ডেনিশ সরকার, ইউএনডিপিকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই
বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূতের রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পরিদর্শন
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পর পরই ডেনমার্ক সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি থেকে বান্দরবান পর্যন্ত প্রায় ১৫০ কিমি ব্যাপী বিদ্যমান রাস্তাটি সব ঋতুতে চলাচল উপযোগি করার জন্য সেই সময় প্রায় ৫০০ কোটি বাংলাদেশী টাকা বরাদ্দ প্রদান করে। যদিও পরবর্তীতে বিভিন্ন কারণে রাস্তাটির উন্নয়ন কাজ করা না গেলেও ডেনিশ সরকারের এ ধরনের আগ্রহ পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীকে ডেনিশ সরকারের সদিচ্ছা ভালোবাসা সম্পর্কে মুগ্ধ করেছে। ১২ মার্চ (রবিবার) বিকাল ৩টায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত Winnie Estrup Petersen রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এর প্রতিনিধি সদস্য অংসুইছাইন চৌধুরীর সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হলে অংসুইছাইন এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত সৌজন্য সাক্ষাতে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যমন্ডিত একটি সম্ভাবনাময় এলাকা। এখানকার জীববৈচিত্র্য খুবই সমৃদ্ধ। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পার্বত্য অঞ্চলের কৃষি, পানি, খাদ্য এবং জীববৈচিত্রের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বিক উন্নয়নে ডেনমার্ক সরকারের বিশেষ কমিটমেন্ট আছে। ইউএনডিপির সহায়তায় ডেনমার্ক সরকার এলাকার উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে এসেছে। বিশেষ করে বিশ^ব্যাপী জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় তার সরকার সহযোগীতা করে থাকে।
সদস্য অংসুইছাইন চৌধুরী রাষ্ট্রদূতকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পর পরই ডেনমার্ক সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি থেকে বান্দরবান পর্যন্ত প্রায় ১৫০ কিমি ব্যাপী বিদ্যমান রাস্তাটি সব ঋতুতে চলাচল উপযোগি করার জন্য সেই সময় প্রায় ৫০০ কোটি বাংলাদেশী টাকা বরাদ্দ প্রদান করে। যদিও পরবর্তীতে বিভিন্ন কারণে রাস্তাটির উন্নয়ন কাজ করা না গেলেও ডেনিশ সরকারের এ ধরনের আগ্রহ পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীকে ডেনিশ সরকারের সদিচ্ছা ভালোবাসা সম্পর্কে মুগ্ধ করেছে। আমরা এজন্যে ডেনিশ সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।
২০০৯ সালে ডানিডার অর্থায়নে ইউএনডিপির মাধ্যমে তিন পার্বত্য জেলায় কৃষি এবং খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্প শুরু হয়। এ প্রকল্পটিও এ এলাকার খাদ্য নিরাপত্তা সৃষ্টিতে ভালো ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া ২০১৯ সাল থেকে ডানিডার অর্থায়নে ইউএনডিপির মাধ্যমে তিন পার্বত্য জেলায় সিসিআরপি (সিএইচটি ক্লাইমেট রেজিলেন্স প্রজেক্ট) নামে আরও একটি প্রকল্প শুরু হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবিলায় প্রকল্পটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। এ প্রকল্পটি ২০২২ সালে বিশ^ জলবায়ু সম্মেলনে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে। এটি ছিল রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের জন্য বিশ^মঞ্চে একটি বড় স্বীকৃতি। এ স্বীকৃতি যেমন পার্বত্যবাসীর জন্য একটি বড় অর্জন তেমনি ডেনমার্ক সরকার এবং ইউএনডিপি না হলে এধরনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আমরা পেতামনা। আমি একারণে ডেনিশ সরকার, ইউএনডিপিকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই।
তিনি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রাপ্ত এ প্রকল্পটি চলমান রাখার জন্য ডানিডার সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া এলাকার খাদ্য নিরাপত্তা সৃষ্টি, জলবায়ু ক্ষতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নেও ডেনিশ সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
সাক্ষাতকার অনুষ্ঠানে ইউএনডিপির বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি Stefan Liller, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাঃ আশরাফুল ইসলাম, নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান, সহকারি আবাসিক প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ চাকমা, ডেনিশ দূতাবাসের উপদেষ্টা বিটাকিন তাসকিন ইসলাম, SID-CHT, UNDP এর National Project Manager সুপ্রদীপ চাকমা ও পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা অরুনেন্দু ত্রিপুরা উপস্থিত ছিলেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি-