৬ষ্ট উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২য় ধাপ
খাগড়াছড়ি সদরে দিদারুল, পানছড়িতে চন্দ্র্রদেব, দীঘিনালায় ধর্ম জ্যোতি চেয়ারম্যান
\ দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি \
খাগড়াছড়িতে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ২য় ধাপে ৩ উপজেলায় ভোট গ্রহণ শেষ বেসরকারী ভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোট গণনা শেষে রাতে ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এরমধ্যে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় আওয়ামীলীগ নেতা, পানছড়ি ও দীঘিনালা উপজেলায় ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রæপে)র দুই নেতা চেয়ারম্যান হয়েছেন।
খাগড়াছড়িতে বেসরকারি ফলাফলে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম। তিনি আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৬ হাজার ৮৩২ ভোট। তাঁর নিকটতম গ্রার্থী দোয়াত কলম প্রতীকে সন্তোষিত চাকমা বকুল পেয়েছেন ৮ হাজার ৫৬৫ ভোট। বাকী প্রার্থী আকতার হোসেন মোটর সাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৬হাজার ৯৩৭ ভোট, জ্ঞান রঞ্জন ত্রিপুরা কৈ মাছ প্রতীকে পেয়েছেন ৬হাজার ৫১০ ভোট, সুশীল জীবন ত্রিপুরা টেলিফোন প্রতীকে পেয়েছেন ৯শ ৪৭ ভোট এবং জাতীয় পার্টি সমর্থিত মোঃ নজরুল ইসলাম লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ১শ ৩৩ ভোট। এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে বেসরকারি ফলাফলে তালা প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন ক্যউচিং মারমা। তিনি পেয়েছেন ১৬ হাজার ২৯১ ভোট। তাঁর নিকটতম মোঃ আসাদ উল্ল্যাহ বই প্রতীকে পেয়েছেন ১০ হাজার ৪১৭ ভোট। এছাড়া এরশাদ হোসেন পেয়েছেন ৬ হাজার ৪শ ৯৬ ভোট, মোঃ আবু হানিফ টিয়া প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৬ ভোট । অন্যদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন কল্যাণী ত্রিপুরা। তিনি পেয়েছেন ১৭ হাজার ৪৭১ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী নিপু ত্রিপুরা ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ১১ হাজার ৬৭৭ ভোট এবং নিউসা মগ প্রজাপতি প্রতীকে ৯হাজার ৯৭৯ ভোট। এবার খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় মোট ৯২ হাজার ৮শ ৬৪ ভোটারের মধ্যে প্রদত্ত ভোটার সংখ্যা ৪০হাজার ৯৩৯ ভোট। যা প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৪৪.০৮ শতাংশ। মোট ভোট কেন্দ্র ৪১টি। রাত সাড়ে ৮ টায় খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নাঈমা ইসলাম বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন।
দীঘিনালা উপজেলা পরিষদে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মোটর সাইকেল প্রতীকে প্রার্থী ইউপিডিএফ-প্রসীত দলের নেতা ধর্মজ্যোতি চাকমা। তিনি পেয়েছেন ৩৩ হাজার ২শ ১৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী মোঃ কাশেম আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৩ হাজার ৬০৯ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন চশমা প্রতীকের প্রার্থী সুসময় চাকমা। তিনি পেয়েছেন ৩২ হাজার ৪শ ৩৪ ভোট। এছাড়া মোঃ মোস্তফা কামাল টিউবওয়েল প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৪শ ৫২ ভোট, মোঃ সোলাইমান টিয়া প্রতীকে পেয়েছেন ৮হাজার ৯শ ৪৭ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন সীমা দেওয়ান। তিনি পেয়েছেন ৩০হাজার ৮৫ ভোট । তার একমাত্র প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী বিলকিছ বেগম পেয়েছেন ২৫ হাজার ৬শ ২৩ ভোট। দীঘিনালা উপজেলায় এবার মোট ৯০ হাজার ১শ ৯৪ ভোটারের মধ্যে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ৫৯হাজার ১৪৩ ভোট। যা প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৬৫.৫৭ শতাংশ। মোট ভোট কেন্দ্র ৩৬টি। দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ মামুনুর রশীদ বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন।
পানছড়ি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন কাপ পিরিচ প্রতীকে প্রার্থী ইউপিডিএফ-প্রসীত দলের নেতা চন্দ্রদেব চাকমা। তিনি পেয়েছেন ২৪হাজার ৮৩২ ভোট। তার নিকটতম একমাত্র প্রতিদ্বন্ধী ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মিটন চাকমা পেয়েছেন ১৬ হাজার ৩শ ৫৭ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন টিউবওয়েল প্রতীকে সৈতক চাকমা। তিনি পেয়েছেন ২৪ হাজার ১৯ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী কিরন ত্রিপুরা চশমা প্রতীকে ৭হাজার ৩১৮ ভোট। এছাড়াও জয়নাথ দেব তালা প্রতীকে ৫ হাজার ৪শ ৯৪ ভোট এবং মোঃ লোকমান হোসেন বৈদ্যুতিক বাল্ব প্রতীকে ৩ হাজার ৭শ ৩৬ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন মনিতা ত্রিপুরা। তিনি ফুটবল প্রতীকে ২১ হাজার ২শ ৬৩ ভোট। তার একমাত্র নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী সুজাতা চাকমা কলস প্রতীকে ১৮ হাজার ৭শ ৪৭ ভোট। পানছড়ি উপজেলার নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মৌমিতা দাশ বেসরকারিভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
এদিকে দীঘিনালায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে আনসার ও ভিডিপি ক্লাব কেন্দ্রে ঢুকে আনারস প্রতীকের সমর্থকরা মোটর সাইকেল প্রার্থীর এজেন্টকে বের করে দিলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হয়। তাঁদের দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন দীঘিনালার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল হক।
অন্যদিকে, খাগডাছড়ি সদরে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভুয়াছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে হামলা ও ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। এতে প্রিজাইডিং অফিসারের ওপর হামলার চেষ্টা করে দুবৃর্ত্তরা। আধাঘণ্টার জন্য বন্ধ ছিল ভোট গ্রহণ। পুলিশ এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রিজাইডিং অফিসার ও জেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শরৎ কুমার ত্রিপুরা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।