প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে সোলার প্লান্ট উচ্ছেদ আতঙ্কে ১২০ পরিবার
॥ কবির হোসেন,কাপ্তাই ॥
রাঙ্গামাটি কাপ্তাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে ব্রিকফিল্ড এলাকায় সোলার প্লান্টের উদ্যােগ গ্রহণ করা হয়েছে। এতে পাশাপাশি দীর্ঘ ৭৯বছর যাবৎ উক্ত জায়গায় বসবাসকারী ৫বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সহ ১২০টি পরিবার উচ্ছেদ আতঙ্কে রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সহ অন্যান্য পরিবারকে রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলাধীন ৪নং ইউনিয়ন এর ৭নং ওয়ার্ডে স্থাপিত ব্রিকফিল্ড এলাকা। এলাকাটির তিনপাশে পাহাড় একদিকে কর্ণফুলী নদী রয়েছে। এলাকাটি অত্যন্ত পাহাড়ী অঞ্চল। ১৯৪৫ সাল হতে ভূমিহীন, অসহায় ও মুক্তিযোদ্বা পরিবার বসবাস করে আসছে। এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে মসজিদ, মক্তব, সরকারী প্রাইমারী স্কুল, কবরস্থান অন্যান্য ধর্মালম্বীদের উপসানালয়সহ শত বছরের পুরোন গাছপালা। পিডিবি উক্ত ব্রিকফিল্ড এলাকায় সোলার প্লান্ট স্থাপন করবে বলে বসবাসকারীদের মোখিকভাবে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। শতবছরের গাছপালা কর্তন করার জন্য লাল রঙ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ অবস্থায় এলাকায় ৫বীর মুক্তিযোদ্বা পরিবারসহ ১২০টি পরিবার উচ্ছেদ আতঙ্কে ভুগছে। এলাকায় বসবাসকারী বীর মুক্তিযোদ্বা নূর মোহাম্মদ ও প্রয়াত নুরুল ইসলাম, রফিক আহমদ, হারিস আহমেদ, সিরাজুল ইসলামের পরিবার উচ্ছেদ নয় বসবাসের জন্য জায়গা চেয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেছে।
আমাদের লাগানো বিভিন্ন গাছে লাল রঙ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। উচ্ছেদ করা হলে আমাদের স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মক্তবে পড়ুয়া ছোট, ছোট শিশু-কিশোরদের কি অবস্থা হবে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা চেয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ইস্রাফিল হোসেন ব্রিকফিল্ড এলাকা পরিদর্শন করে। এবং জানান দেশের জন্য যুদ্বকরে ৪মুক্তিযোদ্ধা মারা গেছে।এবং এখনো একজন মুক্তিযোদ্ধা অসুস্থ হয়ে বিছানায় কাতরাচ্ছে। তাই তাদের উচ্ছেদ কতটুকু যুক্তিযুক্ত। বিষয়টি সুবিবেচনা করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি। উচ্ছেদ আতঙ্কের ঘটনা শুনে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমন দে ও লোকাল প্রতিনিধি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এছাড়া ইতিমধ্যে কয়েটি প্রশাসনিক ভাবে তদন্ত শুরু করেছে।
কাপ্তাই ৪নং ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ জানান সরকারি ভাবে সোলার প্লান্ট করবে ঠিক আছে। তবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করে নয়। এদের তো কোন উচ্ছেদ নোটিশ দেয়া হয়নি। সুতরাং আতঙ্কের কিছু নেই। কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম জানান, বর্তমানে উক্ত ব্রিকফিল্ড এলাকায় কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র (বিউবো) নবায়নযোগ্য জ্বালানী নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিউবো কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে ব্রিকফিল্ড ৩৪.৭৭একর জায়গা রয়েছে। পূর্বের বিভিন্ন স্থাপনা যেমন পিডিবি সুইপার কলোনি, প্রাইমারী স্কুল,মসজিদ, কবরস্থানসহ ইত্যাদি বাদ দিয়ে ২৩.০৬ একর খালী জায়গায় ৭.৬ মেগাওয়াট সোলার প্লান্ট তৈরির করার জন্য দরপত্র আহবান করা হয়েছে। এটি স্থাপিত হলে দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে ১০% বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের লক্ষ্য পুরনে সহায়ক হবে। এদিকে কাপ্তাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুজ্জাহের এক প্রশ্নের জবাবে জানান সরকার বিউবো অভ্যন্তরে ব্রিকফিল্ড এলাকায় সোলার প্লান্ট প্রকল্প করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা তা বাস্তবায়ন করব। তবে কাউকে উচ্ছেদ করে নয়। আমরা এযাবৎ কাউকে উচ্ছেদ নোটিশ দেইনি বলে জানান।এবং তিনি আরোও জানান কিছু কিছু লোক অতি উৎসহী হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উল্টা-পাল্টা লিখে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।