ভারতের পেঁয়াজ আসা বন্ধের সংবাদ
খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে ঘন্টার ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা
॥ মোঃ ইসমাইল হোসেন, মানিকছড়ি ॥
কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে পেয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) মানিকছড়ি বাজারে সাপ্তাহিক হাটের দিন। সকাল থেকে বিকেল নাগাত এ বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের আগমনে সরগরম থাকে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে উপজেলা সদরের পাশাপাশি প্রান্তিক জনপদের অসংখ্য খেটে খাওয়া মানুষ এ বাজার থেকে সাপ্তাহিক কেনাকাটা করেন।
শনিবার সকালে এ বাজারেই পেয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০-১২০ টাকায়। যা গতকাল ছিল ১০৩ টাকা থেকে ১১০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু বেলা বাড়ার সাথে সাথে কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে দুপুরে সেটি দাড়িয়ে ২০০ টাকায়! যার ফলে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। তাদের দাবি বড় বড় পাইকারি দোকানদার ও স্থানীয় খুচরা বিক্রেতারা সিন্ডিকেট করে পেয়াজের দাম বাড়িয়েছেন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছেন, হঠাৎ ভারত থেকে পেয়াজ বন্ধের খবরে স্থানীয় বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে।
সাপ্তাহিক শনিবার মানিকছড়ি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, যে পেয়াজ সকালে বিক্রি হয়েছে ১১০-১২০ টাকায়। ঘন্টা খানের পর সেই পেয়াজ ১৪০-১৬০ টাকায় বিক্রি করছেন পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা। কিন্তু দুপুর নাগাদ দাম বেড়ে তা দাড়িয়েছে ২০০ টাকায়। যার ফলে কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে পেয়াজের দাম প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাওয়া ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
কথা হয় পেয়াজ কিনতে আসা ফরিদ, নাছির ও আলমগীর’র সাথে। তারা জানান, সকালে খুচরা ও পাইকারি দোকানদাররা পেয়াজ বিক্রি করেছেন ১১০ টাকায়। অথচ কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে এখন ২০০ টাকা। হঠাৎ পেয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ জানেন না তারা। এসময় উপজেলা প্রশাসনের বাজার মনিটরিংয়ের জোড় দাবি জানান তারা। আরেক পেয়াজ ক্রেতা মুজিবুর রহমান বলেন, বাজার ঘুরে দাম যাচাইবাছাই করে অনেক কষ্টে ১৭০ টাকা করে দুই কেজি পেয়াজ কিনতে হয়েছে। আর এখন সেই পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে দুইশত টাকায়। অথচ সকাল বেলা আমার সামনেই ১১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
হঠাৎ পেয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে খুচরা বিক্রেতা চমক, নওশাদ, জাহিদ, তারেক ও শিমুল বলেন, ভারত থেকে পেয়াজ আমদানির খবর ছড়িয়ে পড়ায় আড়দদারেরা দাম বৃদ্ধি করেছে। যার ফলে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
পাইকারি বিক্রেতা জাহিদ স্টোর, আল মক্কা জেনারেল স্টোর, ভূপতি ও পাল স্টোরের স্বত্বাধিকারিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, টেলিভিশন ও পত্রপত্রিকাতে আগামী ৩১ মার্চের আগে ভারত থেকে পেয়াজ না আসার খবরে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পেয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। অথচ নতুন করে দেশি পেয়াজ উঠাতে শুরু করায় তাদের মজুদ থাকা পেয়াজ দ্রুত বিক্রি করেছেন বিক্রেতারা। কিন্তু হঠাৎ ভারতের পেয়াজ আসা বন্ধের খবরে হঠাৎ পেয়াজ দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে খুব অল্প সমেয়র মধ্যে পেয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে বলেও মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
মানিকছড়ি বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল কাদের বলেন, বাজারের শৃংখলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে বাজার কমিটি। কিন্তু অতিরিক্ত মুনাফার কারণে হঠাৎ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি প্রশাসন যাতে নজরদারি করে তার অনুরোধ জানিয়েছে তিনি। বাজার ব্যবসায়ীরা যাতে পণ্যের অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধি করে বিক্রি না করে সেজন্য বাজার মনিটরিং করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রক্তিম চৌধুরী জানান, ভারতের পেয়াজ আমদানির খবরেও সারাদেশের ন্যায় মানিকছড়ির স্থানীয় বাজারেও পেয়াজের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিং করার কথা জানিয়েছেন তিনি।