চুক্তির ২৬তম বর্ষপুর্তিতে র্যালী, ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্পিং, শীতবস্ত্র বিতরণ
সেনাবাহিনী তথা নানিয়ারচর জোন দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় সম্প্রীতি কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে
॥ তুফান চাকমা, নানিয়ারচর ॥
ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তি চুক্তি উপলক্ষে রাঙ্গামাটির নানিয়ারচরে নানা কর্মসূচীর মধ্যে দিয়ে দিবসটি উদযাপন করা হয়েছে। শনিবার (২রা ডিসেম্বর) শান্তি সম্প্রীতি ও উন্নয়ন প্রকল্প এর আওতায় প্রতিবছরের ন্যায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নানিয়ারচর জোন কর্তৃক শান্তি র্যালী, ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্পিং, শীতবস্ত্র বিতরণ ও প্রীতি ভলিবল ম্যাচের আয়োজন করা হয়।
সকালে র্যালীটি উদ্ভোদন করেন নানিয়ারচর জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল এস. এম. রুবাইয়াত হুসাইন (পিএসসি)। র্যালীটি নানিয়ারচর উপজেলার প্রধান ফটক হতে শুরু হয়ে নানিয়ারচর মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।
এসময় নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আমিনুল এহসান খান, উপজেলা চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা, ভাইস চেয়ারম্যান নুরজামাল হাওলাদার, সাবেক্ষং ইউপি চেয়ারম্যান সুপন চাকমা, সদর ইউপি চেয়ারম্যান বাপ্পি চাকমা, বুড়িঘাট ইউপি চেয়ারম্যান প্রমোধ খীসা, থানা অফিসার ইনচার্জ সুজন হালদার সহ বিভিন্ন শ্রেণীর ২৫০-৩০০জনসাধারণ র্যালীতে অংশগ্রহণ করেন।
পরবর্তীতে নানিয়ারচর জোনের আওতাধীন ছানা বাজার এলাকায় ১০০জন অসহায় শীতার্ত জনগনের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করেন সেনাবাহিনী। পাশাপাশি বুড়িঘাট এলাকায় ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্পেইন পরিচালনার মাধ্যমে দায়িত্বপূর্ণ এলাকার গরীব, দুস্থ ও অসহায় নারী পুরুষ ও বৃদ্ধসহ ২০০জন রোগাক্রান্ত জনসাধারণকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান ও ঔষধ বিতরণ করা হয়।
দিবসটিকে আরও প্রানবন্ত ও সাফল্যমন্ডিত করার লক্ষ্যে বিকালে নানিয়ারচর উপজেলা মাঠ প্রাঙ্গণে স্থানীয়দের সাথে প্রীতি ভলিবল ম্যাচের আয়োজন করা হয় এবং বিজয়ী দলকে পুরষ্কৃত করা হয়। খেলা উপভোগ করার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে পাহাড়ি বাঙালী সম্প্রদায়ের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
নানিয়ারচর জোন জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথা নানিয়ারচর জোন তার দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় এমন সম্প্রীতিমূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে এবং জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে পাহাড়ী জনসাধারণের সার্বিক জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাবে। সেনাবাহিনীর এমন জনকল্যাণমুখী কর্মসূচী স্থানীয়রা প্রশংসা প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গত, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিরাজমান পরিস্থিতি নিরসনের লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাথে পার্বত্য চট্রগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি কয়েক দফা সংলাফের পর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটির সাথে পার্বত্য চট্রগ্রাম জনসংহতি সমিতির ১৯৯৭ সালে ২রা ডিসেম্বর পার্বত্য চট্রগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দীর্ঘদিন এ অঞ্চলের চলমান, রক্তপাত, সংঘাত ও রাজনৈতিক সংকট নিরসনের লক্ষ্যে তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক উদ্যোগে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম এ শান্তি চুক্তি।