[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
খাগড়াছড়ির রামগড়ে গাঁজাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতারইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্থিনে গণহত্যার প্রতিবাদে রাঙ্গামাটিতে ওয়ার্ল্ড পীস্’র মানববন্ধনঢাকা রমনা লেকে ফুল ভাসিয়ে ফুলবিঝু উৎসব পালন করলেন পার্বত্য উপদেষ্টাখাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ফুল বিঝু‘র র‌্যালী ও মাইনী নদীতে ফুল দিয়ে গঙ্গাদেবীকে পূজাবাঘাইছড়িতে বর্ণাঢ্য র‌্যালী ও কাচালং নদীতে ফুল ভাসিয়ে বিঝু শুরুপাহাড়ের বিঝু মেলাতে পাঁজন তরকারি খুবই জনপ্রিয়দক্ষিণ চট্টগ্রামের সর্ব-বৃহৎ কো-অপারেটিভ ‘মৌচাকের’ ৩০ তম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিতবান্দরবানের আলীকদমে মাতামুহুরী ও তৈন খালে ফুল ভাসিয়ে বিষু-বিজু উৎসব শুরুবান্দরবানে গত তিন মাসে অপহৃত হয়েছে ৪৯জন, আতঙ্কে স্থানীয়রাপাহাড়ের সময় অনলাইন পোর্টাল আগামী ৭২-৯৬ ঘন্টা বন্ধ থাকবে
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

লামায় ঘুরতে এসে কি কি দেখবেন ?

৯৭

॥ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ॥

চোখজুড়ানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর রোমাঞ্চকর অনেক জায়গার কারণে বান্দরবানের “লামা উপজেলা” সম্প্রতি সময়ে বাংলাদেশের পর্যটনখাতে উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করেছে। প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্রে পরিপূর্ণ পাহাড়ি কন্যার নাম “লামা”। হাতে মেঘ ছুঁয়ে দেখা কিংবা পাহাড়ি সৌন্দর্যে বুঁদ হতে চাইলে পরিবার পরিজন কিংবা বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন প্রকৃতির এই অনন্য নিঃস্বর্গ থেকে। ঘুরতে কার না মন চায়। সুযোগ পেলেই আমরা ঘুরে আসি। তাই এবার আমরা পাহাড়ি অঞ্চল লামায় যতগুলো ভ্রমণের জায়গা আছে তার সন্ধান দিচ্ছি। না গিয়ে থাকলে এবার ঘুরে আসতে পারেন।

পরিচিত দর্শনীয় স্থান যেমন- মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্স, তংথমাং রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্ট, অনন্য রিসোর্ট, মিরিঞ্জা ভ্যালী, মারাইংছা হিল, ভিউ পয়েন্ট কিছুক্ষণ, দুইশত বছরের পুরানো সাবেক বিলছড়ি বৌদ্ধ বিহার, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন, নুনারঝিরি-আইম্যারা ঝিরি-নকশাঝিরিসহ অসংখ্য ঝর্ণা, লামা-ফাইতং রোডে ইকো রিসোর্ট ‘প্রংখংডং’, আধুনিক ও স্থানীয় খাবারের দোকান ‘লাড়ং’, খাবারের দোকান কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্ট ও ফুড হিল, মাতামুহুরী নদী ও লামা খালে নৌকা ভ্রমণ, দুখিয়া-সুখিয়া সহ অসংখ্য পাহাড় ট্রেকিং, লামা খাল, পোপা খাল, বমু খালের মাছকুম, মাষ্টার পাড়া সুরুঙ্গ (গুহা), বীর বাহাদুর কানন, এনআইসি চেয়ারম্যান লেক, আজিজনগর।

 

ঘুরতে আসা পর্যটকদের কিছু পরামর্শ। ১। দেশের দূর-দূরান্ত থেকে যারা লামায় ঘুরতে আসবেন, তারা স্থানীয় কারো রেফারেন্স, টুরিস্ট গাউড, যে কোন ট্রাভেল গ্রুপ বা কোন পর্যটন স্পটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে আসার চেষ্টা করবেন। তাহলে সময়কে সঠিক ব্যবহার করে অতি অল্প সময়ে লামা উপজেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান গুলো ঘুরে দেখতে পারবেন।

২। যেহেতু লামা পাহাড়ি এলাকা এবং বিশেষ করে রাত্রিযাপনের সুযোগ-সুবিধা সীমিত, তাই এখানে আসার আগে কোথায় থাকবেন তা নিশ্চিত করে আসবেন। সব মিলিয়ে লামা উপজেলায় তংথমাং রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্টে ২০ জন এবং অনন্য রিসোর্টে ৫০ জন পর্যটক থাকার ব্যবস্থা আছে। এছাড়া মিরিঞ্জা ভ্যালী ও মারাইংছা স্পটে তাবু এবং মাচাং ঘরে খোলা আকাশের নিচে দুই-তিন শতাধিক পর্যটক থাকতে পারবেন। লামা বাজারে মানসম্মত আবাসিত হোটেল সী-হিল, মাছ বাজারে জেলা পরিষদ গেস্ট হাউজ, প্রিজন হোটেল ও মিরিঞ্জা হোটেলে শতাধিক লোক থাকার ব্যবস্থা আছে।

