[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে যারা কল্যাণের চিন্তা করেন, ভাবেন, গবেষণা করেন তারাও আস্থার সংকটে পড়বেন

রাঙ্গামাটিতে দীপংকর তালুকদারের বিকল্প চিন্তার সময় এখনো হয়নি, প্রয়োজন রাজনৈতিক শুদ্ধাচার

৪২১

॥ মিলটন বড়ুয়া ॥
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশের ন্যায় তিন পার্বত্য জেলাতেও আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যক্রমের হিসাব নিকাশ চলছে কড়ায় গন্ডায়। জেলা থেকে শুরু করে একেবারে ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও তার বাইরে নেই। তবে দাবিয়ে রাখার ক্ষোভে কোন কোন নেতার বিরোধ নেতৃত্ব পালাবদলের স্বপ্নে সৃষ্ট আস্থার সংকটে কিছু মেঘ জমেছে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্বেও। তাই আচারে প্রচারে কিছু নেতৃত্ব চায় সংসদ নির্বাচনে রাঙ্গামাটিতে এবার বদল হোক পুরাতনের। তবে জেলা উপজেলার অধিকাংশ নেতাকর্মীর জবাব দীপংকর তালুকদারের বিকল্প চিন্তার সময় এখনো হয়নি।

পাহাড়ের রাজনীতি ও রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে ভাবেন এমন বিজ্ঞ অনেকেই বলছেন, দেশের চুষট্টি জেলার মধ্যে পার্বত্য তিন জেলা একেবারেই আলাদা। পার্বত্য চুক্তির পর বিভিন্ন বিষয়ে এই চিত্র দ্রুত পাল্টেও যায়। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তির স্বাক্ষরদাতা প্রতিষ্ঠান পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বস্থানীয়রাও আওয়ামীলীগের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনসংহতি সমিতি আওয়ামীলীগকে ছাড় দেয় বলে দাবি করেন। তাই অতীত ঘাটলে দেখা যায় রাঙ্গামাটি আসনকে নিয়ে দীপংকর তালুকদারকে তেমন বেগ পেতে হয়নি। পরে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন দীর্ঘসুত্রিতা এবং টানাপড়েন নিয়ে একে অপরের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়লে রাজনৈতিক সম্পর্কে চির ধরে। চির ধরা সম্পর্কের ফাঁকে সুবিধাবাদী, লুটেরা, উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতাবাদ এসবকে পূঁজি করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও জায়গা করে নেয় অন্যান্য সহ কিছু নব্য নেতা। এই চারের কাজ হলো সার্বিক শান্তিকে টলমল করার চেষ্টা আর নিজেদের হীনস্বার্থের জায়গা করে নেয়া। এরই মধ্যে ক্ষমতা ও নেতৃত্বে বসার রাজনীতির চক্রে পিষ্ট অনেকেই। তাই জাতীয় এবং আঞ্চলিক দলের মধ্যে অংকের ন্যায় ভাগে ভাগে বিয়োগ আর যোগে যোগে গুনের মত। এসবের অনেক চিত্রের কিছু কিছু চিত্র ছিল ডান হাতে ঢিল ছুঁড়ে দিয়ে পরক্ষণে বাম হাতে শান্তির প্লেকার্ডের যোগান। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশেষ করে রাঙ্গামাটি জেলার এইসব ভয়াবহ চিত্রগুলো অতীত থেকেই রাজনৈতিক কৌশলে সামাল দিয়েছেন আওয়ামীলীগের সভাপতি বর্তমান সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি। তার একটি হলো ২০১২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরে রাঙ্গামাটি কলেজে ছাত্রদের মারামারিকে কেন্দ্র করে জেলা শহরে সৃষ্ট সাম্প্রদায়িকতা।

আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জনসংহতি সমিতি, কমিউনিস্ট পার্টি, জাতীয় পার্টি, শিক্ষক এবং সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞ সমর্থক ও ভক্তজনরাও বলেছেন, নির্বাচনে প্রত্যেক দল অংশ গ্রহন করবে এটা স্বাভাবিক। তবে সুবিধাবাদী, লুটেরা, সাম্প্রদায়িকতাবাদ, নব্য নেতাগুলোকে চিহ্নিত করতে নেতৃত্বের চিন্তা হতে হবে রক্ষণশীল, কেননা পার্বত্য চট্টগ্রামে সবসময় যে ভীতিটা কাজ করে সেই ভীতিগুলোকে কাটাতে হবে। স্পীকারের সামনে টানা বক্তব্য দিলেই যে নেতৃত্বে বিচক্ষণতা অর্জিত হয়েছে তার কি নিশ্চয়তা রয়েছে। তবে একক আদিপত্যও নয়, ভালো নেতা-নেতৃত্ব সৃষ্টিও জরুরী। আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠনের দু-একজন নেতৃত্ব ক্ষমতার চেয়ারে বসে তাদের অপকর্মগুলোর কারনে থানা-কোর্ট গড়ালে স্বভাবতই দলের মূল নেতৃত্বের ঘারেই পড়ে। ভালো-মন্দের অতীতকে ভাবলে দীপংকর তালুকদারের বিপরীতে রাঙ্গামাটি আসনে আস্থাভাজন নেতৃত্ব এখনো সংকট রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

