করছে। শঙ্কায় আছি দেশে কি আবার অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি হবে ? কপালে কি আছে সেটা বলা মুশকিল। তাই দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যমতে আসতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।