[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় গার্ল গাইডস এসোসিয়েশনের ৫দিনব্যাপি বিজ্ঞপাখি মৌলিক প্রশিক্ষণ সম্পন্নখাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বাড়ির সদস্যদের অজ্ঞান করে দূর্ধষ চুরিগুণগত শিক্ষা জাতিগত ভেদাভেদ ভুলিয়ে দিতে পারবে: রাঙ্গামাটিতে জলখেলি অনুষ্ঠানে সুপ্রদীপনৃ-গোষ্ঠীর আগে ক্ষুদ্র শব্দটি ব্যবহার করতে চাই না: জলকেলীতে উপদেষ্টা সুপ্রদীপবান্দরবানের আলীকদমে মার্মা সম্প্রদায়ের মাহাঃ সাংগ্রাই পোয়েঃ-২০২৫ উৎসব পালনপুরোনো দিনের গ্লানি মুছে যাক সাংগ্রাইয়ের মৈত্রীময় জলেবান্দরবানের থানচিতে খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের গুড ফ্রাইডের উপহার দিলেন সেনাবাহিনীদীঘিনালায় রাতের আধাঁরে পাহাড় কাটার অভিযোগে ২লাখ টাকা জরিমানাখাগড়াছড়ির রামগড়ে গরু ঘাঁস খাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ৮অক্সিজেনের অভাবে বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ মাস বয়সের শিশুর মৃত্যু
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

মাটিরাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনকে ২য় শ্রেণিতে উন্নীত করার দাবি

১২৪

॥ মোঃ আবুল হাসেম, মাটিরাঙ্গা ॥

পাহাড়ের আঁকাবাঁকা সরু সড়কের পাশে সারি সারি দোকান। দিন যত বাড়ছে মাটিরাঙ্গায় ততই বাড়ছে দোকান ও বাড়ি ঘরের সংখ্যা। কিন্তু সে তুলনায় বাড়েনি ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা। মাঝে মাঝে মাটিরাঙ্গার বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। মুহূর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে চারপাশের দোকানে। সক্ষমতা ও দূরত্বের কারণে সময়মতো আগুন নেভাতে ব্যার্থ হয় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। ততক্ষণে মালামাল পুড়ে ক্ষতি হয় কোটি টাকা। তাই মাটিরাঙ্গা উপজেলার ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কে ২য় শ্রেণিতে উন্নীত করা অথবা অত্র উপজেলায় আরও একটি ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা জরুরী হয়ে পড়েছে।

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কে আরো উন্নত করার দাবি জানিয়েছে স্থানীয় জনসাধারণ সহ জনপ্রতিনিধিরা। দাবিটি দীর্ঘ দিনের হলেও কোন উদ্যেগ নেয়া হয় নি। ফলে এ উপজেলায় বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনার পাশাপাশি অগ্নিকান্ডের শঙ্কা বাড়ছে। তাছাড়া আয়তন ও জনসংখ্যা অনুপাতে দুর্যোগ মোকাবেলায় মাটিরাঙ্গা উপজেলা ফায়ার সার্ভিস কে ২য় শ্রেণি তথা ‘বি’ ক্যাটাগরি তে উন্নীত করা এখন সময়ের দাবী। বর্তমানে ১৩জন জনবলসহ ২০১১ সালে স্থাপিত একটি ‘সি’ শ্রেণির ফায়ার সার্ভিস থাকলেও আয়তন ও জনসংখ্যা অনুপাতে এটি প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তাছাড়া জরুরী দূর্যোগ মোকাবেলায় এক স্টেশনের জনবল ও গাড়ি দিয়ে অন্য স্টেশন কাজ চালাতে হচ্ছে।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারী মাটিরাঙ্গা থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার দুরে আমতলী ইউনিয়নের রামশিড়া মসজিদ মার্কেটে আগুন লাগে। মাটিরাঙ্গা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ১টি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই ততক্ষণে ১১টি দোকান পুড়ে ছাঁই হয়ে যায়। ক্ষতি হয় প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। যা আজও সেটি নির্মাণ করা সম্ভব হয় নি। এছাড়াও মাটিরাঙ্গা ও গুইমারার দুরবর্তী এলকাসমূহে আগুন লাগলে ওখানে পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ অতিক্রম করে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পৌঁছার আগেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় পাহাড়ের বসবাসরত স্বল্প আয়ের মানুষের স্বপ্ন।

