[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

১২ টাকার গ্লাভস্ ৪০ ও ২১৬ টাকার বেডসীট ৬০০ টাকা

বান্দরবানের লামা হাসপাতালে মালামাল ক্রয় ও সরবরাহে ব্যাপক অনিয়ম

৪৮

॥ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ॥
বান্দরবানের লামা উপজেলা হাসপাতালে এমএসআর খাতে যন্ত্রপাতি, আনুষঙ্গিক মালামাল সহ ওষুধ সরবরাহের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বাস্তবের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মূল্য দেখিয়ে মালামাল ক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালে দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এছাড়া কিছু কিছু মালামাল কাগজে-কলমে সরবরাহ থাকলেও বাস্তবে তার উপস্থিতি নেই। এতে করে এক দিকে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সেবা নিতে আসা সাধারণ রোগীরা, অন্য দিকে গচ্চা যাচ্ছে সরকারের লাখ লাখ টাকা।

জানা গেছে, লামা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ২০২৩-২৪ইং আর্থিক সালের এমএসআর খাতের প্রায় ৩৪ লাখ টাকার মালামাল সরবরাহের জন্য লামা পৌরসভার বড় নুনারবিল পাড়ার মিঃ মংছিংপ্রু ও চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লাহ সুপার মার্কেটের মেসার্স শাহ আমানত মেডিকেল হল নামে দুইটি প্রতিষ্ঠানকে গত ২৬ মে ২০২৪ইং অফিসিয়াল কার্যাদেশ প্রদান করেন। কার্যাদেশে বর্ণিত এমএসআর যন্ত্রপাতি সামগ্রী সমূহ কার্যাদেশ গ্রহণের ১০ দিনের মধ্যে সরবরাহ করতে হবে। পত্রে বলা হয়েছে বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে দি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রেগুলেশন পিপিএ-২০০৬ ও পিপিআর-২০০৮ সংশোধনী পিপিএ-২০০৯ যথাযথভাবে অনুসরণ করা হবে।

অভিযোগ রয়েছে, গত ২৬ মে ২০২৪ইং তারিখের হাসপাতালের ৫১৪ স্মারকের পত্রে মিঃ মংছিংপ্রু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ২০২৩-২৪ইং আর্থিক সালের এমএসআর খাতের ‘যন্ত্রপাতি’ ক্রয়ে ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৯শত টাকার কার্যাদেশ দেয়া হয়। এ কার্যাদেশে ১৫ ধরনের যন্ত্রপাতি সরবরাহের কথা উল্লেখ রয়েছে। তালিকার ৫নং খাতটি হল ‘নন স্টালাইজার গ্লাভস’ ক্রয়। এখানে ৪০০০ নন স্টালাইজার গ্লাভস প্রতি পিস ৪০ টাকা করে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এই হাসপাতালেরই ২০২২-২৩ আর্থিক সালের কার্যাদেশে পর্যালোচনা করে দেখা যায় প্রতি পিস নন স্টালাইজার গ্লাভস ক্রয়ে বরাদ্দ দেয়া হয় ১২ টাকা। অভিযোগ উঠেছে বছরের ব্যবধানে প্রতি পিস গ্লাভসে ২৮ টাকা অতিরিক্ত তথা প্রায় ৪ গুণ বেশি বরাদ্দ দেখিয়ে ১ লাখ ১২ হাজার টাকা তসরুপ করা হয়েছে। অথচ বিগত ও বর্তমান আর্থিক বছরের ‘স্টালাইজার গ্লাভস’ ৪০ টাকা মূল্য সমতা রয়েছে। স্টালাইজার গ্লাভসে দাম বৃদ্ধি না হলেও নন স্টালাইজার গ্লাভসের আকাশচুম্বি মূল্য বৃদ্ধি দেখিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাতের একটি চক্রান্ত বলে জানান টেন্ডারে অংশ নেয়া অন্যান্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সমূহ।

একইভাবে ২০২৩-২৪ইং আর্থিক সালের এমএসআর খাতের ‘লিলেন সামগ্রী’ ক্রয়ের কার্যাদেশে ৫নং খাত বেডসীট ক্রয়ে গত বছরের ২১৬ টাকা দর থাকলেও এবছর বেডসীট ক্রয়ে মূল্য দেখানো হয়েছে ৬০০ টাকা। যা বিগত সময়ের মূল্যের চেয়েও তিন গুণ বেশি। এই কার্যাদেশটিও মিঃ মংছিংপ্রু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পায়। এত এত মালামাল ক্রয় করা হলেও বিভিন্ন সময় লামা হাসপাতালের আন্তঃবিভাগে ঘুরে দেখা যায় ভর্তিকৃত অধিকাংশ রোগীদের বেডসীট দেয়া হয়না। অথচ গত বছরেও এই ৫০ শয্যা হাসপাতালে ১০০টি বেডসীট ক্রয় করা হয়েছিল। এবিষয়ে হাসপাতালের আয়া ও ওয়ার্ড বয়’রা জানায় বেডসীট কম তাই দেয়া যাচ্ছেনা। লামা পৌরসভার কলিঙ্গাবিল গ্রামের শহরবানু ও লাইনঝিরি গ্রামের জয়নাল আবেদীন বলেন, জ্বর আর গ্যাস্টিকের ওষুধ ছাড়া সব ওষুধই তো আমাদের কিনে নিতে হয়। হাসপাতাল থেকে বলা হয় সাপ্লাই নেই।

অবশ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলে, তারা নিয়মতান্ত্রিকভাবেই মালামাল সরবরাহ করেছেন। হাসপাতালের ঠিকাদারি কাজে কোনো ধরনের অনিয়মের সাথেই তারা জড়িত নন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা জানান, লামা হাসপাতালে ওষুধ ও অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী সাপ্লাইয়ে শক্তিশালী এক সিন্ডিকেট আছে। যারা সবকিছু নিয়ন্ত্রন করে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও কার্যাদেশ প্রদানকারী কর্মকর্তা যোগসাজসে এই সরকারি টাকা তসরুপ করেছেন।

এ ব্যাপারে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডাঃ এখিং মারমা বলেন, মালামাল সরবরাহের কাজে অনিয়ম নেই। তবে ‘নন স্টালাইজার গ্লাভস’ ও ‘বেডসীট’ এই দুইটি খাতের টাকা খরচের ব্যাপারে খতিয়ে দেখা হবে। এবিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, সরকারি টাকা অপচয়ের কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।