[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক সদস্য আলীম বহিষ্কারখাগড়াছড়ির দীঘিনালায় নানান আয়োজনে নববর্ষ উদযাপনবাঘাইছড়িতে উপজেলা প্রশাসনের নববর্ষ উদযাপনরাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বিএনপির শোভাযাত্রামাটিরাঙ্গায় বর্ণিল আয়োজনে উপজেলা প্রশাসনের বর্ষবরণ শোভাযাত্রাখাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষ বরণ করেছে বিএনপিবান্দরবানের থানচিতে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে সাংগ্রাই উৎসবখাগড়াছড়ির রামগড়ে গাঁজাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতারইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্থিনে গণহত্যার প্রতিবাদে রাঙ্গামাটিতে ওয়ার্ল্ড পীস্’র মানববন্ধনঢাকা রমনা লেকে ফুল ভাসিয়ে ফুলবিঝু উৎসব পালন করলেন পার্বত্য উপদেষ্টা
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

সংসারের অভাব ঘোচানো রাজজোগালী রাজু এখন স্কুলে

১৯৫

॥ মোঃ সোহেল রানা, দীঘিনালা ॥

রাজুর বয়স সবে ১৩ বছর। চেহারায় এখনো শৈশবের ছাপ। স্কুলের সহপাঠি ও বন্ধুরে সাথে পড়ালেখা আর খেলাধূলা করার কথা। অল্প বয়সে নির্মম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। সংসারের অভাব ঘোচাতে অপ্রাপ্ত বয়সেই নিমার্ণ শ্রমিকের রাজ জোগালীর কাজ নেয়। সেই কাজ করতে গিয়ে মাদ্রাসা হিফজ বিভাগের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়।

ছেলেটির পুরানাম মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ রাজু। রাজু নামে এলাকায় পরিচিত। বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের অনাথ আশ্রম গ্রামে। বাবা মোঃ জহিরুল ইসলাম দিনমুজুর। মা রেহেনা বেগম গৃহিণী। অভাবের মধ্যে কোনোমতে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছিল রাজু। ২০২১ সালে করোনার সময় মাদ্রাসায় হিফজ বিভাগের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। করোনার কারণে বাড়িতেও সংকট দেখা দেয়। সংসারের অভাব ঘোচাতে স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে নির্মান শ্রমিকেররাজ জোগালী কাজে শুরু হয়।

রাজুর মা বলেন, পড়াশোনা ছেড়ে নির্মাণশ্রমিকের রাজ জোগালীর কাজ নেয় রাজু। অভাব অনাটনের সংসারের ‘নুন আনতে পানতা ফুরায়’ বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, তার সাথে মিলে যায় রাজুর পারিবারের। ঝুপরি ঘরে খুব কষ্টে দিন কাটছিলো তাঁদের।

দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আরাফাতুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ে সরেজমিন তদন্তে গিয়ে রাজুর পরিবার নজরে আসে বলে। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে আমরা এক পর্যায়ে পরিবারটিকে বুঝাতে সক্ষম হই পড়াশোনা করতে টাকার চেয়ে দরকার হয় ইচ্ছা ও পরিশ্রম। রাজু শুধুমাত্র অভাবের কারণে পড়াশোনা থেকে ঝরে পড়েছে বিষয়টি অমানবিক। আমরা রাজুকে স্কুলের নতুন পোশাক ও শিক্ষা উপকরণ দিয়ে ভর্তি করিয়ে দিয়েছি।’ ইউএনও মুহাম্মদ আরাফাতুল আলম আরো বলেন, ‘অসহায় দরিদ্র রাজুর পরিবারকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পাকা ঘর প্রদান করা হয়েছে। বিনিময়ে পরিবারটির কাছে রাজুকে স্কুলে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলি। পরিবারটিও মেনে নেন।’

সরেজমিনে রাজুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ‘জরাজীর্ণ ঘরটি ভেঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরের অবকাঠামো নির্মান করছে শ্রমিকেরা। নতুন ঘর নির্মান ও রাজুর স্কুলে ফিরে আসায় পরিবারের লোকজন সহ আশপাশের লোকজনও অনেক খুশি।’

রাজুর বাবা জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘অভাবের কারণে ছেলের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পড়াশোনা করতে বেশি টাকা পয়সা লাগেনা একরকম অজানাই ছিলো আমার। সরকারি ঘর পেয়েছি। ঘরের নির্মান কাজ চলছে।’ মা রেহেনা বেগম আবেগাপ্লুত কন্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলের পাশে ইউএনও স্যার এভাবে দাড়াবেন, আমি স্বপ্নেও ভাবি নাই। আমার ছেলের উসিলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেলাম। এখন থেকে ছেলের পড়াশোনাও আর বন্ধ হবে না।’ শিক্ষার্থী মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ রাজু সাথে দেখা হয় তার স্কুলে। নতুন পরিবেশে স্কুল জীবনে ফিরে সে খুব খুশি। কথা হয় তার সাথে। অভাবের মধ্যদিয়ে অনিশ্চিত জীবনের কথায় সে জানায়, ‘আমার পড়াশোনা করতে ভালো লাগে। কাজ করতে আমার খুব কষ্ট হয়। পরিবারের অভাবের কারণে পড়ালেখা করতে পারিনি। এখন নতুন করে পড়াশোনা শুরু করেছি। স্কুলের নতুন পোশাক, সহপাঠি ও নতুন স্যারদের পেয়ে আমার ভালো লাগছে। সবাই আমাকে অনেক আদর করেছে।’অনাথ আশ্রম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবিতা ত্রিপুরা বলেন, ‘ঝরে পড়া শিক্ষার্থী রাজু‘কে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি করা হয়েছে। ইউএনও মহোদয় তাকে বিশেষ পরিচর্যার মাধ্যমে পাঠদান করতে নির্দেশনা দিয়েছেন।’