৩। সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ১৮শত ফুট উপরে অবস্থিত ‘মিরিঞ্জা ভ্যালী’ এবং ‘মারাইংছা হিলে’ যে সব টুরিস্ট থাকে তাদের খাবার লামা বাজারের বিভিন্ন হোটেল থেকে কর্তৃপক্ষ নিয়ে সরবরাহ করেন। টুরিস্টরা চাইলে নিজেরাও লামা বাজারে এসে খেতে পারেন। লামার তংথমাং রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্ট এবং অনন্য রিসোর্টে শুধুমাত্র তাদের নিজেদের খাবার পরিবেশনের সক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া মানসম্মত খাবার হোটেল হিসাবে লামা বাজারে কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্ট, লামা থানার সামনে ফুড হিল, পান বাজার গলিতে হোটেল ইনসাফ, নদীর ঘাটে হোটেল বিসমিল্লাহ ও বাস টার্মিনালে ভাতঘর রয়েছে। যেখানে স্বল্প খরচে খেতে পারবেন। হোটেলে খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে আগে মূল্য তালিকা দেখে নিবেন। মিরিঞ্জা ভ্যালী ও মারাইংছা হিল থেকে লামা বাজারের দূরত্ব ৬ কিলোমিটার।

৪। থাকার ব্যবস্থা হিসাবে সরকারি ও বেসরকারী কয়েকটি রেস্ট হাউজ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় থাকলে ওখানেও থাকতে পারেন। যেমন- বিএটিবি রেস্ট হাউজ, বন বিভাগের রেস্ট হাউজ, উন্নয়ন বোর্ড রেস্ট হাউজ।

৫। বাস-জীপ থেকে নামার পর নিজেদের ইচ্ছামত অটো, রিকশা বা সিএনজিতে উঠবেন, অবশ্যই গন্তব্যস্থল উল্লেখ করে ভাড়া ঠিক করে উঠবেন। দূর কোন স্থানে যেতে চাইলে জীপ ব্যবহার করতে পারেন।

৬। সম্ভব হলে লামা আসার আগেই ফোনে হোটেল বুকিং দিয়ে যাবেন। তবে বুকিং দেবার আগে ভাড়া ঠিক করে নেবেন। যারা লামায় এসে হোটেল ঠিক করতে চান তারা অবশ্যই অটো চালকের কথায় কোন হোটেলে যাবেন না। নিজেরা যাচাই করে, রুম দেখে ভাড়া ঠিক করে হোটেলে উঠবেন।

৭। লামা পার্বত্য এলাকা হওয়ায় এখানে অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনীর চেকপোস্ট রয়েছে। ওইসব চেকপোস্টে আপনার পরিচয় প্রদানের জন্য এনআইডি কার্ডের ফটোকপি দিতে হয়। এছাড়া তাই হোটেলে উঠার সময় অবশ্যই এনআইডি কার্ড বা জন্ম নিবন্ধন কার্ড সাথে আনবেন এবং হোটেলে কপি জমা দেবেন।

৮। কোথাও যাওয়ার আগে মূল্যবান জিনিসপত্র হোটেলে বা পর্যটন কর্তৃপক্ষের কাছে রেখে আসাই উত্তম। লামা শহর থেকে একটু দূরে ঘুরতে চাইলে আজিজনগর চেয়ারম্যান লেক পর্যটন স্পট বেঁচে নিতে পারেন।

৯। যেহেতু লামা পাহাড়ি এলাকা, তাই নিরাপত্তার স্বার্থে লামা থানা পুলিশের নাম্বার রাখতে পারেন। লামায় টুরিস্ট পুলিশ নেই। কোন ধরনের হয়রানি হবার সম্ভাবনা হলে পুলিশের সহায়তা নিবেন। লামা পুলিশের সরকারি নাম্বার। ওসি ০১৩২০-১১০৫৮০, ডিউটি অফিসার ০১৩২০-১১০৫৮৫ বা জাতীয় সেবা নাম্বার ৯৯৯ এর সহযোগিতা নিতে পারেন।

১০। নিজের গন্ডির বাহিরে ও অচেনা জায়গায় একা যাবেন না। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠী রয়েছে। তাদের জীবনযাত্রা ও সাংস্কৃতিক কৃষ্টিকালচার আলাদা। তাই তাদের সামাজিক মূল্যবোধে আঘাত করে এমন কোন কাজ করবেন না।

১১। দেশটা আমাদের। তাই কোথায় ঘুরতে গেলে খাবারের প্যাকেট, পানির বোতল এবং ময়লা আবর্জনা করা থেকে বিরত থাকুন। পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে সহায়তা করুন।

১২। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় সন্ধ্যার পর রাত্রিযাপনের স্থানের আশপাশে থাকবেন। সন্ধ্যার পর নিরিবিলি অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকা পরিহার করাই উত্তম।

১৩। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, লামা থানা ও ট্রাফিক পুলিশ এবং জনপ্রতিনিধিরা সার্বক্ষনিক পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবায় কাজ করে যাচ্ছে। আপনাদের সবার সহযোগিতায় একান্তই কাম্য।