[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
সীমান্তে পুশইন ও চোরাচালান ঠেকাতে তৎপর রয়েছে বাঘাইহাট বিজিবিলংগদু উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবির টহল জোরদার: লে. কর্ণেল নাহিদ হাসানরাঙ্গামাটিতে বিয়ের প্রলোভনে কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় যুবক আটকপুশইন ও চামড়া পাচার রোধে রামগড় ৪৩ বিজিবির নিরাপত্তা জোরদাররাজস্থলীতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী পালনচামড়া পাচার ও সীমান্ত দিয়ে পুশইন ঠেকাতে বিজিবি টহল বাড়িয়েছেমাটিরাঙ্গা সেনা জোন কর্তৃক ঈদ উপহার ও মানবিক সহায়তা প্রদানউন্নয়ন কর্মকান্ডে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না: বিজিবি রাজনগর জোন কমান্ডারবান্দরবানের লামা হাসপাতালে প্রথম সাপে কামড়ানো রোগীকে বাঁচালো চিকিৎসকদুর্যোগকালীন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১০আরই ব্যাটালিয়নের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

৪৩ বছরেও কোন সরকারের সুনজরে আসেনি

বান্দরবানের লামা উপজেলার ‘ছৌলুমঝিরি কয়লা খনির’ ভবিষ্যৎ কি?

১৮

॥ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ॥

খাড়া পাহাড়ের ভাজে ভাজে ও ঝিরির পানিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কয়লাসদৃশ বস্তু। দেখতে প্রস্তুরীভূত কয়লার মতো, ওজনে ভারী আর ভালো জ্বলে। পাহাড়ের উপরের অংশ বেলে-দোআঁশ মাটিতে আবৃত ও পাহাড়ের ভাজে ভাজে কয়লাসদৃশ বস্তু থাকার কারণে ছৌলুমঝিরির এই স্থানটি স্থানীয় লোকজনের কাছে ‘কয়লার খনি’ নামে পরিচিত।

বান্দরবানের লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের দুর্গম ছৌলুমঝিরির দুই পাড়ে পাথরের দেয়ালের খাঁজে এমন কয়লাসদৃশ বস্তুর সন্ধান মিলেছে। ৪৩ বছর আগে এই কয়লা খনির সন্ধান পাওয়া গেলেও এখনো সুনজরে আসেনি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে পাহাড়ে প্রাকৃতিক সম্পদের অপার সম্ভাবনার ক্ষেত্রটি। নেওয়া হয়নি কোন সংস্কার কিংবা সংরক্ষন কার্যক্রম।

খনিটি উপজেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার পূর্বে রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড ছৌলুমঝিরিতে অবস্থিত। ১৫ কিলোমিটার দূরত্বের এই স্থানটি লামা বাজার থেকে পূর্বদিকে মংপ্রু পাড়া পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার কার্পেটিং ও ব্রিকছলিং সড়ক হয়েছে। মংপ্রুপাড়া থেকে খনিটির দূরত্ব মাত্র ২ কিলোমিটার। খনি থেকে সরকারি উদ্যোগে কয়লা উত্তোলন করা হলে বদলে যাবে জেলার অর্থনীতি। উপজেলাবাসী এ খনি থেকে কয়লা আহরণের জন্য বাপেক্স ও বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবমুখী উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

জানা যায়, ১৯৮১-৮২ সালের দিকে স্থানীয় কাঠুরিয়া কাঠ, বাঁশ ও লাকড়ি আহরণে গেলে ছৌলুমঝিরিতে কয়লার খনিটি দেখতে পান। পাহাড়ি এলাকায় নদী, ছড়া, ঝিরি ও খাল হচ্ছে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। আর নদীপথ দিয়ে গেলেই ছৌলুমঝিরিতে দেখা যায় দু’পাড়ে ভাজে ভাজে ভাসমান কয়লা। প্রায় দুই মাইল এলাকাজুড়ে এ কয়লার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। স্থানীয় অনেকেই এ কয়লা সংগ্রহ করে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে চলেছে।

সাবেক ইউপি মেম্বার আব্দুল মান্নান বলেন, কয়লার খনির পাশে তার জায়গা রয়েছে। ১৯৮৪ সালের দিকে এরশাদ সরকারের শাসন আমলে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এ কয়লা খনিটি পরিদর্শন করতে আসেন। পরিদর্শনকালে কর্মকর্তারা এ খনির ভাসমান কয়লার মান অত্যন্ত ভালো ও জাতীয় মানের বলে উল্লেখ করেন। ছৌলুমঝিরির ম্রো পাড়ার কারবারী মেনসিং ম্রো ও পাড়ার প্রবীণ বাসিন্দা চুংঙাক ম্রো বলেন, মাঝেমধ্যে ঝিরির পানি থেকে উৎকট কয়লার গন্ধ পাওয়া যায়। কয়েক বছর আগেও ‘কয়লার পাহাড়ে’ ও ঝিরির পানিপ্রবাহে প্রচুর পরিমাণ এমন পাথর ছিল। বাইরের লোকজন এসে নিয়ে যাওয়ায় এখন কয়লাসদৃশ পাথর কমে গেছে। তাঁদের ধারণা, ছৌলুমঝিরির বিশাল এলাকাজুড়ে কয়লার খনি থাকতে পারে। মাটির অভ্যন্তরে খনি না থাকলে ঝিরির পানি থেকে কয়লার গন্ধ পাওয়া যেত না।

 

সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ছৌলুমপাড়ার দক্ষিণ পাশে বনাঞ্চলবেষ্টিত ছোট একটি পাহাড়ি ঝিরির দুই ধারে দেয়ালের মতো খাড়া পাহাড়। ওই খাড়া পাহাড়ের ভাজে ও ঝিরির পানিতে কয়লাসদৃশ বস্তু দেখা গেছে। পাথরের ভাঁজে চাপা পড়া কয়লাসদৃশ বস্তু দেখতে কালো এবং কোনো কোনো অংশ জীবাশ্মের মতো দেখতে। ছৌলুমঝিরির কয়লা খনি এলাকার পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা জাহেদুল মাষ্টার জানান, ২০১৩ সালের জুলাই ও ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তেল ও গ্যান অনুসন্ধান সংস্থা বাপেক্স কর্মকর্তারা খনিটি পরিদর্শন করেন। বাপেক্স কর্মকর্তারা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে জানাবেন বলে এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করে যান। কিন্তু আজও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ইউপি সদস্য লংনা ম্রো বলেন, কয়লা খনিটি এখনো সুরক্ষিত আছে। তাছাড়া জায়গাটি খাস। মৌজা হেডম্যান ও কারবারীদের নিয়ে তারা খনিটি রক্ষণাবেক্ষণ করে যাচ্ছেন। এ খনি থেকে সরকারি উদ্যোগে কয়লা উত্তোলন করা হলে জাতীয় অর্থনীতিতে তা বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, খনির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগের নজরে আনার চেষ্টা করবেন। এই খনি থেকে কয়লা তোলা গেলে পার্শ্ববর্তী মহেশখালী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য অন্যতম উৎস হতে পারে কয়লা খনিটি। এছাড়া কয়লাসদৃশ বস্তুর উপস্থিতি সম্পর্কে বাপেক্সের সঙ্গে আবারো যোগাযোগ করা হবে।