রুমায় ব্যাংক ডাকাতি ও অস্ত্র লুটের প্রতিবাদে বম জনগোষ্ঠীর মানববন্ধন
\ রুমা প্রতিনিধি \
বান্দরবানের রুমায় সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে রুমা, থানছি এবং রোয়াংছড়ির সাধারণ বম জনগোষ্ঠী। বুধবার (২২মে) সকালে রুমা বাজারে রুমা ছাড়াও বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত বম জনগোষ্ঠীর নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ একত্রিত হয়ে মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
এসময় মানববন্ধনে অংশ নেন শতাধিক বম স¤প্রদায়ের শিশু, নারী ও পুরুষ, শিক্ষার্থীসহ প্রায় শতাধিক। তারা হাতে প্লেকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছেন। বিভিন্ন প্লেকার্ডে লেখা ছিল “শিক্ষা আমাদের মৌলিক অধিকার, সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অধিকার তোমাদের (কেএনএফ) নাই। “আমরা ছাত্র সমাজ সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সমাজে মাথা উচু করে বাঁচতে চাই”। “আমরা শিক্ষা গ্রহণ করতে চাই, বাঁচতে চাই। অন্ধকার জীবন চাই না, আলোকিত জীবন চাই।”আলোকিত জীবনের জন্য শিক্ষার কোন বিকল্প নাই। সেই অধিকার থেকে আমাদের বঞ্চিত করো না। “অস্ত্র নয়, কলমই আমাদের শক্তির উৎস।”সন্ত্রাসবাদকে না বলি, দেশপ্রেমই আমাদের লক্ষ্য।
আমরা শিক্ষা গ্রহণ করতে চাই, বাঁচতে চাই, “কেএফএনএফ নিপাত যাক”, “গ্রেফতারের ভয়ে জঙ্গলে পালিয়ে থাকা সাধারণ জনগণকে নিরাপদে ফিরে আসার সুযোগ দিন, “নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়ের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করুন” ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্লেকার্ড নিয়ে তারা মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
মানবন্ধনে অবিলম্বে কেএনএফকে সশস্ত্র কার্যক্রম বন্ধ করে এবং সরকারের লুট করা অস্ত্র সমূহ ফেরত দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহবান জানানো হয়। এসময় বক্তারা কেএনএফের কারণে সাধারণ বম জনগোষ্ঠী নানা ভাবে হয়রানি ও দুভোর্গের শিকার হচ্ছে বলে মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয়। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসে বম জনগোষ্ঠীকে দুর্বিসহ জীবন থেকে মুক্তি দিতে কেএনএফকে আহŸান করেন বক্তারা। সকালে রুমা বাজারে বম জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ বিভিন্ন লেখা বা দাবি সংবলিত প্লেকার্ড, ব্যানার, ফ্যাস্টুন হাতে গ্রীস্মের তীব্র তাপ উপেক্ষা করে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে।
বিগতে এপ্রিল মাসে রুমা এবং থানছির সোনালী এবং কৃষি ব্যাংকের ৩টি শাখায় হামলা চালিয়ে ব্যাংকের টাকা লুটপাট, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ এবং ব্যাংকের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র লুট করে কেএনএফ। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে অভিযানে নামে যৌথ বাহিনী, অভিযানের সময় যুদ্ধে নিহত হয় কয়েকজন সশস্ত্র কেএনএফ সদস্য, উদ্ধার করা হয় অস্ত্র,তবে লুট করা অস্ত্র এখনও উদ্ধার করা যায়নি। অভিযানের অংশ হিসেবে অত্র এলাকায় জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হয় এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়ের উপর সীমিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। কেএনএফের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।