খাগড়াছড়িতে টানা বর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, চার শতাধিক পরিবার পানিবন্দী
॥ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ॥
টানা তিনদিনের ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়ি সদরসহ জেলার মাটিরাংগা ও দীঘিনালার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এর ফলে অন্তত চারশতাধিক পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। পাহাড়ি ঢলের কারণে চেঙ্গী, ফেনী ও মাইনি নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি আরও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, যা এসব এলাকার বাসিন্দাদের জন্য অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) ভোর থেকে খাগড়াছড়ি সদরের মুসলিমপাড়া, মেহেদীবাগ, কালাডেবা, গঞ্জপাড়া ও ঠাকুরছড়াসহ নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোতে বন্যার পানি প্রবেশ করে। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে এটি তৃতীয়বারের মতো বন্যার কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলো, ফলে শহরতলী ও পৌর এলাকার হাজার হাজার মানুষ চরম বিপদে পড়েছেন। বিশেষ করে মাটিরাঙ্গা উপজেলার সীমান্তবর্তী তাইন্দং এলাকায় আকস্মিক বন্যা জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।
দীঘিনালার মাইনী নদীর পানি ক্রমাগত বাড়ছে, যার ফলে মেরুং ও কবাখালী এলাকার কৃষিজমি প্লাবিত হচ্ছে। চেঙ্গী, ফেনী ও মাইনি নদী এবং ছড়ার পাড়ে বসবাসকারী লোকজন আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। টানা বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসের ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রশাসন সম্ভাব্য পাহাড় ধসের আশঙ্কায় মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা বেগম পারভীন খন্দকার জানান, “পানিবন্দী পরিবারগুলোকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার পাশাপাশি পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলোকে মাইকিং করে সতর্ক করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান বলেন, “দীঘিনালা-মারিশ্যা সড়ক এবং মহালছড়ি-সিন্দুকছড়ি সড়কে পাহাড় ধস মোকাবিলায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ প্রস্তুত রয়েছে। দুর্যোগ দেখা দিলে প্রশাসনও সার্বিক সহায়তায় প্রস্তুত রয়েছে।”
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, “স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখছি। যেকোনো দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।” পাহাড় ধসের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের মধ্যে আরও সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।