কর্মসৃজন কর্মসূচীতে ১শত ৬৮ জন শ্রমিক কাজ করছে
কাপ্তাই ও বিলাইছড়ি উপজেলায় নৌপথে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ
॥ কবির হোসেন, কাপ্তাই ॥
শুষ্ক মৌসুমে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই লেকের পানি কমে যাওয়ায় কাপ্তাই ও বিলাইছড়ি উপজেলায় নৌপথে যোগাযোগে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। যাতায়াতের সময় ইঞ্জিনচালিত বোট মাঝপথে আটকে গিয়ে সীমাহীন কষ্টে পড়ছে যাত্রী সাধারণ। এসময় যাত্রীরা হাটু সমান পানিতে নেমে উল্টো আটকে পড়া বোট টেনে নিয়ে গন্তব্যে যাওয়ার চেস্টা করছে। এতে করে সাধারণ জনগণ ও সরকারি/বেসরকারি কর্মজীবীরা এ সংকটে পড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বিলম্ব হচ্ছে।
প্রত্যকদর্শী ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর কমে যাওয়ায় বিলাইছড়ি উপজেলা কেংড়াছড়ি হতে ফারুয়া ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় ৫০ কি.মি যাত্রীদের চরম কষ্ট হচ্ছে। যাত্রী শহীদ ও বোট চালক নয়ন জানান, জানুয়ারি হতে মে মাস পর্যন্ত শুস্ক মৌসুমে হ্রদের পানি কমে গিয়ে চলাচলে চরম সংকটে পড়তে হয়। দুর্ভোগ কমাতে প্রশাসন স্থায়ী কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। যার ফলে প্রতি বছর এ ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়।
বুধবার ( ১৯এপ্রিল) সকালে গিয়ে দেখা যায়, কেড়ানছড়ির শতাধিক নারী ও পুরুষ শ্রমিক কাপ্তাই লেক হতে মাটি অপসারণ করে লেকের গভীরতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। আবার অনেক শ্রমিক নৌ চলাচলে সহযোগিতা করছে। গোপাল দাশ জানান, সরকারের ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচীর আওতায় আমরা সকাল হতে এই কেরনছড়ি এলাকার হ্রদ থেকে মাটি অপসারণ করে গভীরতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। মহিলা শ্রমিক আনোয়ার বেগম এবং অমর কান্তি চাকমা ও সোনারাম চাকমা জানান, আমরা বিলাইছড়ি উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে লেকের যে অংশে পানি কমে গেছে সেই অংশে মাটি তোলার কাজ করছি।
১ নং বিলাইছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান জানান, এই মৌসুমে কাপ্তাই-বিলাইছড়ি ও রাঙ্গামাটি নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীরা বেশ অসুবিধার সম্মুখীন হন। তাই ৪০ দিনের কর্মসূচী সৃজন প্রকল্পের মাধ্যমে কাপ্তাই লেকের যেখানে নাব্যতা কমে গেছে সেইখানে শ্রমিক দিয়ে লেক হতে মাটি অপসারণ এর মাধ্যমে কিছুটা হলেও নৌ চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিগত কয়েক বছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড হতে জরিপ করে গেছে যেখানে নাব্যতা কম, সেইখানে ড্রেজিং করবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কার্যক্রম দৃশ্যমান হয় নাই।
বিলাইছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ শামসুদ্দিন জানান, কেরনছড়ি ঐ এলাকায় ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচীতে সর্বমোট ১শত ৬৮ জন শ্রমিক কাজ করে চেষ্টা করছেন যাতে নৌ চলাচল স্বাভাবিক করা যায়।
বিলাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান জানান, বিলাইছড়ি উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের উদ্যোগে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করার প্রয়াস অব্যাহত আছে। এই কাজে সংশ্লিষ্ট সাধারণ মানুষ, শ্রমিক ও জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এই দু:সাধ্য কাজ করা হচ্ছে। এইজন্য তিনি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ জানান।