প্রশাসন তথা পরিবেশবাদীদের সজাগ থাকতে হবে
প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ফুল ঝাড়ুর স্থানগুলো যাহাতে নষ্ট না হয়
বাসা-বাড়ির ধুলোবালি ময়লাগুলো পরিস্কার করতে সেই আদি থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে ফুল ঝাড়ু। একটি সময় এটির বিকল্প ছিল না বলেই চলতো। কিন্তু দিন দিন আধুনিকতার ছোঁয়ায় বাসা-বাড়ির এই গুরুত্বপূর্ন পন্যটির চাহিদা অনেকের মাঝে কমতে থাকলেও আদি এবং অনেকটা ঐতির্য্যরে এই পন্যটির কোন হেলাফেলাও নেই। আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানব সভ্যতার উন্নয়নে পাহাড় পর্বতে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো এই ফুল ঝাড়ুর কদরটাকে অনেকে দরদ দিয়ে বঝুতে চেষ্টা করছে আবার অনেকে গৃস্থলী কাজের ঐতির্য্যরে এই পন্যটিকে শত আধুনিকতার মাঝে ধরে রাখছে। বাজারে তার দাম যাই হোক না কেন আধুনিক মানব সভ্যতার মাঝেও এ পন্যটিকে ঘরের কোন একটি কক্ষের কোনে তার মতো করেই রাখছে। কারন এ পন্যটি রাখার সাথে এটি বাড়ির একটি গুরুত্বপূর্ন পন্য বলে।
আমরা জানি শুধু পাহাড় পর্বতেই নয় দেশ গ্রামের ছোট বড় পাহাড় টিলাতেও এটি জন্মাতো বলেও দেখা গেছে। আমাদের মা-বোনেরা বাসা-বাড়ি পরিস্কার করতে তার ব্যবহার করতো স্বযত্নে। বর্তমান যুগে মাটির বাড়ি হোক আর বড় বড় দালানই হোক তার ব্যবহারও কিন্তু কমতি নেই। যদিও অনেকে দালনকোটায় এখন আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে বাসা-বাড়ির ময়লা পরিস্কার করা হচ্ছে, করছে। এসব আধুনিক যন্ত্রের উৎপাদন খরচ যেমন লাগছে তেমনি যথেষ্ট দাম দিয়েও কিনতে হচ্ছে। কিন্তু পাহাড় পর্বতে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ফুল ঝাড়ু এর কদর কমাতে পারেনি মানব সভ্যতাও অথচ কোন ধরনের উৎপাদন খরচ ছাড়াই গৃহস্থালীর কাজের গরুত্বপূর্ন পন্য হিসেবে তার ফুল ঝাড় নিশ্চিত মানের বলেই দন্ডায়মান। দেখা যায় পাকা দালান কোটার আস্তরনেও এর ব্যবহার করা হচ্ছে তার কারণ হলো আস্তর করার পরও কোন কোন স্থানে কংক্রিট বালু অথবা উভয়ের বাড়তি কিছু কণা থেকে যায় যা পরিচ্ছন্নের অভাব দেখা দেয়। তাই বলতে গেলে এই ফুল ঝাড়ুর কদর অতীত বর্তমান এবং মানবস।্যতার কাছেও এখনো কমেনি বা তার চাহিদার কমনি নেই।
পার্বত্য চট্টগ্রামগুলোর পাহাড় পর্বতে প্রাকৃতিকভাবে ফুল ঝাড়ুর জন্ম হয় এবং বছরের পৌষ মাঘ মাসে স্থানীয় উদ্যোক্তারা তা সংগ্রহ করে ছোট বড় আঁটি বেঁধে শুকানোর পর বাজারে নিয়ে আসছে। বলা যায় পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকেই এ পন্যের চাহিদা মেঠাতে ভালো ভুমিকা ফুল ঝাড়ুর। স্থানীয় বিশেষ করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির উদ্যোক্তাদের অনেকেই ফুল ঝাড়ু সংগ্রহ করে তা রোদ্রে শুকানোর পর বাজারে বিক্রি করে অনেকেই এ মৌসুমে জীবিকা নির্বাহ করে চলেন। হাট বাজার গুলোতে দেখা যায় মাঝারি এবং বড় বড় আঁটি করে ফুলঝাড়ু সংগ্রহকারী ও উদ্যোক্তারা বাজারে বিক্রি করছে। পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতারা যে যার সাধ্যমত করেই বেচা-কেনা করে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যাচ্ছে। এখানকার উদ্যোক্তা, সংগ্রহকারী এবং ক্রেতা-বিক্রেতাসাধরণ ও ব্যবসায়ীরা বলছেন প্রতিবছর এই মৌসুমে কয়েক কোটি টাকার ফুল ঝাড়ুর ব্যবসা হয়। তাই প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো এ সম্পদের রক্ষা করা জরুরী কেননা এটি অর্থেরও যোগান দিচ্ছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির জনসাধারণ এবং ব্যবসায়ীমহলের মতামত ও দাবি হলো এ ফুলঝাড়ু প্রাকৃতিকভাবেই জন্মাচ্ছে এর জন্য কোন বীজ বা শ্রমের প্রয়োজন হচ্ছে না অথচ অর্থের যোগান পাচ্ছেন। কিন্তু উন্নয়ন করতে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে অযাচিত এবং ব্যপরোয়াভাবে পাহাড় পর্বত কাটা হচ্ছে তাতে করে পরিবেশ এবং সম্পদহানি হচ্ছে আশংখাজনকভাবেই। তাই প্রাকৃতিক আর অর্থনৈতিক এ সম্পদ রক্ষায়ও প্রশাসন তথা পরিবেশবাদীদের সজাগ থাকতেই হবে।