নিলামে বৈধতা পাচ্ছে, আগামীতে জব্দ বালু নিলাম বন্ধ: বান্দরবান জেলা প্রশাসক
॥ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ॥
বান্দরবানের লামা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অবৈধ বালু পাচারকারী সিন্ডিকেট থেকে ভ্রাম্যমান আদালতের জব্দ করা বালু নিলাম প্রদানকে বালু পাচারের অঘোষিত অনুমোদন হিসেবে মনে করছেন বিভিন্ন মহল। অভিযোগ উঠেছে তাহলেতো ব্যবসায়ীরা পেয়ে বসবে। গত মাস তিনেক আগে থেকে লামায় বালু নিলামের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরে ঝেঁকে বসেছে আন্তঃজেলা বালু পাচারকারীর সিন্ডিকেটরা যার উৎসাহ এই নিলাম কার্যক্রম।
এদিকে বুধবার (০৭ মে ২০২৫ইং) লামা উপজেলা প্রশাসন উপজেলার সরই ইউনিয়নে জব্দ করা ৫টি পয়েন্টে ২ লাখ ৪০ হাজার ঘনফুট বালু উন্মুক্ত নিলামের আয়োজন করেছে। এতে করে অবৈধ বালু বৈধ করতে আন্তঃজেলা বালু সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
তবে বান্দরবান জেলা প্রশাসক মিজ শামীম আরা রিনি বলেন, বালু নিলাম কার্যক্রম, অবৈধ বালু উত্তোলনের সহায়ক। বিষয়টি আগে জানা ছিলনা। সামনে থেকে লামায় বালু নিলাম বন্ধ রাখা হবে। লামা উপজেলায় এখনো পর্যন্ত কোন বালু মহাল ঘোষণা করা হয়নি।
লামা পরিবেশ রক্ষা পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক রুহুল আমিন বলেন, বিগত ৮ মার্চ ২০২৫ইং লামার সরই আমতলী ও জোড়মনি পাড়া এলাকায় ১ মাস সময় দিয়ে দুই লক্ষ ঘনফুট বালু নিলাম দেয় লামা উপজেলা প্রশাসন। সেই নিলামকে কেন্দ্র করে সরই বালু সিন্ডিকেট ১ মাসে ২০টি স্পট থেকে কমপক্ষে ২০ লাখ ঘনফুট বালু পাচার করেছে। এতে করে সরকার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
সরই পুলাং পাড়ার বাসিন্দা রিয়াজুল মোস্তফা ও আনোয়ার হোসেন বলেন, অবৈধভাবে উত্তোলিত বালু জরিমানা বা জব্দ করিয়ে নিলাম করানোর জন্য স্থানীয় ভাবে গড়ে উঠেছে কয়েকটি দালাল চক্র। প্রতিটি বালু স্পট থেকে উপজেলা প্রশাসন ও লামা থানার কথা বলে স্থানীয় এক ব্যক্তি নিয়মিত চাঁদা তোলেন।
কিছুদিন পূর্বে লামা উপজেলা বালু পাচারের বিরুদ্ধে কোর কমিটির মাধ্যমে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছিল। এই জিরো টলারেন্স ঘোষনাকে বালু পাচারকারীরা কোন ভাবেই তোয়াক্কা করছে না। বর্তমানে ফাঁসিয়াখালী ও সরই ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে কমপক্ষে ১ কোটি ঘনফুট বালু অবৈধ ভাবে মজুদ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
উপজেলা সদরের একাধিক সরকারি দপ্তরের চিহ্নিত কিছু কর্মচারীর সাথে বালু পাচারকারী সিন্ডিকেট ও দালালদের বিশেষ সখ্যতার বিষয়টি সচেতন মহলের দৃষ্টি এড়াতে পারেনি। এ সকল কর্মচারী বালু পাচারকারীদের বিভিন্ন সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিদিয়ে তাদের কাছ থেকে নিয়মিত লক্ষ লক্ষ টাকা লেনদেন করছে বলে জানা গেছে। কয়েকজন কর্মচারী বালু পাচারকারী সিন্ডিকেটের সদস্যদের বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছেন।