মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ধনুবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেয়ালিকা উন্মোচন
॥ বরকল উপজেলা প্রতিনিধি ॥
সারা দেশের ন্যায় রাঙ্গামাটি বরকলে মহান বিজয় দিবস উদযাপন কর্মসূচির অংশ হিসেবে ধনুবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃক “লাল সবুজের বাংলাদেশ” ওপর নির্মিত দেয়ালিকা উন্মোচন করা হয়েছে।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) বরকল উপজেলায় লুদিবাজছড়া এলাকায় ধনুবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধনুবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাছেন রাখাইন,বরকল প্রেসক্লাব সহ-সভাপতি নিরত বরন চাকমা ও সদস্য লক্ষীমন চাকমা,বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি উত্তম কুমার চাকমা।
বক্তারা মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন,১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন।১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনা হয়।চলমান আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ৩০ লাখ শহীদের বিনিময়ে এবং দুই লাখ মা-বোনে সম্ভ্রমহানির মধ্যে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে।আজকের সেই স্বাধীনতার ফসল হিসেবে নতুন প্রজন্ম সুবিধা ভোগ করছে।এই বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে এদেশের মানুষ পরাধীন হয়ে বাস করতে হতো।কখনও মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার সুযোগ লাভ হতো না।তাই আজকের দিনটি সবার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধান শিক্ষক কাছেন রাখাইন বলেন,বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে।১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবো বিজয় দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।তারই ধারাবাহিকতায় মহান বিজয় দিবসকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিকশিত করতে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়।আর দেয়ালিকা তৈরির উদ্যোগটি এবারে প্রথম করা হয়েছে।ভবিষ্যতে এলাকাবাসী এবং অভিভাবকদের সহযোগিতা থাকলে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান বিকাশমূলক কার্যক্রম অব্যহত থাকবে।
বরকল প্রেসক্লাব সহ-সভাপতি নিরত বরন চাকমা,১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর পাক-হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্যে দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের সূচনা হয়।এ দিনটি ছিল বাঙালি জাতির এক ঐতিহাসিক ও গৌরবোজ্জ্বল দিন।এ দেশ স্বাধীনতার পেছনে ৩০ লাখ শহীদ ও ২লাখ মা-বোনের ইজ্জত লুন্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ,বিভিন্ন পেশাজীবি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে।তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আজ আমরা লাল সবুজের পতাকা ও স্বাধীন ভূখণ্ড অর্জন করেছি।আমরা তাদের সবসময়ই কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করবো।তার পাশাপাশি বর্তমান প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করে আদর্শবান মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে।কারণ একজন আদর্শবান ব্যক্তির মাধ্যমে আদর্শ পরিবার সৃষ্টি হয়,আদর্শ পরিবার হলে আদর্শ সমাজ গঠন হয় এবং আদর্শ সমাজ গঠন হলে আদর্শ রাষ্ট্রে পরিণত হয়।তাই আমাদের সবাইকে সেই আদর্শ লালন করতে হবে।
এসময় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ,শিক্ষকবৃন্দ,শিক্ষার্থীবৃন্দসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এদিন দেয়ালিকা উন্মোচন ছাড়াও বক্তৃতা ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা,নৃত্য পরিবেষণা অনুষ্ঠিত হয়।সভাশেষে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।