॥ দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি ॥
খাগড়াছড়ির পানছড়িতে বালিকা স্কুলের গেইটের সামনে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ রাজেন্দ্র ত্রিপুরার প্রাইভেট-কার এর ধাক্কায় সুশান্ত চাকমা (৪৫) নামে একজন টমটম চালক নিহত হয়েছে। পানছড়ি সড়কের পোড়াবাড়ি এলাকায় সোমবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় ও পুলিশ সুত্র জানিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, পানছড়ি তারাবন স্কুলে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প শেষে খাগড়াছড়িতে ফিরছিলেন ডাঃ রাজেন্দ্র ত্রিপুরা। তিনি খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো গ ১৫-৭০৬১) করে নিজে চালিয়ে ফেরার সময় পিছন থেকে টমটমকে ধাক্কা দিলে প্রায় ২০ফুট দূরে গিয়ে পড়ে। তিনি মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত সুশান্ত চাকমা (৪৫) পানছড়ি উপজেলার সত্যধন পাড়া গ্রামের বিক্রম সেন চাকমার ছেলে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পানছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে গেল কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সেখানে পুলিশের পাহাড়ায় রয়েছেন। এদিকে ক্ষুদ্ধ পরিবার ও এলাকাবাসী হাসপাতালটি ঘিরে চিকিৎসকের গ্রেফতারের দাবী জানান। এসময় ছেলের ভবিষ্য চাকরির দেওয়া ও ৮ (আট) লক্ষ দাবি করেন টমটম চালক সমিতির সভাপতি। এতে দাবিকৃত টাকা পূরণের প্রতিশ্রুতি দিলে সমঝোতা হয়। পরে আহত অবস্থায় চিকিৎসক রাজেন্দ্র ত্রিপুরাকে পুলিশের হাতে তুলে দিলে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিউল আজম জানান, গাড়িটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ছাবের বলেন, ডাক্তার রাজেন্দ্রর বিরুদ্ধে মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর পুরোনো অভিযোগ আমারও জানা। এ দুর্ঘটনায় ডাক্তার নিজেও গুরুতর আহত। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন। ঘটনা খতিয়ে দেখার পর মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর সত্যতা পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. রাজেন্দ্র ত্রিপুরা ইতোপূর্বেও মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে বহুজনকে আহত করার অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি নিজেও বেশ কয়েকবার আহত হয়েছিলেন। কিছুদিন আগেও খাগড়াছড়ি-মাটিরাঙা সড়কের আলুটিলা এলাকায় বেশ কয়েকজনকে আহত করেছেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে শহরের আদালত সড়কে শিশুসহ তিনজনকে নিজে গাড়ি চালিয়ে ধাক্কা দিয়ে গুরুতর আহত করেছিলেন। এর আগের বছর জেলা সদর হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার সময় মাতাল হয়ে গাড়ি চালিয়ে এক শিশুকে চাপা দেন তিনি। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় ওই শিশুটি।