মাটিরাঙ্গার ফায়ার সার্ভিস টি মর্যাদায় তৃতীয় শ্রেণির হলেও মাটিরাঙ্গা ও গুইমারা দুটি উপজেলার আগুন নেভানোর দায়িত্ব পালন করতে হয় এই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনকে। একটি মাত্র পানিবাহী গাড়ি কোনো উপজেলায় আগুন নেভানোর কাজে গেলে অন্য উপজেলা সম্পূর্ণ অরক্ষিত থাকে। যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে দুর্ঘটনা কবলিতদের উদ্ধারের কোন সরঞ্জাম মাটিরাঙ্গা ফায়ার স্টেশনের কাছে নেই। দুর্ঘটনাস্থল থেকে মুমূর্ষু রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার জন্যও নেই কোনো অ্যাম্বুলেন্স।

উপজেলা সদরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাট-বাজারের দোকানপাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,বসতবাড়ি ও গুরুত্বপুর্ন স্থাপনাসমুহ আগুনের চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। মাটিরাঙ্গা উপজেলা ফায়ার স্টেশনকে পর্যাপ্ত লোকবল ও অগ্নিনির্বাপণের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সংযোজন করে আধুনিক ভাবে গড়ে তোলা হলে প্রতিবছর ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে উপজেলা বাসীকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

মাটিরাঙ্গা পৌরসদরে অবস্থিত একটি বড় বাজার কিন্তুু আগুন লাগলে তা নেভানোর জন্য ধলিয়া খালের পানিই একমাত্র ভরসা তাই ধলিয়া লেক থেকে পানি উত্তোলনের লক্ষ্যে একটি সিড়ি নির্মাণ করতে মাটিরাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃক মাসিক আইন শৃঙ্খলা সভায় উপস্থাপনা করা হলে সভায় সিঁড়ি নির্মানের করার প্রস্তাব টি গৃহিত হয়।

মাটিরাঙ্গা বাজার ব্যাবসায়ী পরিচালনা পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক মোঃ কামরুল হাসান বলেন, মাটিরাঙ্গা বাজার ব্যাবসায়ীদের পক্ষ থেকে আরও একটি ফায়ার সার্ভিস স্থাপন সহ বর্তমান ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি ২য় শ্রেণিতে উন্নীত করার জোর দাবি জানান তিনি।

মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ৬নং কাউন্সিলর মোঃ সোহাগ বলেন, মাটিরাঙ্গায় প্রায় ২হাজার ৫শত দোকান রয়েছে। যদি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে তাহলে একটিমাত্র ফায়ার সার্ভিস দিয়ে আগুন নেভানো সম্ভব হবে না। তাই মাটিরাঙ্গায় আরো একটি ফায়ার সার্ভিস স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় এবং জেলা প্রশাসকের প্রতি দাবি জানান তিনি।

মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মোঃ সামছুল হক বলেন, মাটিরাঙ্গা সর্ববৃহৎ উপজেলা একটিমাত্র ফায়ার স্টেশন দিয়ে এত বড় উপজেলায় দূর্যোগ মোকাবিলা করা কখনই সম্ভব নয়। তাই অত্র উপজেলায় স্থাপিত ফায়ার সার্ভিসটি ২য় শ্রেণিতে উন্নীত করা একই সাথে বৃহৎ স্বার্থে আরও একটি ফায়ার স্টেশনের দাবি জানান তিনি।

দুই উপজেলার জন্য একটি মাত্র ফায়ার সার্ভিস স্টেশন তাও আবার তৃতীয় শ্রেণির এটা খুবই দুঃখজনক মন্তব্য করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, মাটিরাঙ্গা উপজেলা থেকে তানাক্কা পাড়া প্রায় ৪৬ কিলোমিটার। এত বড় উপজেলায় তৃতীয় শ্রেণির একটি মাত্র ফায়ার সার্ভিস স্টেশন দিয়ে পুরো উপজেলা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তবলছড়ি একটি পুলিশ ফাঁড়ি সহ আরেকটি জনবহুল এলাকা তাই ওই এলাকায় একটি ফায়ার সার্ভিস স্থাপন করলে অগ্নিকান্ডের ক্ষয় ক্ষতি থেকে জনগন রক্ষা পেতে পারে। তাছাড়া মাটিরাঙ্গায় আরো একটি ফায়ার স্টেশন স্থাপন করতে আমরা ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসকের নিকট প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি।