মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে বুদ্ধ নিজের মহাপরিনির্বাণ ঘোষণা করেন
॥ দেবদত্ত মুৎসুদ্দী ॥
আজ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব মাঘী পূর্ণিমা। শুভ মাঘী পূর্ণিমা উদযাপন উপলক্ষে পাহাড় সমতল, সহ সারা দেশের বৌদ্ধপল্লি এবং বিহারগুলোতে যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও বিশ^ব্যাপী বুদ্ধের পরিনির্বানের এ দিনটিকে যথাযোগ্য ধর্মীয়ভাবগাম্ভির্য্যে পালন করে।
বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মতে, এই পূর্ণিমা তিথিতে তথাগত বুদ্ধ তাঁর ভিক্ষু সংঘের কাছে নিজের মহাপরিনির্বাণ দিবস ঘোষণা করেন। অর্থাৎ তিনি মাঘী পূর্ণিমা দিবসে ঘোষণা করেছিলেন, ওই দিন থেকে তিন মাস পর শুভ বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে স্বীয় দেহত্যাগ করবেন। আর সেটাই হয়েছিল। এ কারণে এদিন সব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী বুদ্ধের শিক্ষা নিয়ে অনিত্য ভাবনা করে, ইহকাল ও পরকালের সুন্দর জীবন প্রতিষ্ঠার জন্য ধ্যান সমাধি, দান শীল, ভাবনা করে এবং জীবনকে শীলময়, ভাবনাময় ও বিশুদ্ধপূর্ণ করার জন্য কঠোর সংকল্পে ব্রতী হয়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, আজ সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে এই তিথি শুরু হয়, আর শেষ হবে আজ ১২ ফেব্রুয়ারি বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৫২ মিনিটে। এদিন প্রতিটি বিহারে বুদ্ধপূজা, শীলগ্রহণ, ভিক্ষুসংঘকে পিন্ডদান, প্রদীপপূজা, অনিত্যভাবনা ও ধর্মীয় সভার আয়োজন করা হয়। দিনটি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশের বিভিন্ন বৌদ্ধ জনপদে, বিশেষ করে চট্টগ্রামের বৌদ্ধ অধ্যুষিত গ্রাম ও বিহারগুলিতে মেলার আয়োজন করা হয়। এরূপ উল্লেখযোগ্য কয়েকটি মেলা হলো ঠেগরপুনি গ্রামের বুড়া গোঁসাই মেলা (পটিয়া), বিনাজুরি গ্রামের পরিনির্বাণ মেলা (রাউজান), লাটিছড়ি গ্রামের বুদ্ধ মেলা (রাউজান), আবদুল্লাহপুর গ্রামের শাক্যমুনী মেলা (হাটহাজারি), আর্যমিত্র মহাপরিনির্বাণ মেলা (রাউজান) রাঙ্গামাটি জেলার আনন্দ বিহারে বহুচক্র মেলা সহ বিভিন্ন বিহারে নানাভাবে সামাজিক অনুষ্ঠানও আয়োজন করে থাকে।