মানিকছড়িতে ঘনঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ট জনজীবন
॥ মানিকছড়ি উপজেলা প্রতিনিধি ॥
মানিকছড়িতে গত এক সপ্তাহ ধরে তীব্র তাপদাহ ও ঘনঘন লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে পুরো উপজেলাবাসী। তাপদাহে সবচেষে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে মধ্য ও নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষেরা। এতে সর্দি-কাশি ও শাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন বয়সী মানুষ। সেই সাথে কর্মহীন হয়ে পড়েছে অসংখ্য শ্রমজীবি।
মানিকছড়ি আবাসিক (বিদ্যুৎ) প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মানিকছড়ি উপজেলায় বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা ৮ হাজারের অধিক ও লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় প্রায় ১ হাজার। আর এই দুই উপজেলার প্রায় ৯ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ মেধাওয়াট। আর সরবরাহ রয়েছে মাত্র আড়াই মেঘাওয়াট। যা দুই উপজেলায় বন্টন করতে হিমশীম খাচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিভাগ। যদিও পবিত্র মাহে রমজান মাসে সর্বত্র নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কথা থাকলেও হঠাৎ বিদ্যুতের উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণে এমন সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি আব্দুল কাদেরকে অটো চালিয়ে পরিাবারের যাবতীয় খরচ বহন করতে হয়। তিনি জানান, তীব্র গরমে রোজা রেখে অটো চালেতে কি যে কষ্ট হচ্ছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তারপরও পরিবারের চাহিদা মেটাতে করতে হচ্ছে।
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যস্তায় লোডশেডিংয়েল প্রভাব পড়েছে ব্যাপকভাবে। তীব্র গরমে অনেক এলাকায় ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কর্যত অচল হয়ে পড়েছে।
এ নিয়ে মানিকছড়ি বাজার ব্যবসায়ী মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান, জাহিরুল হক, চমক, মুছাসহ অধিকাংশ ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, পবিত্র ঈদ-উল ফিতরকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে বাজারে ক্রেতাদের আনাগোনায় জমে উঠতে শুরু করেছে ঈদের বাজার। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকার কারণে ও প্রচন্ড গরমে ক্রেতারা বেশিক্ষণ দোকানে বসতে চায় না। গরমের কারণে রাতের বেলা ঘুমানোও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ব্যাপারে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো সুরাহা হচ্ছে না।
এদিকে উপজেলা হাসপাতালে ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, শাসকষ্ট ও জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সেই সাথে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ভর্তি রোগীদেরও ভোগান্তির স্বীকার হতে হচ্ছে। অন্যদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে বেশির ভাগ সময় ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইপিএস ও জেনারেটর ব্যবহার করে রোগীদেরকে সময় মত পরীক্ষার রিপোর্ট দিতে হচ্ছে।
মানিকছড়ি উপজেলা আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মোঃ জিয়া উদ্দিন জানান, গ্রীষ্মের তীব্র তাপদাহের কারণে ও পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে। আর বিদ্যুতের সরবরাহ কম থাকায় মাঝে মধ্যে লোডশেডিং হচ্ছে। তবে বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে লোডশেডিং কমে আসবে।