[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে বিজিবির জব্দ গরু ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা সংঘর্ষে আহত ৪বান্দরবানের থানচিতে পাহাড় ধসে গুরুতর আহত ১রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলায় বন্যহাতির তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড বসতবাড়িকাপ্তাই উপজেলায় পাহাড় ধ্বসের ঝুঁকিতে এক হাজার পরিবারদীঘিনালায় আশ্রয় কেন্দ্রে বিএনপি’র ত্রান সহায়তাপবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপনে রাজস্থলীতে প্রশাসনের প্রস্তুতিমূলক সভাবান্দরবানের লামায় বৈরী পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণাকাপ্তাই লেকের দূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান: সনাক নেতৃবৃন্দদীঘিনালায় জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ উপলক্ষে আলোচনাশহীদ জিয়াউর রহমান দেশকে তলাবিহীন জুড়ি থেকে উত্তরণ করেছিল- মেয়র শাহাদাত
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

৪০ হাজার টাকার পলু ঘর পেতে ২২ হাজার টাকা ঘুষ

বান্দরবানের লামায় পলু ঘর নির্মাণ প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

১৬২

লামা-আলীকদম প্রতিনিধি

বান্দরবানের লামায় বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের ‘রেশম চাষ সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে পার্বত্য জেলা সমূহের দারিদ্র বিমোচন শীর্ষক প্রকল্প’ এর আওতায় পলু পালন ঘর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পের তালিকাভুক্ত ১৫০ জন চাষী পলু পালন ঘর নির্মাণে ৪০ হাজার করে মোট ৬০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎতের অভিযোগ উঠেছে লামা উপজেলা অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং মাঠকর্মীদের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ রয়েছে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড লামা উপজেলা ম্যানেজার ফেরদাউসুর রহমান তার অফিস সহকারী ও মাঠকর্মীদের সমন্বয়ে ভুয়া, রোহিঙ্গা ও পলু পালনে জড়িত নয় এমন লোকজনকে চাষী দেখিয়ে সরকারি এই অর্থ তসরুপ করেছেন। এমনকি মাঠকর্মীর নামও রয়েছে তালিকায়। নামে-বেনামে চাষীদের রেশম চাষ সম্প্রসারণে পলুঘর দেয়ার কথা বলে জনপ্রতি ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ বাণিজ্য সহ নানান যোগসাজশে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

রেশম চাষ সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে পার্বত্য জেলা সমূহের দারিদ্র বিমোচন শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ সিরাজুর রহমান বলেছেন, শীঘ্রই লামা উপজেলার প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করা হবে। অনিয়মের কোন তথ্য পেলে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। যে সব চাষীরা পলু ঘর পেয়েছে তাদের তুঁত গাছের চারা দেয়া হয়েছে। তিন বছর প্রতিটি গাছের পরিচর্যার জন্য ১৬ টাকা করে দেয়া হবে।

প্রকল্প পরিচালকের সাথে আলাপকালে জানা যায়, লামা উপজেলায় এই প্রকল্পের সুবিধাভোগী ১৫০ জন। সুবিধাভোগীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার পরে ১৫০ জন পলু চাষীদের ঘর নির্মাণে জনপ্রতি ৪০ হাজার টাকা করে মোট ৬০ লক্ষ টাকা দেয়া হয়েছে। জনবল সংকটের কারণে সঠিকভাবে মনিটরিং করা যাচ্ছেনা।

সরজমিনে প্রকল্প এলাকা ঘুরে লামা রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্রের অস্থায়ী নিয়োগ প্রাপ্ত মাঠকর্মীদের বিরুদ্ধে পাওয়া যায় অভিযোগের পাহাড়। সংশ্লিষ্ট এলাকায় পলু পালন ঘর নির্মাণে আর্থিক সহায়তা প্রদানের কথা বলে অফিস সহায়ক এর সমন্বয়ে জনপ্রতি ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাঠ কর্মী নূরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। শিলেরতুয়া এলাকার রেশম চাষী ছেনুয়ারা বেগম বলেন, মাঠকর্মী নূরুল ইসলামকে ২০ হাজার টাকা ফায়দা না দেওয়ায় চাষী হয়েও তিনি বরাদ্দের প্রণোদনা পায়নি। একইগ্রামের মনোয়ারা বেগম নামে আরেক বৃদ্ধার বরাদ্দের টাকা মাঠকর্মীর নুরুল ইসলামের বোন হুরে জান্নাতকে দিয়ে দেয়। নাম প্রকাশ না করা সত্ত্বে শিলেরতুয়া এলাকার এক চাষী বলেন, ৪০ হাজার টাকার পলু ঘর পেতে তার কাছ থেকে সাড়ে ২২ হাজার টাকা ঘুষ নেয়া হয়েছে।

একইভাবে প্রকৃত চাষীদের বাদ দিয়ে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে স্বজনপ্রীতি করে এক পরিবারের ২/৩ জন সদস্যকেও প্রকল্পের তালিকাভুক্ত করেছেন মাঠ কর্মী মোজাম্মেল হক। যাদের অনেকই বরাদ্দ অনুযায়ী ৪০ হাজার টাকা করে পেলেও সরজমিনে পলু ঘরের কোন অস্তিত্ব মিলেনি। রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড মুরুংঝিরি এলাকায় চাষীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৩ থেকে ৫ হাজার করে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই মাঠকর্মীর বিরুদ্ধে।

পলু ঘর কেন তৈরি করেননি জানতে চাইলে চাষীরা জানান, পলু ঘর বাবদ পাওয়া ৪০ হাজার টাকা পেতে মাঠকর্মীদের ২০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। বাকি টাকা দিয়ে কিভাবে পলু ঘর নির্মাণ করবো ? নিজেদের ঘরের অংশ বিশেষ মেরামত করে দেখালেও হবে বলে জানিয়েছে অফিসের লোকজন। তাই গোয়ালঘর এবং রান্নাঘরকে সাময়িক পলু ঘর হিসেবে দেখিয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন আমরা রেশম চাষী না, পলু ঘর নির্মাণ করে কি করব !

লামা উপজেলা ম্যানেজার ফেরদাউসুর রহমান সাংবাদিককে বলেন, কিছুটা অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। তবে সরকারি প্রকল্পের টাকা উপকারভোগীদের না দিলে ফেরত চলে যাবে, তাই কোনমতে বিতরণ সম্পন্ন করা হয়েছে। এই বিষয়ে নিউজ না করতে প্রতিবেদককে ম্যানেজের চেষ্টাও করেন।