[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

“মুক্তিযুদ্ধে অবিভক্ত বৃহত্তর জেলা পার্বত্য চট্টগ্রাম- (০৭)”

১৭১

॥ মোঃ সিরাজুল হক (সিরাজ) ॥

বাঙালী জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ এক অনন্য গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। ১৯৭১ সালের ০১ মার্চ যখন বাঙালীর রক্তে ঢাকার রাজপথ রঞ্জিত হয়েছিল, এরপরই অবিভক্ত বৃহত্তর জেলা পার্বত্য চট্টগ্রামের ০৩টি মহকুমা তথা রাঙ্গামাটি, রামগড় ও বান্দরবানের রাজপথ মুখরিত হয়েছিল, প্রতিবাদী ছাত্র-জনতার মিছিল আর শ্লোগানে। ১৯৭১ এর ০৭ মার্চ বাঙালী জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষনের পর সারাদেশের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষেরাও সেদিন মহান মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি নিতে থাকেন। অতঃপর ১৯৭১ এর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার পর পাহাড়ের মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সেই ভয়ানক কঠিন সময়ে পাহাড়ের এক অদম্য বীরসেনা মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অবদান রাখেন, যার নাম বীর মুক্তিযোদ্ধা ফিলিপ বিজয় ত্রিপুরা। পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি সদরের শালবন এলাকায় তাঁর স্থায়ী নিবাস। স্ত্রী এক ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে কোন রকমে চলছে তাঁর জীবন-জীবিকার সংগ্রাম। ভারতের হরিনা ক্যাম্প থেকে দেশে এসে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ির ডাইনছড়িতে প্রথম যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে তিনি বীরত্বের প্রমাণ দিয়েছিলেন। এছাড়া আরো বেশ কয়েকটি সম্মুখযুদ্ধে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার পরও তাঁর যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি বলে জানিয়েছেন, তাঁর সহযোদ্ধা দুই বীর মুক্তিযোদ্ধা দিল মোহাম্মদ ও রন বিক্রম ত্রিপুরা।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংস্থা প্রতি বছর বিভিন্ন দিবসে সংবর্ধনা দিয়ে থাকলেও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি বিষয়ক জাতীয় কোয়ালিশনের পক্ষ থেকে ২০১১ সালে তাঁকে বিশেষভাবে সংবর্ধিত করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে রাঙ্গামাটি সদরের শাহ্ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন তিনি। এ সময় মা-বাবাকে হারিয়ে চার ভাই বোনের সংসারে দিশেহারা হয়ে পড়েন-এ বীরসেনা। তৎকালীন রামগড় মহকুমায় তাঁর আপন জেঠা পুলিশ হাবিলদার (অবঃ) যোগেশ চন্দ্র ত্রিপুরা স্ব-পরিবারে স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন। অবশেষে এ অগ্নি তরুন ফিলিপ বিজয় ত্রিপুরা জেঠার বাড়ীতে গিয়ে আশ্রয় নেন। তারপর দেশের উত্তাল এক পরিস্থিতিতে মুক্তিপাগল মানুষ যখন মহান মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে শুরু হলো, তখন জেঠার পরিবারের সাথে অদম্য এ বীরসেনা ও সীমান্ত পাড়ী দিয়ে ভারতে চলে যান। অতঃপর ভারত থেকে ফিরে বেশ কয়েকটি সম্মুখ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন তিনি। একদিন মরণপন করে যিনি দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, তিনি এখন ভালো নেই, ভালো নেই তাঁর পরিবার। পিছু ছাড়ছে না তাঁর শারীরিক অসুস্থতা, অভাব-অনটনের মাঝে এ বীর সেনানীর দিন কাটছে আজ। জীর্ণশীর্ণ একটি ঘরে স্ব-পরিবারে কষ্ট আর বেদনায় এখন তাঁর বসবাস। জাতির এ শ্রেষ্ঠ সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফিলিপ বিজয় ত্রিপুরার কষ্টের শেষ হবে কবে-কে জানে।

