পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি জালিয়াতি চক্রের বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পর নানান সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ভুমি সমস্যা। ভুমি নিয়ে মানুষে মানুষে এবং সমাজে চরম অস্থিরতাও। তিন পার্বত্য জেলায় ভুমি সমস্যা নিয়ে বসবাস করছেন মানুষ। কোন কোন সময় ভুমি নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা এবং হামলা মামলা খূনো খুনির মধ্যেও জড়িয়ে পড়ছেন মানুষ। এসবের পিছনে সামাজিক সহাবস্থানের মধ্যে বসবাসের আস্থার সংকট, কোথাও কোথাও ভুমি নিয়ে জালিয়াতির আশ্রয়, রাজনৈতিক অপশক্তি সহ তিন সার্কেল চীফ কার্যালয় এবং প্রশাসনের সুদক্ষ দেখভালের কারনেই এসব সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিজ্ঞদের মতামত। যার করানে ভুমি নিয়ে এসব সার্কেল কার্যালয় এবং প্রশাসনে তৈরী হয়েছে জালিয়াতি চক্রের একটি অংশ। ভুমি জালিয়াতির এসব চক্র নানান অপকর্মের মধ্যে সামাজিক সহাবস্থান সংকট, মানুষে মানুষে বিরোধ লাগিয়ে দিয়ে নিজেরাই লুটে নিচ্ছে মানুষের অর্থ। অন্যদিকে সরকারি খরচে আইননী সহায়তা দিতে গিয়ে লিগ্যাল এইড এর মাধ্যমেও কোন কোন সময় ভুমি জালিয়াত ঘটনায় প্রকাশ্রে চলে আসছে। এসব বিষয়ে সরকারের লিগ্যাল এইড যথেষ্ট সচেতনতার মধ্যে সকল অসংগতি চিহ্নত করে বিজ্ঞ বিচারক আইন ও বিচারিক বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
জানা গেছে বান্দরবানের লামা উপজেলায় ভুমি জালিয়াতি চক্রের কারনে সেখানে আনেকেই ভুমিহীন হয়ে পড়ছে। এমনই একটি অভিযোগ উপজেলার সরই ইউনিয়নের অনেকেরই। সম্প্রতি অভিযোগে জানা যায় লাঠিতে ভর করে জীবন চলা মোমেনার স্বামীর রেখে যাওয়া ৪ একর ৫০ শতক জায়গায় চোখ পড়ে ভুমি জালিয়াতি চক্রের। নূয়েপড়া মোমেনার ছেলে মেয়রা তাঁদের পিতার রেখে যাওয়া ভুমির খোঁজ খবর নিতে গেলে দেখতে পান বাবার নামে ২০ শতক জায়গা বাকি সাড়ে ৪ শতক অন্যের নামে তার মানে ভুমি জালিয়াতি চক্রের মাধ্যমে অন্যের নামে হয়ে গেছে। শুধু তাই নয় পার্বত্য চট্টগ্রামে এরক ঘটনা প্রশাসনের ছত্রছায়ায় থাকা এসব ভুমি জালিয়াতচক্র আরো অনেকেরই জায়গা হাতিয়ে নিয়েছে এবং নিচ্ছে। মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে একের জায়াগা অন্যের নামে করা হয়েছে। এসব ঘটনা নিয়ে ভুক্তোভুগী অনেকেই এখন বাড়িঘর ছাড়া হবার উক্রম। অসহায়রা এখন ভুমি জালিয়াতচক্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। সম্প্রতি সেখানে শতাধিক নারী-পুরুষ মিলিত হয়ে মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেছে। এসব অন্যায়ের বিচার চেয়ে ভুমি জালিয়াতে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছে।
ঠিক এভাবেই তিন পার্বত্য জেলার সদর সহ বিভিন্ন উপজেলায় ভুমি জালিয়াত চক্র তলে তলে নানান অপকর্মগুলো চালিয়ে মোটা অংকের টাকা লুটে নিচ্ছে। প্রশাসনের এবং সার্কেল চীফদের কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট প্রধানদের সুদৃষ্টি রাখা দরকার বলে ভুক্তোভুগী জানিয়েছেন। কেননা এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের অজান্তে ভুমি জালিয়াতচক্রগুলো যেনতেন করে মানুষ ঠকাচ্ছে সেই সাথে ভুমি নিয়ে মানুষে মানুষে বিরোধও সৃষ্টি করে চলেছে। ভুমিবিরোধ নিয়ে তিন পার্বত্য জেলার অনেক স্থানে মারামারি, হামলা মামলা ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। তিন পার্বত্য জেলা যথাক্রমে রাঙ্গামাটি খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানে ভুমি জটিলতা লেগেই রয়েছে। মানুষের কল্যাণে সুন্দর সহাবস্থানের জন্য সমাজে এবং প্রশাসনের আড়ালে লুকিয়ে থাকা এসব ভূমি জালিয়াতি চক্রের শাস্তি নিশ্চিত করুন। অন্যদিকে সরকারি খরচে আইননী সহায়তা দিতে গিয়ে লিগ্যাল এইড এর মাধ্যমেও কোন কোন সময় ভুমি জালিয়াত ঘটনায় প্রকাশ্যে চলে আসছে। এসব বিষয়ে সরকারের লিগ্যাল এইড যথেষ্ট সচেতনতার মধ্যে সকল অসংগতি চিহ্নত করে বিজ্ঞ বিচারক আইন ও বিচারিক বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।