যার কাছে যত বেশী তথ্য রয়েছে সে তত বেশী শক্তিশালী- জেলা প্রশাসক
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
‘‘তথ্যের অধিকার, সুশাসনের হাতিয়ার-তথ্যই শক্তি, দুর্নীতি থেকে মুক্তি” এই স্লোগানে জেলা প্রশাসন ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এর যৌথ আয়োজনে টিআইবি’র সহযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেছেন, যার কাছে যত বেশী তথ্য রয়েছে সে তত বেশী শক্তিশালী। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) কুমার সমিত রায় জিমনেশিয়াম প্রাঙ্গণে আয়োজিত তথ্য মেলায় তিনি এ কথা বলেন।
সনাক সভাপতি প্রফেসর বাঞ্ছিতা চাকমা এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন জেলা শিক্ষা অফিসার মৃদুল কান্তি তালুকদার, দুদকের সহকারি পরিচালক রাজু আহমেদ, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হৃষিকেশ শীল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ আহম্মেদ (প্রশাসন ও অর্থ), মোঃ জসিম উদ্দিন, ক্লাস্টার কো-অর্ডিনেটর, টিআইবি। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তৌহিদ তালুকদার, রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: মোঃ শওকত আকবর খান, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারি পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা: সারোয়ার হামিদ, পৌরসভা প্রতিনিধি নগর পরিকল্পনাবিদ সুবর্ণ চাকমা, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা প্রতিনিধি ধীমান চাকমা, হাউজবিল্ডিং ফাইন্যাান্স কর্পোরেশন এর ম্যানেজার (এজিএম) নিহার রঞ্জন শীল উপস্থিত ছিলেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন সনাক সদস্য ও টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ড মেম্বার এড. সুস্মিতা চাকমা। এতে সনাক সদস্য সীমা দেওয়ান ও রেজাউর রশীদ সঞ্চালনা করেন।
প্রধান অতিথি বলেন, বাংলাদেশে যত আইন রয়েছে তার সবগুলোই সরকারি দপ্তরগুলো জনগণের উপর প্রয়োগ করে। তবে তথ্য অধিকার আইনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এ আইন জনগণ সরকারি দপ্তরগুলোর উপর প্রয়োগ করে। তিনি আরো বলেন, আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে বার্তা পেয়েছি তা বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করতে হবে। তিনি সকল সরকারি দপ্তরকে হয়রানি ও দুর্নীতিমুক্ত সেবা প্রদান করার জন্য আহ্বান জানান। তথ্য অধিকার আইনের সঠিক বাস্তবায়নের ফলে প্রতিষ্ঠানে শুদ্ধাচার বৃদ্ধি করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন। আলোচনা সভার আগে তিনি তথ্য মেলা, তরুণদের অংশগ্রহণে দুর্নীতিবিরোধী হাফ ম্যারাথন ও দুর্নীবিরোধী কার্টুন প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন এবং মেলায় বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।
এসময় বক্তারা বলেন, তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ জনগণের জন্য একটি হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। এই আইনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আইনের আলোকে প্রকাশযোগ্য তথ্য প্রদান করতে বাধ্য। এই আইনের বাস্তবায়নের মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব বলে মত প্রকাশ করা হয়। বক্তারা এ ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে বলে মত প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অধিবেশনে সরকারি পরিষেবা বিষয়ক জনগণের মুখোমুখি (গণশুনানী) অনুষ্ঠান করা হয়। এসময় বক্তারা নিজ নিজ দপ্তরের সেবা সম্পর্কে উপস্থিত জনগণকে অবহিত করেন। উপস্থিত লোকজন সেবা সম্পর্কিত বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরকে প্রশ্ন করেন এবং সুপারিশ ও কিছু অভিযোগ জানান। উপস্থিত কর্মকর্তাবৃন্দ সমাধানের বিষয়ে আশ^াস প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা এ ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজেনর মাধ্যমে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে বলে মত প্রকাশ করেন। পওে পুরস্কার বিতরণী পর্বে হাফ ম্যারাথন, বিদ্যালয় ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, মেলায় স্টল প্রদানের জন্য সকল দপ্তরসমূহের জন্য শুভেচ্ছা স্মারক হিসেবে ক্রেস্ট ও সর্বোচ্চ তথ্যসেবা প্রদানকারী দপ্তরসমূহের বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। শেষে সনাক, ইয়েস এবং এসিজি সদস্যদের অংশগ্রহণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ বিষয়ে সাধারণ জনগণকে সচেতন করার জন্য এ মেলার আয়োজন করা হয়। মেলায় ৩১ টি সরকারি দপ্তরসহ মোট ৩৮ টি সরকারি বেসরকারি দপ্তর স্টল দিয়ে তাদের কার্যক্রম প্রদর্শন করে। মেলায় সনাকের ইয়েস দল হাতেকলমে তথ্য আবেদন ‘‘ক” ফরম পূরণ করা শেখানোর পাশাপাশি সরকারি বেসরকারি দপ্তরসমূহ মেলায় বিভিন্ন দপ্তর তাদের সেবা ও তথ্য সংক্রান্ত তথ্য প্রদর্শন করে। মেলায় বিপুল সংখ্যক লোকের সমাগম ঘটে।