১৯৭১ সালে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র সজ্জিত পাকবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে মহান স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বীরসেনারা। কিন্তু আজ তাদের খবর আমরা ক’জনই বা রেখেছি। এখন নতুন প্রজন্মের অনেকেই জানেনা যে, পাহাড়ের রনাঙ্গনের এক অনন্য বীরপুরুষ এ পার্বত্য চট্টগ্রামের বুকে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। যার বুকের রক্তে ভেজা আমাদের স্বাধীনতা, সবুজের বুকে লাল একটি পতাকা, এ স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র। যার নাম শুনলে বর্বর পাকসেনারা ভয়ে কেঁপে উঠতো, যিনি একাই দুশমন বাহিনীর মুখোমুখী দাঁড়াতে কখনো পিছপা হননি। তিনি বাংলা মায়ের এক অন্যতম বীর, অকুতোভয় শ্রেষ্ঠ সন্তান তরুন সেনা অফিসার শহীদ ক্যাপ্টেন আফতাবুল কাদের বীর উত্তম। লক্ষীপুর জেলায় রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট পিউরী গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। আট ভাইদের মধ্যে তিনি ছিলেন পঞ্চম। তাঁর বাবার নাম আব্দুল কাদের এবং মায়ের নাম রওশন আরা বেগম। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের দামামা বেঁজে উঠার আগে বাংলা মায়ের এ অগ্নি সন্তান শহীদ ক্যাপ্টেন আফতাবুল কাদের বীর উত্তম ছুটিতে ছিলেন। অতঃপর মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ছুটিতে থাকা দেশ প্রেমিক এ অদম্য বীরসেনা ১৯৭১ সালের ১১ এপ্রিল মহালছড়িস্থ মুক্তিবাহিনীর হেডকোয়ার্টারে এসে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগদান করেন। ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের সেই অগ্নিঝরা রক্তাক্ত দিনগুলোতে একটি বাহিনীর অধিনায়ক হিসাবে এ বীরসেনানীর সংগ্রামী ইতিহাস সত্যিই গৌরবোজ্জল। এ বাংলার ইতিহাসে এ মহান বীরসেনানী চির ভাস্কর হয়ে থাকবেন। ১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল বাংলা মায়ের এ দুরন্ত সাহসী সন্তান তাঁর বাহিনী নিয়ে খাগড়াছড়ি রেস্ট হাউজে অবস্থানরত এক প্লাটুন শত্রু বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। এ সম্মুখ যুদ্ধে বর্বর পাক-বাহিনীর কমান্ডীং অফিসারসহ ২০ জন শত্রুসেনা নিহত হয় এবং বাকী দুশমন সেনারা পালিয়ে যায়। এ যুদ্ধে কোন ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই এ অদম্য বীরসেনানী শহীদ ক্যাপ্টেন আফতাবুল কাদের বীর উত্তম তাঁর বাহিনী নিয়ে হেডকোয়াটারে ফিরে আসেন।

১৯৭১ সালের ২৭ এপ্রিল পাহাড়ের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক রক্তেভেজা শোকের দিন। বর্বর পাকসেনারা সেদিন মহালছড়ির দিকে অগ্রসর হয়। অতঃপর বিকেল তিন ঘটিকায় যুদ্ধ শুরু হল। আমাদের বীরসেনাদের সাথে এটি ছিল বর্বর পাকসেনাদের এক অসম যুদ্ধ। এক হাজার একশত মিজোবাহিনী নিয়ে হানাদার বাহিনীর তেরটি কোম্পানীর বর্বর সেনারা একসাথে মহালছড়িস্থ মুক্তিবাহিনীর হেড-কোয়ার্টার আক্রমন করে। সেদিন পাকসেনাদের অসীম শক্তির সাথে শুধুমাত্র দেশপ্রেমের অনন্ত এক আকর্ষনে অসীম সাহস আর মনোবলে বলিয়ান হয়ে বাংলার অদম্য বীর সূর্য্য সন্তানরা মরণপন যুদ্ধ করেছিলেন। সে এক ভয়াবহ-ভয়ানক কঠিন অসম যুদ্ধ। সেদিন একদিকে শত্রুবাহিনীর অসংখ্য অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র সহ ০৬টি মর্টার একসাথে গর্জে উঠে। আর অপরদিকে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হাতে ছিল থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল, এল.এম.জি এবং হেন্ড গ্রেনেড। তবুও দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানরা একটুও পিছু হটেনী, মরণপন করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। একদিকে মিজো বাহিনী আর অন্যদিকে বর্বর পাক-বাহিনীর আক্রমন। অত্যন্ত দক্ষতার সাথে মোকাবেলা করতে লাগলেন, বাংলার এক মহান বীর পুরুষ শহীদ ক্যাপ্টেন আফতাবুল কাদের বীর উত্তম।

