১৯৭৫এ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার অন্যতম প্রতিবাদী যোদ্ধা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাঙ্গামাটি আসনে এবারও দীপংকর তালুকদার
॥ তুফান চাকমা ॥
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও রাঙ্গামাটি আসনে দীপংকর তালুকদারকে আওয়ামীলীগের প্রার্থী ঘোষণা করায় জেলা আওয়ামীলী ও তাঁর অংগসংগঠনের মধ্যে আনন্দ উল্লাস দেখা দিয়েছে। রবিবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংসদীয় ৩০০ আসনে দলের মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। এসময় পার্বত্য অঞ্চলের বৃহত্তর জেলা রাঙ্গামাটিতে নৌকার মাঝি হিসেবে বর্তমান এমপি দীপংকর তালুকদার এর নাম ঘোষণা করলে সকল নেতৃবৃন্দের মধ্যে এ আনন্দ উল্লাস দেখা দেয়। এতে করে সকল জল্পনা কল্পনারও অবসান ঘটে।
এদিকে দীপংকরের নাম ঘোষণার পরপরই জেলা আওয়ামীলীগ সহ সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় খন্ড খন্ড করে আনন্দ মিছিল বের করেন। পরবর্তীতে সমাবেশে মিলিত হয়ে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা। বক্তারা রাঙ্গামাটি ২৯৯ আসনে দীপংকর তালুকদারকে মনোনীত করায় দলের সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। সেই সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এনে বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট দেশে রুপান্তর করার সুযোগ দেওয়ার জন্য সকল নেতাকর্মীদের মাঠ পর্যায়ে থেকে কাজ করার আহ্বান জানান। পাহাড়ি বাঙালী সকল সম্প্রদায়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে এবং উন্নয়নের ধারা আরও বেগবান করতে দীপংকর তালুকদার এমপিকে পুনরায় বিজয়ী করার আশা ব্যক্ত করেন।
অপরদিকে আসনটিতে দীপংকর তালুকদার’কে মনোনয়ন দেওয়ায় আনন্দ মিছিল করেছে নানিয়ারচর উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, ৬৯এর গণঅভ্যুত্থানের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে উঠে আসা অন্যতম নাম এই দীপংকর তালুকদার। ১৯৭২-১৯৭৩ মেয়াদে তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য একইসাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ছাত্র সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৩-৭৪ মেয়াদে তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৭৫এ জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার অন্যতম প্রতিবাদী যোদ্ধা হিসেবে ভূমিকা রাখেন। ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে তিনি উক্ত জেলা শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন, সেই থেকে বিশ্বাস,আস্থা ও সকল কর্মীদের ভরসার একক নাম হিসেবে এখন পর্যন্ত একটানা সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৯৮ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স গঠিত হলে উনাকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৯১ সালে তিনি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ শিক্ষা কমিটি, সংস্থাপন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি ও জাতীয় সংসদ হাউস কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান এবং ২০১৪ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন।
দীপংকর তালুকদার ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পার্বত্য রাঙ্গামাটি আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ৪৯২২১ ভোট পেয়ে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে একই আসন থেকে ১৯৯৬ সালে সপ্তম, ২০০৮ সালে নবম ও ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী সহ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য মনোনীত হন। বর্তমানে তিনি খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কীত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।