কিছু নেতার দ্বারা আস্থার সংকট সৃষ্টিকে কেন্দ্র করে যে কান্ড ঘটানোর চেষ্টা তা সার্বিকভাবে মোটেই সুখকর নয় বলে জানিয়েছেন, বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি প্রসন্ন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা। সম্প্রতি বান্দরবানস্থ তাঁর বাসভবনে গেলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রাঙ্গামাটি আসনে সংসদ প্রার্থীর পালাবদলের চেষ্টা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, দীপংকর তালুকদারে বিপরীত চিন্তা শুধু রাজনৈতিক সংকটই নয় বরং সার্বিকভাবেই উন্নয়নেরও নানান সংকট সৃষ্টি হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে যারা কল্যাণের চিন্তার করেন ভাবেন, গবেষনা করেন তারাও আস্থার সংকটে পড়বেন।

জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে, রাজনীতিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে দীপংকর তালুকদারে অবদান অস্বীকার করার সুযোগ নেই। এখানে প্রত্যেক জাতিগোষ্ঠীর আস্থাভাজন তিনি। তাঁর নেতৃত্ব প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ সুফল ভোগ করছেন। এখনো যেখানে মানুষ অসহায় সেখানেই সহযোগীতার হাত বাড়াচ্ছেন। দলীয়ভাবেও দশ উপজেলার কার্যক্রম যথেষ্ট মজবুত। তাই জনগনের কল্যানে আওয়ামীলীগে তাঁর বিকল্প এখনো কেউ নেই। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর কলাকৌশুলিরাও সেটি যথেষ্ট অনুধাবন করেন।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া বলছেন, অতীতে যারা দলকে আগলে রেখেছিলেন তাঁদের দ্বারা অর্পিত দায়িত্ব দীপংকর তালুকদার যথাসাধ্য রাজনৈতিক মেধা ও প্রজ্ঞায় গুনাক্ষরে পালন করেছিলেন বলে আজকে অন্যান্যরা সহ অনেক নেতাই তার ফল ভোগ করেছেন ও করছেন। দলে মতানৈক্য থাকতেই পারে তাঁরও ভুল থাকতে পারে। অনেক নেতাও সংসদে যেতে প্রত্যাশা করতেই পারে কিন্তু সে সময় এখনো আসেনি।

অপর দিকে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাতব্বর বলেন, অতীতেও অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে কিন্তু কাজ হয়নি। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদারের বলিষ্ট নেতৃত্ব এখানকার জনগন পূর্ণ সমর্থন করে। তাদের বলিষ্ট ভুমিকার কারনে তাঁর রাজনৈতিক কার্যক্রম এখন আরো শক্তিশালী।

আবার গনমাধ্যমের অনেকেই বলছেন, রাঙ্গামাটি আসনে দীপংকর তালুকদারের বিকল্প চিন্তা আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে তৃণমূলে আস্থার সংকট সৃষ্টি হতে পারে। পার্বত্য চুক্তির পর সার্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় গনমাধ্যমের কাজেও দোদুল্যমান সৃষ্টির একটি হলো কপিপেস্ট সাংবাদিকতা। এই কপিপেস্ট সাংবাদিকতা নির্ভর কিছু গনমাধ্যকর্মী রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের অনেকের ছত্রছায়ায় থেকে দালালিপনা, চাকরি-বদলী ও ব্যবসা বাণিজ্যে নানান সুবিধার খপ্পরে থাকে। ফলে সাম্যের চিন্তা করেন এমন গনমাধ্যকর্মীদের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা ও প্রশাসনে দুরত্ব সৃষ্টি থাকে। কপিপেস্ট সাংবাদিকতা নির্ভর গনমাধ্যমকর্মীদের বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনের সজাগ থাকা দরকার।

আবার আওয়ামীলগের অনেকেই মনে করেন, অতীতে বেশ কিছু নেতা নিহত হয়েছেন অপহরণ ঘটনার স্বীকার হয়েছিলেন এসবের বিচারিক ব্যবস্থার কি অবস্থা পার্বত্যবাসীকে পরিস্কার করা দরকার। পরিবর্তন উন্নয়নের অংশ, কিন্তু কিছু কিছু পরিবর্তনের উদ্যোগ ভালো অতীতকেই স্মরণ করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কেউ যদি মনে করেন দীপংকর তালুকদারের বিকল্প দরকার সেটি হবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, চলমান শান্তি ও উন্নয়নে সংকট সৃষ্টি। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী আওয়ামীলীগের তৃণমূলে নেতৃত্বের প্রানচঞ্চলতাকে সামাল দিয়ে যাচ্ছেন। অতীতের অন্যান্য চেয়ারম্যানদের চেয়ে নেতাকর্মীদের একীভুত রাখার দায়িত্বে তিনি এগিয়ে। তাই বলিষ্ট নেতৃত্বের অধিকারী দীপংকর তালুকদারের বিকল্প চিন্তা শিষ্টাচার অমান্যকারী রাজনীতিকদের প্রশ্রয় দেয়া ছাড়া কিছুই নয়। নেতৃত্বে বিরোধ, বিভাজন, ক্ষোভ, আস্থার সংকট ও আড়ালে লুকিয়ে থাকা কিছু কিছু মেঘ রয়েছে, কিন্তু সেটির জন্যতো প্রয়োজন রাজনৈতিক শুদ্ধাচার।