দুরন্ত সাহসী এ অগ্নি তরুন তাঁর বাহিনী নিয়ে শত্রুসেনাদের পিছু হটিয়ে এগিয়ে যেতে লাগলেন। আমাদের এ মহান জাতীয় বীরের বিজয় যখন সন্নিকটে, তখন আবার নতুন করে চার ট্রাক পাকসেনা এসে নতুনরুপে মুক্তিবাহিনীর উপর আক্রমণ করে। মুহুর্তের মধ্যে যুদ্ধের গতি পাল্টে যায়। বর্বর পাকসেনারা এবার অধিক শক্তি নিয়ে এগিয়ে আসে এবং অকুতোভয় মুক্তিসেনাদের ঘিরে ফেলে। এ সময় বাংলা মায়ের এই অদম্য শ্রেষ্ঠ সন্তান, মহান বীর পুরুষ শহীদ ক্যাপ্টেন আফতাবুল কাদের বীর উত্তম সাথী যোদ্ধাদের বাঁচাতে, এক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ছুটে গিয়ে দুশমন বাহিনীর উপর অবিরাম গুলি বর্ষন করতে থাকে। যাতে করে মুক্তিসেনারা শত্রু বেষ্টনী থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। এতে বর্বর বাহিনী পিছু হটলেও আমাদের এ মহান বীরসেনানী একটুও পিছু হটেননি। এক পর্যায়ে বাম হাতে দুশমন বাহিনীর গুলি লাগার পরও এ মহান বীর পুরুষের যুদ্ধ থামেনি। তারপর এক হৃদয় বিদারক ইতিহাসের সূচনা হল। ভাগ্যের এক নিষ্ঠুর-নির্মম পরিহাস, বাংলা মায়ের এ অদম্য বীর সন্তানের বুলেট শেষ হয়ে যায়। অতঃপর পাকসেনাদের অবিরাম ফায়ারিং এর মধ্যে বাংকার ছেড়ে ছয়-সাতটা হেন্ড গ্রেনেড নিয়ে অশ্বগতিতে সম্মুখ-পানে এগিয়ে গেলেন তিনি। মৃত্যুর মুখোমুখী দাঁড়িয়ে একের পর এক চারটি হেন্ড গ্রেনেড নির্ভুলভাবে নিক্ষেপ করে, তিনি বর্বর বাহিনীর চারটি বাংকার সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেন। তারপর ——– পঞ্চম গ্রেনেড ছুঁড়ে দেয়ার ঠিক চুড়ান্ত মুহুর্তে শত্রুসেনার মেশিনগানের গুলিতে বাংলা মায়ের এ শ্রেষ্ঠ সন্তান, অদম্য মহান জাতীয় বীর পুরুষ, অগ্নি তরুন যুদ্ধরত অবস্থায় শাহাদাৎ বরণ করেন। জাতির এ অকুতোভয় শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ ক্যাপ্টেন আফতাবুল কাদের বীর উত্তমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক তাঁকে জান্নাত দান করুন- আমিন। এ মহান বীর উত্তম এর স্মৃতির প্রতি জানাই- বিনম্র শ্রদ্ধা আর অজশ্র লাল সালাম। স্বাধীনতার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সরকার বাংলা মায়ের এ মহান বীর সন্তানের স্বাধীনতা যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে তাঁকে মরনোত্তর বীর উত্তম উপাধীতে ভূষিত করে। তাঁর বীর উত্তম খেতাব প্রাপ্তীর গেজেট নং-২৯।

