[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

সাঁওতালি বর্ণমালার বই ও শিক্ষক নিয়োগের দাবী

‘এসো সাঁওতালি বর্ণমালা শিখি’ খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের হাতে স্মারকলিপি

১৬৯

॥ মোঃ ইসমাইল, পানছড়ি ॥
সাঁওতালি বর্ণমালা (অলচিকি) দিয়ে বই প্রণয়ন, সাঁওতালি ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা চালু ও সাঁওতালি ভাষার শিক্ষক নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবিতে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছে পানছড়ি উপজেলা সাঁওতাল স্টুডেন্টস্ ফোরাম ও সাঁওতাল উন্নয়ন সংসদের নেতৃবৃন্দ।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন সাঁওতাল নেতৃবৃন্দরা। এসময় স্মারকলিপির পাশাপাশি “এসো সাঁওতালি বর্ণমালা শিখি” বই তুলে দেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের হাতে। স্বারকলিপির মাধ্যমে তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর নিকট সাঁওতালের বিভিন্ন দাবি সমুহ তুলে ধরেন।

স্মারকলিপি হতে জানা যায়, ঝরে পড়া আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরিয়ে আনতে এবং তাদের মাতৃভাষায় শিক্ষা দেওয়ার কথা চিন্তা করে ২০১০ সালের প্রণীত শিক্ষানীতিতে সরকারিভাবে আদিবাসীদের মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার কথা বলা হয়। ২০১৩ সালের শুরুতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় উদ্যোগী হয়ে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে জনসংখ্যার দিক থেকে বেশি প্রচলিত ছয়টি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক তৈরি, শিক্ষক প্রশিক্ষণসহ নানা কর্মসূচি হাতে নেয়। এটি আদিবাসীদের ভাষা ও শিশুদের জন্য সরকারের একটি মহৎ উদ্যোগ। আমরা এ জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু চাকমা, মারমা, ককবরক, মান্দি ও সাদরি ভাষায় পাঠ্যবই তৈরি হলেও বর্ণমালা বিতর্কের কারণে আটকে যায় সাঁওতালি ভাষার বই। এখনও এর সমাধান হয়নি। এটা সাঁওতালি ভাষা ও সাঁওতাল শিশুদের জন্য দুঃখজনক।

বর্ণমালা বিতর্কের কারণ হলো সাঁওতালরা নিজস্ব বর্ণমালা (অলচিকি) দিয়ে সাঁওতালি ভাষার বই প্রকাশের দাবি করলেও খ্রিস্টান-মিশনারিরা রোমান বর্ণমালায় বই প্রকাশের দাবি জানায় এবং আর একটি পক্ষ বাংলা বর্ণমালায় বই প্রকাশের দাবি জানায়। সাঁওতালদের নিজস্ব বর্ণমালা আছে। সাঁওতালদের নিজস্ব বর্ণমালা বা সাঁওতালি বর্ণমালার সাঁওতালি নাম হলো ‘অলচিকি’। ‘অল’ শব্দের বাংলা অর্থ হলো ‘লেখা” এবং “চিকি” শব্দের বাংলা অর্থ হলো “বর্ণ”। অর্থাৎ ‘অলচিকি’ শব্দের বাংলা দাড়ায় ‘লেখার বর্ণ’। সাঁওতালদের সমাজ ও সংস্কৃতির সাথে মিল রেখে ১৯২৫ সালে ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের সাঁওতাল সাহিত্যিক ও সাঁওতালি ভাষাবিদ পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু সাঁওতালি বর্ণমালা বা অলচিকি আবিষ্কার করেন। সাঁওতালদের সমাজ ও সংস্কৃতির সাথে মিল থাকার কারণে সাঁওতাল শিশুরা খুব সহজে এই বর্ণমালা শিখতে পারে। অলচিকিকে ২০০৮ সালে ইউনিকোড অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০১৮ সালে সাঁওতালি ভাষার উইকিপিডিয়া প্রকাশিত হয় অলচিকি দিয়ে।

এছাড়াও আরো জানা যায়, ২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতের ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায়ধীন বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে “অলচিকি” দিয়ে সাঁওতালি ভাষায় লেখা-পড়া চলছে। কিন্তু বাংলাদেশে এর কোনো পরিবর্তন আসে নি। সাঁওতালি ভাষা ও সাহিত্যকে এই ক্ষতি থেকে বাঁচাতে বিভিন্ন দাবি নিয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন স্থানীয় সাঁওতাল নেতৃবৃন্দ।

এসময় বাংলাদেশের সাঁওতালদের পক্ষে মানিক মুরমু ও মিন্টু কিস্কু স্বাক্ষরিত পত্রে সাঁওতাল স্টুডেন্টস্ ফোরাম ও সাঁওতাল উন্নয়ন সংসদের আহ্বায়ক মানিক মুরমু, যুগ্ন আহ্বায়ক মিন্টু কিস্কু, যুগ্ন আহ্বায়ক আকাশ মুরমু, প্রচারক সম্পাদক ফাল্গুনী সরেন উপস্থিত ছিলেন।