ঋণ করে মজুদ বাড়ালেও চোখে মুখে অন্ধকার
হরেক রকমের পোষাক আছে ক্রেতা সেভাবেই নেই, কাপ্তাই নতুন বাজারের চিত্র
॥ মোঃ কবির হোসেন, কাপ্তাই ॥
ঈদ ও বৈসাবি এবং পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই নতুন বাজার এলাকার বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যবসায়ী মহল ধার-দেনা এবং ঋণ করে ব্যবসার পুঁজি বাড়ালেও এখন কোথাও কোথাও ক্রেতা শুন্যতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। চাঁদ রাতে তাদের ব্যবসা বাড়বে বলে সেই প্রত্যাশা নিয়ে এখনও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দিন রাত অলস সময় পার করছেন। তবে ব্যস্ততম এসব বাজার এলাকায় ব্যবসায়ী সমিতি ও আইনশৃংখলা বাহিনীর কঠোর নজরদারিও রাখা হয়েছে।
বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পবিএ ঈদ ও পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম সামাজিক উৎসব বৈসাবি একই সাথে হওয়াতে ব্যবসায়ীদের মাঝে ব্যাপক আনন্দ লক্ষ্য করা গেছে। তবে বিভিন্ন শ্রেনীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পণ্যের মজুদ বাড়ালেও বিক্রয় তেমন নেই। কাপড়ের দোকানগুলোতে হরেক রকম কাপড় আছে অথচ সেভাবে ক্রেতা নেই। লাখ লাখ টাকা ব্যাংক, এনজিও সহ বিভিন্ন ভাবে লোন ও টাকা ধার নিয়ে ঈদ ও বৈসাবি, ১লা বৈশাখ উপলক্ষে দোকানে হরেক রকম পোষাকে সাজিয়েছে ব্যবসায়ী মহল। কিন্ত বহু প্রতিষ্ঠানে ক্রেতা শূন্য থাকায় অলস বসে সময়ও কাটছে।
ব্যবসায়ী অনেকে মত প্রকাশ করে জানান, কাপ্তাইয়ের ব্যবসা হল কাপ্তাই হ্রদের পানির ওপর নির্ভরশীল। পানি না থাকায় লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থানও বন্ধ হয়ে গেছে। যার ফলে দোকানে বেচা বিক্রি কমে গেছে। সাধারণ মানুষ তাদের চাহিদা মিটিয়ে চলতে কষ্ট হচ্ছে। বৃহত্তর চট্টগ্রামের সাথে সরাসরি যোগাযোগ থাকায় রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলা সহ চন্দ্রঘোনা এবং তার আশপাশ এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জমজমাট ব্যবসা হয়। সেই সাথে রাঙ্গামাটির ঐ উপজেলার আশপাশ এলাকা এমন কি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ও তার আশপাশ এলাকার মানুষ অনেকটা এই বাজারের উপরই নির্ভরশীল। মানুষের তাৎক্ষনিক যোগাযোগ এবং সামাজিক জীবনের চাহিদা মেঠাতে পারে বলে কাপ্তাইস্থ নতুন বাজার এবং চন্দ্রঘোনা-লিচুবাগান-দোভাষী বাজার এলাকা উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রেখে আসছে। এর পরও দিন দিন কাপ্তাইয়ের আয়ের উৎস কমে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে ঈদ ও বৈসাবির এবং পহেলা বৈশাখের বাজারে।
এদিকে কাপ্তাই নতুন বাজারস্থ ঢাকা টেইলার্স এর মালিক আব্দুল কাদের জানান, দোকানে বেচা বিক্রয় নেই। অলস সময় কাটতে হচ্ছে। মেসার্স রবি টেইলার্স এর আক্তার হোসেন জানান দোকানে হরেক রকম পোষাক ও বিভিন্ন রকম কাপড় মজুদ আছে কিন্ত ক্রেতা নেই। তেমন একটা বিক্রয় নেই। ইত্যাদি ষ্টোর এর মালিক আব্দুর রউফ জানান তেমন একটা বিক্রয় নেই। জানিনা সামনে কি হয়। জুতার দোকান মালিক আসিফ জানান, খুব স্বল্প বিক্রয় হচ্ছে। কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জানান, যারা সরকারি চাকুরীজীবী তারা বেতন বোনাস পেয়ে বাজার কিছুটা জমবে। নতুন বাজার কসমেটিকস দোকানের মালিক খুরশিদ আলম জানান, চাঁদ রাতে সাধারণ লোকজন কেনা কাটায় হয়তো ঢল নামবে। এবং ঐ দিন বাজারে বেশি বিক্রয় হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
কাপ্তাই নতুন বাজার বণিক কল্যাণ সমবায় সমিতি লিঃ সভাপতি জয়নাল আবেদিন সম্পাদক এম করিম জানান, পবিত্র ঈদ, বৈসাবি ও ১লা বৈশাখ উপলক্ষে বাজারে কঠোর নিরাপত্তা ও নজরদারিতে রাখা হয়েছে। পুলিশ সহ সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। বেচা বিক্রি একটু কম তবে ঈদের ২/১দিন আগে বিক্রয় বেশি হবে বলে তারাও আশা প্রকাশ করেন।