[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

উন্নয়নে প্রার্থীদের নানান প্রতিশ্রুতি

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জমে উঠেছে প্রার্থীদের প্রচারণা

৪৯

॥ মোঃ আবুল হাসেম, মাটিরাঙ্গা ॥
আসন্ন খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১১জন প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা শুরু চলছে পুরোদমে। নির্বাচনের সময় বেশি বাকি নাই। তীব্র গরমের মধ্যে গণসংযোগের মাধ্যমে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। তাছাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন গুলোতে মিছিল, মিটিং মাইকিং, উঠান বৈঠক করে নিজেদের জন্য ভোট চাইছেন প্রার্থীরা। এতে করে তীব্র দাবদাহে নির্বাচনী আমেজে সাধারণ ভোটাররাও রয়েছেন বেশ ফুরফুরা মেজাজে।

প্রার্থীতা উন্মুক্ত করায় অর্থাৎ দলীয় প্রার্থী না থাকার দরুন মাটিরাঙ্গায় চেয়রাম্যানের পদে ভোটের লড়াই হবে ত্রি-মুখী। আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী ২ জন। একজন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অপরজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ বহন করেন। দুজনেই অত্র উপজেলার বেশ জনপ্রিয় ব্যাক্তি। তাহলে হিসেব অনুযায়ী লড়াই হবে আওয়ামী লীগ বনাম- আওয়ামী লীগের মধ্যে। এদিকে পুনঃ পুনঃ দল বদলের আরেক প্রার্থী বিএনপির একচেটিয়া ভোট পাবার আশা করলেও ভোট ভবিষ্যৎবানীদের মতামত ভিন্ন। যেহেতু বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে সেহেতু তারা যদিও কেন্দ্রে যায় তাহলে তারা আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে ভোট দিবে না এমনটা আশা করা ঠিক নয়। বিএনপি যাকে নিরাপদ বোধ করেন সেখানেই ভোট দিবে। এদিকে ৭১’র রণাঙ্গনের সৈনিক বীর মুক্তিযুদ্ধাও ভোটে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের এবং সন্তান কমান্ড ও শুভাকাঙ্খীদের ভোট পাবার আশায় চেয়ারম্যান পদে লড়বেন যদিও তার ভোটের হিসেব হবে উল্টো। কারণ অত্র উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সংখ্যা তেমন নেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, মাটিরাঙ্গার বিভিন্ন স্থানের চায়ের দোকানে চলছে মুখরোচক নির্বাচনী আমেজ, প্রার্থীরা তাদের কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে বিভিন্ন স্থানে পোষ্টার, লিফলেট বিতরণের মধ্য দিয়ে ভোট প্রার্থনা করতে দেখা যায়। সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভোটারদের মন জয় করতে দিচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি। এদিকে সাধারণ ভোটাররা আশা প্রকাশ করেন যাকে বিপদে আপদে পাশ পাবেন এলাকায় উন্নয়ন করবে, বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান করবে এমন প্রার্থীদের নির্বাচিত করবেন তারা।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৪জন হেভিওয়েট প্রার্থী। তার মধ্যে বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম আনারস প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। উপজেলার উন্নয়ন ও সাধারণ মানুষের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, গতবারের ভুল ত্রুটি মার্জনা করে উপজেলার উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে আনারস প্রতীকে ভোট দিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে পুনরায় নির্বাচিত করতে জনগণের প্রতি আহবান জানান তিনি।

চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তাইন্দং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম মটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। গতবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করেছেন তিনি। ওই সময় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মোঃ রফিকুল ইসলাম চেয়ারম্যান পদে জয়ী লাভ করেন। তৃণমূল থেকে উঠে আসা তাজুল ইসলাম বলেন, আমি সাধারণ মানুষের পাশে থেকে উপজেলার উন্নয়ন করতে চাই। মানুষ যদি আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে তাহলে আমি উপজেলার উন্নয়ন ও সাধারণ মানুষের পাশে থাকবো।

এদিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে তবলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ভুুঁইয়া জয়ী হবার আশায় কৈ মাছ প্রতীক নিয়ে লড়বেন। বেফাস কথা বলা ছাড়াও পারিবারিক ও সামাজিক নানা আলোচনা সমালোচনার মধ্য দিয়েও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আবুল কাশেম ভুঁইয়া বলেন, নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু হলে তিনি জয় লাভ করবেন। নির্বাচনে কেউ যাতে প্রভাবিত করতে না পারে সেজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এবার চেয়ারম্যান পদে দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধা সংসদ খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের কমান্ডার রহিছ উদ্দিন। জয়ী হবার নিমিত্তে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি। প্রবীণ হবার দরুন সকলে তাকে বেশ সম্মান করেন। তবে নির্বাচনে প্রার্থী হতে অন্যান্য মুক্তিযুদ্ধাদের সাথে সমন্বয় করেন নি মর্মে নিজের দলের লোকেদের কাছে বেশ সমালোচিত হয়েছেন তিনি। নির্বাচিত হলে মাটিরাঙ্গা উপজেলাকে একটি স্মার্ট উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলবেন বলে তিনি জানান।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন মাইক প্রতীক নিয়ে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন, তালা প্রতীক নিয়ে নাগরিক পরিষদের মোঃ জালাল মিয়া, চশমা প্রতীক নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আলী হোসেন এবং বই প্রতীক নিয়ে লড়ছেন অনিরঞ্জন ত্রিপুরা। অপরদিকে ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে লড়ছেন ৩জন। কলস প্রতীক নিয়ে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান হাসিনা বেগম জয়ের আশায় লড়বেন। ফুটবল মার্কা নিয়ে লড়ছেন মোছা: আমেনা বেগম। তাছাড়া হাঁস প্রতিক নিয়ে ভোট প্রার্থনায় মাঠে রয়েছেন মনোয়ারা বেগম।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিসার মুহাম্মদ হাসান জানান, আগামী ৮ই মে মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে সকল ধরনের প্রস্তুুতি নেয়া হচ্ছে। এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৯০হাজার ৩শত ৮২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৪৬হাজার ১শত২০জন। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৪৪হাজার ২শত ৬২জন।