তথ্য প্রাপ্তির অধিকারে নারীর অগ্রগতি প্রকল্প
খাগড়াছড়িতে সরকারি কর্মকর্তাদের তথ্য অধিকার ও জেন্ডার বিষয়ক প্রশিক্ষণ
॥ দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি ॥
ইউএসএআইডি’র আর্থিক সহযোগিতায় দ্যা কার্টার সেন্টারের সহযোগিতায় ও তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থার আয়োজনে ‘খাগড়াছড়িতে তথ্য প্রাপ্তির অধিকারে নারীর অগ্রগতি প্রকল্প’ আওতায় সরকারি কর্মকর্তার জন্য তথ্য অধিকার এবং জেন্ডার বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৫মে) সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। প্রশিক্ষণে উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ সহিদুজ্জামান। এতে মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক ও অবসর প্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মোঃ আব্দুল করিম, এনডিসি এবং জেন্ডার এক্সপার্ট মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম।
দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা-তথ্য প্রাপ্তির অধিকারে নারীর অগ্রগতি প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী মিনুচিং মারমার সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জোনায়েদ কবীর সোহাগ, দ্যা কার্টার সেন্টারের প্রতিনিধি ফারজানা নাসরিন, শাহরুজ এনাম, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (নেজারত ও গোপনীয় শাখা) এ. জেড. এম. নাহিদ হোসেন, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (শিক্ষানবিশ) নুসরাত জাহান, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (শিক্ষানবিশ) নোমান ইবন হাফিজ, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (শিক্ষানবিশ) তাজমীন আক্তার, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (শিক্ষানবিশ) দিপক কুমার শীল সহ অন্যান্য কর্মকর্তা।
প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মোঃ সহিদুজ্জামান বলেন, নারীরা যত ক্ষমতায়ন হবে, যত আত্মনির্ভরশীল হবে, যতটা শিক্ষিত হবে, সেটা দেশের উন্নয়ন সমৃদ্ধ হবে। খাগড়াছড়ির প্রতিটি জায়গায় নারীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। যেখানে যান নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখা যায়। সেটা কিন্তু সমতলের দেখা যায় না। পার্বত্য জেলার নারীরা অনেক সচেতন, অনেক এগিয়েছে। শিক্ষা কেন্দ্রে, টেকনিক্যাল কেন্দ্রে, মাঠে-ঘাটে নারীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। পড়ালেখা বলেন শিক্ষা ক্ষেত্রে বলেন সকল ক্ষেত্রে খাগড়াছড়ির মেয়েরা এগিয়ে আছে। অনুরূপ তথ্য প্রাপ্তির অধিকারেও আগামীতে খাগড়াছড়ি একটি রোড মডেল হিসেবে পরিচিত হবে।
জেলা প্রশাসক উপস্থিত সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং দ্যা কার্টার সেন্টার ও তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থার এমন গুরুত্ববহ প্রশিক্ষণ আয়োজনের জন্য বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।
প্রকল্প অবহিতকরণ এবং পরিচিতি সভার শুরুতে প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ অংশগ্রহণকারীদের সামনে তুলে ধরেন দি কার্টার সেন্টারের সিনিয়র মনিটরিং অফিসার শাহরোজ এনাম। তার বক্তব্যে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, সমাজের অধিকার বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এই কর্মসূচির গুরুত্ব ও ভূমিকা তুলে ধরেন।
প্রশিক্ষণে বক্তারা বলেন, জনগণের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এবং তথ্য অধিকার আইনের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে তথ্য প্রাপ্তিতে নারীদের অধিকতর সক্ষম করে তোলার পাশাপাশি, জাতীয় ও কর্ম এলাকার স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সমূহকে কার্যকর এবং শক্তিশালী করার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ভূমিকা রাখবে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, দ্যা কার্টার সেন্টার বাংলাদেশের সহযোগিতায় ৫ বছর মেয়াদে বর্তমানে ঢাকা সহ প্রকল্পের ৫টি জেলা শহর রাজশাহী, সিলেট, সাতক্ষীরা এবং খাগড়াছড়ি কার্য পরিচালনা করছে। ভবিষ্যতে দ্যা কার্টার সেন্টারের আরো ৬টি জেলায় রাঙ্গামাটি, খুলনা, নেত্রকোণা, দিনাজপুর, মৌলভীবাজার জেলায় কার্যক্রম প্রসারিত করার পরিকল্পনার রয়েছে। দ্যা কার্টার সেন্টার বাংলাদেশ ঢাকার সহযোগী সংস্থা এমআরডিআই এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন পাশাপাশি রাজশাহীতে অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট, সিলেটে ইসস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট, সাতক্ষীরায় অগ্রগতি সংস্থা এবং খাগড়াছড়িতে তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থার সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।