রাঙ্গামাটির উত্তাল রনাঙ্গনে একদিন সহযোদ্ধা ম্যাজিষ্ট্রেট খান আমির আলীর পরিচয় হয়, আমাদের এ অদম্য বীর সেনানীর সাথে। পরে শত্রুবাহিনীর সাথে এক সম্মুখ যুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা ম্যাজিষ্ট্রেট খান আমির আলী আহত হন। অতঃপর ক্যাপ্টেন আফতাবুল কাদের বীর উত্তম তাঁকে দেখতে যান। সেদিন দু’জনের মধ্যে অনেক কথা হয়েছিল। বিদায় বেলায় শহীদ ক্যাপ্টেন আফতাবুল কাদের বীর উত্তম, ঠিকানা বিহীন নীল খামের ভেতর ০১টি চিঠি ও কিছু খুচরা টাকা এবং তাঁর প্রেয়সীর নাম ঠিকানা লিখা এক টুকরো কাগজ আহত সহযোদ্ধার হাতে তুলে দেন। তারপর আবেগ আপ্লুত কন্ঠে ক্যাপ্টেন বললেন, জানিনা এ ভয়ানক অসম যুদ্ধে কখন কি-যে হয়। যদি কিছু হয়ে যায়, আর কোনদিন ফিরে আসতে না পারি, তবে এগুলো পৌঁছে দেবেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ম্যাজিষ্ট্রেট খান আমির আলী স্বাধীনতার পর তাঁর প্রেয়সীর কাছে সেই নীল খামের চিঠি আর টাকাগুলো পৌঁছে দেন। যুদ্ধ শেষে তাঁদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। তাঁর প্রেয়সীকে কথা দিয়ে ছিলেন এ অগ্নি তরুন বীর উত্তম, বলেছিলেন-যুদ্ধ শেষে স্বাধীন দেশে তোমাকে চিরতরে আপন করে নিয়ে যাব। মুক্ত স্বদেশে স্বাধীনতার মহা আনন্দে আমাদের বিয়ে হবে। তিনি আর ফিরে আসতে পারেননি। প্রীয় মাতৃভূমির মুক্তির জন্য তাঁর দেহের শেষ রক্ত বিন্দুটিও মহালছড়ির বুকে বুক রেখে নিঃশেষে ঢেলে দিয়ে গেলেন। সেদিন মুক্তিবাহিনী সন্ধ্যা পর্যন্ত পাক-বাহিনীর উপর আক্রমন অব্যাহত রেখে রাতের আধারে মহালছড়ি ত্যাগ করে খাগড়াছড়িতে এসে অবস্থান নেয়। মেজর শওকত, ফারুক ও সিপাহী গাড়ী চালক আব্বাছ বাংলা মায়ের এ সূর্য্য সন্তান শহীদ ক্যাপ্টেন আফতাবুল কাদের বীর উত্তম এর মৃতদেহ গাড়ীতে করে রামগড় নিয়ে এসে সমাহিত করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে অবিভক্ত বৃহত্তর জেলা পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বাধীনতা সংগ্রামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি, রামগড়ের মাটিতে এ অগ্নি তরুন শহীদ ক্যাপ্টেন আফতাবুল কাদের বীর উত্তম চির নিদ্রায় শায়িত আছেন। সে সময় অবিভক্ত বৃহত্তর জেলা পার্বত্য চট্টগ্রামের ০১টি মহকুমা ছিল রামগড়। আর খাগড়াছড়ি ছিল রামগড় মহকুমার মহালছড়ি থানাধীন একটি ইউনিয়ন মাত্র। যার নেতৃত্বে এ বাংলা এবং বাঙালীর স্বাধীনতা। সে স্বাধীন বাংলার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল অকুতোভয় বীর শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সম্ভ্রম হারা মা-বোনদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা আর অজস্র লাল সালাম।

লেখক: মোঃ সিরাজুল হক (সিরাজ)

কবি, কলামিষ্ট ও সাংস্কৃতিক কর্মী