[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
মানিকছড়িতে নৈতিকতার আলো শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিতরাঙ্গামাটিতে ৩৫ কাঠুরিয়া সহ পাহাড়ের সকল গণহত্যার বিচার দাবিরাঙ্গামাটির লংগদুতে ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যার বিচারের দাবীতে আলোচনাসভাবাঘাইছড়িতে জেন্ডার ভিত্তিক জনসচেতনতা কার্যক্রম সভা অনুষ্ঠিতরাঙ্গামাটি ফাউন্ডেশন এর কাপ্তাইয়ে অবহিতকরণ সভারাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের ১ সদস্য সহ ৯জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানারামগড়ে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা সামগ্রী ও অভিভাবকদের গরু বিতরণরামগড়ে সীমা হোটেলের মালিককে জরিমানাকাপ্তাই চিৎমরম মুসলিম পাড়ায় ঈদ এ মিলাদুন্নবী পালনদীঘিনালায় সেনাবাহিনীর কর্তৃক চিকিৎসাসেবা ও বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষে সফলতা অর্জন করছে কৃষক

॥ মোঃ আবুল হাসেম, মাটিরাঙ্গা ॥
এন-৫৩ একটি গ্রীষ্মকালীন ও উচ্চফলনশীল পেঁয়াজের জাত। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে এর চাষাবাদ হলেও খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় এই প্রথম এ জাতের পেঁয়াজ চাষাবাদ শুরু করা হয়। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে উপজেলায় মাটিরাঙ্গায় ব্যাপকভাবে এন-৫৩ পেঁয়াজের চাষাবাদ করা হলে উপজেলায় পেঁয়াজের ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

এন-৫৩ পেঁয়াজ চাষে কম খরচে করে লাখ টাকা আয় করছেন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ের চাষিরা। দ্রুত বর্ধনশীল এবং স্বল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় অন্যান্য কৃষকরাও এ জাতের পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকছেন। এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসে বীজ বপন করে ৯০ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে পেঁয়াজ সংগ্রহ করা যায়। বিঘা প্রতি ৭০ থেকে ৮০ মণ পর্যন্ত ফলন হয়। প্রতিটি পেঁয়াজের ওজন ২৫০ থেকে ৩৫০ গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকা দরে বিক্রি করা যায়।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, কৃষি প্রণোদনার আওতায় মাটিরাঙ্গায় প্রথমবারের মতো ২০ জন কৃষকের মাঝে ১ কেজি করে এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজের বীজ, রাসায়নিক সার, পলিথিন ও বালাইনাশক বিতরণ করা হয়। এ দিকে মাটিরাঙ্গায় ১ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। সম্ভাব্য উৎপাদন হতে পাওে হেক্টর প্রতি ৩৫-৪০ টন।

মাটিরাঙ্গার চড়পাড়া, ওয়াছু এলাকায় দেখা যায় ফসলি বড় মাঠের এক টুকরো জমিতে সারি সারি পেঁয়াজ গাছ। গাছের গোড়ায় উঁকি দিচ্ছে বড় বড় আকারের পেঁয়াজ এ যেন অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি পাহাড়ের মাটিতে পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। প্রতিটি পেঁয়াজের ওজন হয়েছে ২৫০-৩০০ গ্রাম। এদিকে পরিপক্ক পেঁয়াজের দু’ একটি গাছে ফুল এসেছে এ বসন্তে। কৃষকের কাছে পেঁয়াজের ফলন সম্পর্কে জানতেই সে বেজায় খুশি, এ জমিতে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি সব সময় পেঁয়াজ চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

ওয়াছু এলাকার কৃষক মোঃ হানিফ বলেন, মাটিরাঙ্গা কৃষি অফিসের পরামর্শে অল্প জমিতে এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষ করি। বিনামূল্যে বীজ, সার এবং পরামর্শসহ অন্যান্য উপকরণ কৃষি অফিস থেকে পেয়েছি। এখানে সবকিছুই বিনামূল্যে পেয়েছি। নিজের পরিশ্রমে জমিতে পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে। আশাকরি ভালো দাম পাবো। চড়পাড়ার কৃষক আব্দুর রব বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে নতুন এই জাতের পেঁয়াজের আবাদ করার জন্য আমাদেরকে উৎসাহ করা হচ্ছে। আমি অল্প পরিসওে পেঁয়াজ চাষ করি। প্রথমবারেই ভালো ফলন হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা সবসময় পরামর্শ দিচ্ছেন। কৃষি অফিসের সহায়তা পেলে আগামীতে আরো বেশি জমিতে অফ-সিজনের এই পেঁয়াজের চাষ করবো।

মাটিরাঙ্গা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ চাকমা জানান, সঠিক পরিচর্যা ও আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগে কৃষকরা পেঁয়াজ চাষ করে ভালো লাভবান হতে পারেন। অসময়ের এই ফসলে এরইমধ্যে কৃষকের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সবসময় কৃষকদের পাশে আছে। আগামী বছর এর চাষ আরো বাড়বে বলে আশা করেন তিনি।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সবুজ আলী বলেন, স্থানীয় ভাবে পেঁয়াজের সংকট কমাতে সম্ভাবনাময় এন-৫৩ জাত চাষে উপজেলা কৃষি বিভাগ সব ধরনের সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান করেছে। যার ফলে কৃষকরা এ পেঁয়াজ চাষে সফলতা অর্জন করেছে। এতে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হবে একইসঙ্গে স্থানীয়ভাবে পেঁয়াজের সংকট কমে যাবে। মাটিরাঙ্গা উপজেলার মাটি পেঁয়াজ চাষের জন্যে বেশ উপযোগী বিধায় গ্রীষ্মকালীন এবং শীতকালীন পেঁয়াজের চাষ বাড়িয়ে পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমানো যাবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরো বলেন, পেঁয়াজের বীজটা যদি আমরা কৃষকদের আগাম দিতে পারি তাহলে এর হারভেস্টিং জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে হবে। ওই সময় বাজারে পেঁয়াজ কম থাকে বিধায় কৃষক বেশি লাভবান হতে পারবে।