ফাঁকা গুলির আওয়াজ শুনে ভোট কেন্দ্রে আসে ভোটাররা
দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া মানিকছড়িতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে
॥ মোঃ ইসমাইল হোসেন, মানিকছড়ি ॥
রোববার সকাল ৮টা থেকে সারাদেশের ন্যায় ২৯৮নং খাগড়াছড়ি সংসদীয় আসনের মানিকছড়ি উপজেলার ২০টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। উপজেলার দুটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন দুয়েকটি ঘটনা ছাড়া বাকি কেন্দ্রে গুলোতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ অনষ্ঠিত হয়। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভোট কেন্দ্র উপজেলার গভামারা এলাকায় ভোটকে কেন্দ্র করে গতকাল শনিবার (৬ জানুয়ারি) রাত ১১টা থেকে ভোটের দিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুর্বৃত্তরা বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। ভোটের দিন সকালে গুলির শব্দে স্থানীয় ভোটারদের অনেকেরই ঘুম ভাঙ্গে। এতে করে দিনভর ঐ এলাকায় আতংক বিরাজ করে।
গতকাল রাত ১১টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত ২ রাউন্ড, ভোর থেকে সকাল ৯টা নাগাদ আরো ২ রাউন্ড এবং সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৪ রাউন্ডসহ প্রায় ৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রমা সড়ক দখলের চেষ্টা করলে স্থানীয়দের তাড়া খেয়ে সড়ক ছাড়তে বাধ্য হয় দুর্বত্তরা। এসময় প্রায় ৪০ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কমাতেই এমন আতংক সৃষ্টি করেছেন পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইডেট পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। উত্তেজিত ভোটার ও ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে রাখতে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছান জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জিয়া উদ্দিন আহমেদ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহীনা নাছরিন সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মানিকছড়ি সার্কেল একেএম কামরুজ্জামান, ওসি মোহাম্মদ ইকবাল উদ্দিনসহ পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যরা। তাদের উপস্থিতিতে সেখানের পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এছাড়া উপজেলার ২নং বাটনাতলী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মংমাইপ্রু মারমা দিনভর ইউপিডিএফ’র হেফাজতে ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ৩নং ওয়ার্ডের উপজাতী ভোটারদের উপস্থিতি কম ছিল। সেখানের দুটি সংশ্লিষ্ট ঐ ইউপি সদস্যকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভোট কেন্দ্রের আশপাশে দেখা যায়নি এবং মুঠোফোনেও তাকে সংযোগে পাওয়া যায়নি। এর বাইরে মানিকছড়ি উপজেলার বাকি ১৮টি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে নৌকার এজেন্ট নিয়োগ করা হলেও অন্য তিন প্রার্থীর এজেন্টের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম।
সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যলয় সূত্রে জানা গেছে, ভোট গ্রহণ শেষে মানিকছড়ি উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ২০টি ভোট কেন্দ্রে ৩১ হাজার ৬৯৩ ভোট কাস্টিং হয়েছে। শতকরা ৫৮.৪৯৬৮% ভাগ ভোট কাস্ট হয়েছে। অত্র উপজেলায় মোট ভোর সংখ্যা ৫৪ হাজার ১৬৯ জন।