বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের আয়োজনে
ত্রিপুরাদের ঐতিহ্যবাহী সামাজিক উৎসব বৈসু উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে বিশাল র্যালি
॥ দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি ॥
ত্রিপুরাদের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসু উপলক্ষে বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের উদ্যোগে খাগড়াছড়িতে বৈসু উপলক্ষে র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা নিজস্ব পোশাক পড়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। র্যালিতে বর্ণিল পোষাকে পাহাড়ি তরুণ-তরুণী ছাড়াও সব বয়সের হাজার হাজার নারী পুরুষের অংশগ্রহণে এক মিলন মেলায় পরিণত হয়। ত্রিপুরাদের স্মরণকালের বিশাল বর্ণাঢ্য র্যালিতে ঐতিহ্যবাহী গরয়া নৃত্য, ধীনা ড্যান্স একাডেমি, সুষ্মিতা ড্যান্স একাডেমি, য়ারুং ড্যান্স গ্রুপের নৃত্য শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশিত করেন।
শনিবার (৮এপ্রিল) সকালে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ মাঠ থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি শুরু হয়ে খাগড়াছড়ি পৌর টাউনহল প্রাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয়। বৈসুর র্যালি উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন এবং অভ্যন্তরীণ উদ্ধাস্ত নিদিষ্টকরণ ও পুনর্বাসন সর্ম্পকিত টাস্কর্ফোস চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) ও খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, এমপি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষা ও সংস্কৃতির উন্নয়নে প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছে। পার্বত্য অঞ্চলের সকল প্রতি সম্প্রদায়ের লোকেরা দেশের সম্পদের পরিণত হয়ে দেশের হয়ে অবদান রাখবে। সকলে যে যার সংস্কৃতির মাঝে ঐক্যের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে পারি, তাহলে ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি, সেই অঙ্গীকার নিয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান।
তিনি আরো বলেন, আমরা শুধু পোশাকে আশাকে স্মার্ট হলে হবে না। সকল ক্ষেত্রে স্মার্ট হতে হবে। শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করে এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছে। আমরাও সেই স্রোতে গিয়ে একীভূত হয়ে কাজ করতে হবে। তাহলে পাহাড়ি-বাঙালি সহ সকল জাতিগোষ্ঠীকে এগিয়ে আসতে হবে।
এসময় বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুশীল জীবন ত্রিপুরার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ির ২০৩ বিগ্রেডের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ মাহি, পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, জেলা প্রশাসক মোঃ সহিদুজ্জামান, সেনা রিজিয়নের জিটুআই মেজর জাহিদ হাসান, জোন কমান্ডার লে: কর্ণেল মোঃ আবুল হাসনাত, পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শানে আলম, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য খোকনেশ্বর ত্রিপুরা, বাংলা একাডেমি পুরষ্কারপ্রাপ্ত লেখক ও গবেষক প্রভাংশু ত্রিপুরা, বাত্রিকস সাধারণ সম্পাদক স্নেহাশীষ ত্রিপুরা মিঠু, বৈসু উদযাপন কমিটির আহবায়ক সনজীব ত্রিপুরা, বাংলাদেশ ত্রিপুরা যুব কল্যাণ সংসদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নবলেশ্বর ত্রিপুরা লায়ন, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নয়ন ত্রিপুরা সহ বিভিন্ন সামরিক-বেসমারিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য যে, আগামী ১৩-১৫ এপ্রিল এ তিন দিন ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী বৈসু পালন করবে। প্রথমে হারি বৈসু, দ্বিতীয় দিনে বৈসুমা, তৃতীয় দিনে বিসি কাতাল।