অবশেষে দেড় মাস পর ভেসে উঠল রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
অবশেষে দেড় মাস পানিতে ডুবে থাকার ভেসে উঠল রাঙামাটি সিম্বল খ্যাত ঝুলন্ত সেতু। গত ৩ সেপ্টেম্বর ভারি বর্ষণে এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধির কারণে ঝুলন্ত সেতুটির পাটাতন ডুবে যায়। এতে সেতুতে পর্যটকদের চলাচলা বন্ধ করে দেয় পর্যটন কর্তৃপক্ষ। আজ বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে সেতুটি ভেসে উঠে বলে নিশ্চিত করেছে পর্যটন কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, সেতুটি উপর দিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পর্যটকরা চলাচল করছেন। তবে সেতুটির পাটাতনের বিভিন্ন স্থানে কিছু কিছু পানি রয়েছে। পর্যটন সংশিষ্টরা জানান, সেতুর পাটাতনের পানি আগামীকাল পুরোপুরি শুকিয়ে যাবে। এর পর পর্যটকদের জন্য সেতুতে উঠা উন্মুক্ত করে দেয়া হবে ।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মোঃ আরিফ জানান, সেতুটি পুরানো হয়ে গেছে। যদি সেতুটি নতুন ভাবে আরো উচুঁতে তৈরি করা হয়,তাহলে পর্যটকরা ঘুরে আনন্দ পাবে। তিনি আরো জানান, সেতুর তুলনায় পানি অনেক বেশি,ফলে পর্যটকরা এসে হতাশা হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। রাঙ্গামাটিতে পর্যটকরা এসে ঝুলন্ত ব্রীজ দেখার জন্য।
বগুড়া থেকে আসা আরেক পর্যটক মেহেদী হাসান জানান, এখন কাপ্তাই হ্রদে পানি ভরপুর। একেবারে ব্রীজের সাথে লাগানো। পানি শুখিয়ে গেলে ব্রীজ ঝুলে এতে তাঁর ভালো লাগে।
ট্যুরিষ্ট বোট মালিক সমিতির সহ- সভাপতি রমজান আলী জানান, কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধির কারণে দীর্ঘ দেড় মাস ঝুলন্ত সেতু দিয়ে চলাচল বন্ধ ছিল। এতে তারা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি আরো জানান, আগামীকাল শুক্রবার সেতুটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় হবে।
রাঙামাটি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সে অবস্থিত আকর্ষণীয় ঝুলন্ত সেতুটি প্রতি বছর বর্ষায় কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়লে তলিয়ে যায়। এতে সেতটিু বন্ধ থাকার ৮-১০ লাখ টাকা রাজস্ব হারায় সরকার।
তিনি জানান, এ বছরও কাপ্তাই হ্রদের পানিতে সেতুটি টানা ৪৫ দিন ডুবে থাকায় থাকায় ৮-১০ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। প্রতি বর্ষায় সেতুটি পানিতে ডুবে থাকাকালে পর্যটকদের আনাগোনা বন্ধ থাকে। সেতুটি সচল থাকলে সেখানে পর্যটক প্রবেশে দৈনিক ১০-১৫ হাজার টাকা রাজস্ব আয় আসে।
উল্লেখ্য, ১৯৮০ সালে সরকার রাঙামাটি পার্বত্য জেলাকে পর্যটন এলাকা ঘোষণা করে। ১৯৮৬ সালে জেলা সদরে সরকারি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্স স্থাপন করা হলে সেখানে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে বিচ্ছিন্ন হওয়া দুটি পাহাড়ের সংযোগ স্থাপনে ৩৩৫ ফুট দৈর্ঘ্যের মনোরম ঝুলন্ত সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এরপর সেতুটি দেশি বিদেশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। বর্তমানে এটি দেশে-বিদেশে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। এ ঝুলন্ত সেতুর পূর্বদিকে কাপ্তাই হ্রদের স্বচ্ছ জলরাশিসহ রয়েছে ছোটবড় নৈসর্গিক সবুজ পাহাড়মালা।