খাগড়াছড়িতে হামরনাই বন্থার উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের বই বিতরণ ও সংবর্ধনা
॥ দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি ॥
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার হামরনাই বন্থার উদ্যোগে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৩অক্টোবর) দুপুরে জেলা সদরস্থ ঠাকুরছড়া জাগরণ পাঠাগার ভবন হলরুমে এ আয়োজন করা হয়।
এ উপলক্ষে আলোচনা সভায় হামরনাই বন্থার সভাপতি দেবাশীষ রোয়াজার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য খোকনেশ্বর ত্রিপুরা।
এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন হামরনাই বন্থার সহ-সভাপতি জগৎময় ত্রিপুরা রনি। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন, এ সংগঠন ২০০৬ সাল থেকে কার্যক্রম শুরু করলেও ২০১১সালে ‘হামরনাই বন্থা’ নামে সংগঠনের আত্মপ্রকাশ হয়। সংগঠনটি শুরু থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করে অধ্যাবদি শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চাসহ রাষ্ট্রীয় উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। আগামীতেও এর ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে এলাকায় প্রতিটি নাগরিককে শিক্ষিত ও আলোকিত সমাজ গঠন করায় মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
অনুষ্ঠানে সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিকা রোয়াজার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্ঞান দত্ত ত্রিপুরা, বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদ, কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক খগেন্দ্র কিশোর ত্রিপুরা, চম্পাঘাট শিশু সদনের সভাপতি কনক বরন ত্রিপুরা, বাংলাদেশ ত্রিপুরা যুব কল্যাণ সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নবলেশ্বর ত্রিপুরা লায়ন, গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও স্থানীয় মহিলা কার্বারী গৌরি মালা ত্রিপুরা, ঠাকুরছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক পূর্ণ জয় ত্রিপুরা।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন স্থানীয় এলাকার কার্বারী অরুন বিকাশ ত্রিপুরা, হামরনাই বন্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি দিগন্ত প্রসাদ ত্রিপুরা, ঠাকুরছড়া জাগরণ পাঠাগারের সভাপতি ও কুজেন্দ্র মল্লিকা মর্ডাণ কলেজের প্রভাষক প্রজ্জ্বল ময় রোয়াজা, খাগড়াছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য চন্দনা ত্রিপুরা, ইউপি সদস্য বিজয় রোয়াজা, গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মিলি ত্রিপুরা, গোলাবাড়ি ইউপি সদস্য রাম কুমার ত্রিপুরা প্রমুখ
অনুষ্ঠানে অভিভাবকদের মধ্যে ফিরোজ জ্যোতি ত্রিপুরা এবং কৃতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে খাগড়াছড়ি ইউনিয়নের ৩নং প্রকল্প পাড়ার সন্তান পল্টন ত্রিপুরা বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খোকনেশ্বর ত্রিপুরা বলেন, আগেকার দিনে কলেজে ভর্তি হতে অনেক ভোগান্তিতে পড়ে। কিন্তু এখন সহজে অনলাইনে ভর্তির আবেদন ফরম পূরণ করা যায় এবং ফলাফলও অনলাইনে পাওয়া যায়। ডিজিটাল বাংলাদেশের কারণে এসবের সম্ভব হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বর্তমান যুগ প্রতিযোগিতার যুগ। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। পাশাপাশি এ যুগে টিকতে হলে তথ্য প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রতিও জোর দিতে হবে। বর্তমান সরকার এখন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য আগে থেকে স্মার্ট ছাত্র হিসেবে গড়ে ওঠে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশেষ অতিথিরা বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। জাতির উন্নয়ন করতে গেলে আগে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। ছাত্রজীবনে লক্ষ্য এবং স্বপ্ন থাকতে হবে। লক্ষ্য পূরণের জন্য কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যাবসায় থাকা দরকার। আগে শুধু ছেলেদের পড়ানো হতো, কিন্তু বর্তমানে ছেলেদের তুলনায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে মেয়েরাই এগিয়ে গেছে। বর্তমানে ছেলে-মেয়ে উভয়ের শিক্ষা গ্রহণ জরুরি। কেননা দেশ, সমাজ ও জাতির উন্নয়নে নারী-পুরুষ সকলের গুরুত্ব অপরিসীম।
আলোচনা সভা শেষে সংগঠনের কর্ম এলাকার আওতাধীন ০৩জন জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের ক্রেস্ট ও আর্থিক ভাবে অসচ্ছল ও মেধাবী ৩৭জন শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে পাঠ্যবই তুলে দেন অতিথিরা।