জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালন
রাঙ্গামাটিতে আপোষে বিরোধ মীমাংসার নিষ্পত্তির হার ৯৫ শতাংশ
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ, বিনামূল্যে আইনীসেবার দ্বার উম্মোচন’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাঙ্গামাটিতে পালিত হয়েছে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস। সরকার আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায় সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে বিচারপ্রার্থী জনগনকে সরকারি খরচে আইনগত সহায়তা করতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইনগত সহায়তা প্রদান আইন-২০০০ বাস্তবায়ন করেন। যা প্রতিবছর ২৮ এপ্রিল এটিকে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এরই অংশ হিসেবে দেশের অন্যান্য স্থানের মত রাঙ্গামাটিতেও প্রতিষ্ঠিত জেলা লিগ্যাল এইড কার্যালয় এর বিচারক-কর্মকর্তাগন সফলতার সাথেই সরকারের এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছেন।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষ্যে রাঙ্গামাটি জেলা আদালতের চত্বরে প্রান্তিক জনগোষ্টির সমন্বয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রাঙ্গামাটি জেলা বিচার বিভাগের অভিভাবক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এবং জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম এঁর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন, দীপংকর তালুকদার, এমপি, অতিথি ছিলেন, মোঃ তাওহিদুল হক, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, অংসুইপ্রু চৌধুরী, চেয়ারম্যান রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ, মোঃ আবু হানিফ, বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পৌরসভার মেয়র, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, বার এসাসিয়েশনের সভাপতি উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও লিগ্যাল এইড এর প্যানেল আইনজীবি সরকারি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপনের মূল লক্ষ্য ছিল সরকারি াাইনী সেবার সম্পর্কে সচেতন করা, দরিদ্র ও অসহায় জনগনের ন্যায় বিচারে সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা, জনগনকে আইনগত অধিকার বিষয়ে সচেতন করা, সরকারি আইনী সেবার প্রচার প্রসার ঘটানো, সরকারের আইন সহায়তা কার্যক্রমের আরো আকর্যকর, বিস্তৃত এবং শক্তিশালী করা এবং সরকারি-বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার (এনজিও) এর যৌথ উদ্যোগে তার গতিশীল করা।
আলোচনা সভার শুরুতেই মোঃ জুনাইদ, সিনিয়র সহাকরী জজ ও জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা, জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির সার্বিক কার্যক্রমের উপর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তিনি উল্লেখ করেন, আপোষে বিরোধ ১৩৭৮টি মীমাংসার জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৩১৬টি নিষ্পত্তি করা করা হয় যার হার ৯৫ দশমিক ৫০ শতাংশ, সরাসরি উপকারভোগী ১৯৭৪ জন, বিনামূল্যে আইনী পরামর্শ দেয়া হয়েছে ১২৮৯ জনকে, আপোষ বিরোধ মীমাংসার কারনে আদালতে বিচারধীন মামলা কমেছে ৮৭টি, এছাড়াও উপজেলা ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি করা, স্কুল-কলেজ পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীতের সাথে প্রচার সভা, মীমাংসা সভা সহ দরিদ্রদের জন্য আইনজীবি নিয়োগ করা হয়। আপোষ বিরোধ মীমাংসার মাধ্যমে আদায় হয়েছে কোটি ৩৯ লক্ষ ৩১ হাজার ২শত ৯৪ টাকা এর মধ্যে প্যানেল আইনজীবিদের বিল পরিশোধ করা হয়েছে ২লক্ষ ৩৫ হাজার ৯শত টাকা।
এদিকে সভায় উপস্থিত উপকারভোগী এবং সচেতন মহল সিনিয়র সহাকরী জজ ও জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা মোঃ জুনাইদ এর প্রশংসা করেন। একজন সফল কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর সফলতা সহ সরকার আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে বিচারপ্রার্থী জনগনকে সরকারি খরচে আইনগত সহায়তা’র যথেষ্ট প্রচার পেয়েছে বলেও উল্লেখ করেন। এর আগে অতিথিবৃন্দ সহ সকালে আদালত প্রাঙ্গন থেকে একটি র্যালী বের হয়ে তা বনরুপাস্থ পোট্রোল পাম্প চত্বর ঘুরে আবারো আদালত প্রাঙ্গনের সভাস্থলে হাজির হন সকলেই।