[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে গভীর রাতে ৬১ জন পর্যটক উদ্ধার করল লামা থানা পুলিশ

১১৫

॥ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ॥

লামা উপজেলার মিরিঞ্জা পাহাড় নামক স্থান থেকে নিরাপত্তা জনিত কারণে বিপদে পড়া ৮টি পর্যটক দলের ৬১ জন পর্যটককে উদ্ধার করেছে লামা থানা পুলিশ। শুক্রবার রাত ২টায় উক্ত পর্যটক দলের সদস্য আইমান মাসনুন হুদা তার স্বজনদের বিপদে পড়ার বিষয়টি জানালে স্বজনরা বিষয়টি লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহীদুল ইসলাম চৌধুরী কে অবহিত করে। পরে থানা পুলিশ ৪টি খোলা ট্রাক নিয়ে মিরিঞ্জা পাহাড়ে থেকে তাদের উদ্ধার করে।

লামা থানা সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ জানুয়ারি রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৮টি ট্যুরিষ্ট দলে সর্বমোট ৬১ জন পর্যটক বান্দরবানের আলীকদম থানা এলাকায় মারাইংতং পাহাড়ে রাত্রী যাপনের উদ্দেশ্যে স্থানীয় গাইড ইয়াছিন এর সাথে যোগাযোগ করে এবং আলীকদম এর মারাইংতং পাহাড়ে রাত্রী যাপনের জন্য উপস্থিত হয়। আলীকদম উপজেলা প্রশাসন পূর্ব থেকে মারাইংতং পাহাড়ে বিকাল ৫টার পর থেকে অবস্থান নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও স্থানীয় গাইড ইয়াছিন উক্ত বিষয়টি পর্যটকদের কাছে গোপন করে মারাইংতং পাহাড়ে রাতে ক্যাম্পেইনের জন্য চুক্তি করে পর্যটকদের কাছে থেকে অগ্রিম টাকা নেয়। পরবর্তীতে পর্যটকরা মারাইংতং আসলে স্থানীয় গাইড ইয়াছিন ও তার সহযোগীরা পর্যটকদেরকে মারাইংতং এর চেয়ে সুন্দর ভিউ এবং উঁচু পাহাড়ের ক্যাম্পেইনের আশ্বাস দিয়ে লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের মিরিঞ্জা পাহাড় এলাকায় নিয়ে আসেন।

গাইড ইয়াছিন মিরিঞ্জা পাহাড়ে ক্যাম্পেইনের নামে পর্যটকদের গহীন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে নিয়ে যায় এবং মিরিঞ্জায় তাবুতে থাকার ব্যবস্থা করে। নূন্যতম সুযোগ সুবিধা না থাকায় পর্যটকদের সেখানে নিরাপত্তার অভাব বোধ করে। এই বিষয়ে গাইড ইয়াছিন এর কাছে নিরাপত্তার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করিলে ইয়াছিন ও তার সহযোগীরা পর্যটকদের সাথে খারাপ আচরণ করতে থাকে। এতে পর্যটকদের অনেকেই ভয় পেয়ে যায়। ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ কলেজের ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্র পর্যটক আইমান মাসনুন হুদা তার স্বজনদের বিষয়টি জানালে আইমান হুদার আত্মীয় বিষয়টি লামা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম চৌধুরী’কে অবহিত করে এবং পর্যটকদেরকে উদ্ধার করার জন্য অফিসার ইনচার্জকে অনুরোধ করে।

উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে গত ২৭ জানুয়ারি রাত ২টা ১০ মিনিটে অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে লামা থানা পুলিশের কয়েকটি অভিযানিক টিম দুর্গম মিরিঞ্জা পাহাড়ের গহিন জঙ্গলে গিয়ে দেখেন যে, পর্যটকরা যেখানে রাত্রী যাপনের জন্য ক্যাম্পেইন করেছেন সেখানে প্রায় সময় বন্য হাতি চলাচল করে এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে তাদের উদ্ধার করে গভীর রাতে ৪টি খোলা ট্রাক ব্যবস্থা করে লামা থানায় নিয়ে আসেন।

অফিসার ইনচার্জের তত্ত্বাবধানে সকল পর্যটকদের জন্য খাবার পানি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হয় এবং পর্যটকদের নিরাপদ রাত্রী যাপনের জন্য লামা থানা কম্পাউন্ডের সামনে তাবু টাঙ্গিয়ে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। পর্যটকদের মধ্যে একজন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে দ্রুত পুলিশের সহায়তায় লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। অফিসার ইনচার্জ সকল পর্যটকদের থানায় অবস্থানকালে সার্বক্ষনিক খোঁজ-খবর নেন। গাইড ইয়াছিন এর দ্বারা হেনস্থার স্বীকার হওয়া ৬১ জন পর্যটকদের জন্য অফিসার ইনচার্জের পক্ষ থেকে পরের দিন সকালে গরম খিচুড়ি ও ডিমের ব্যবস্থা করা হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও অন্যান্য স্থান থেকে আগত পর্যটকদের অধিকাংই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র।

লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ভবিষ্যতে বান্দরবান জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ক্যাম্পেইন এর আয়োজন করার ক্ষেত্রে পূর্বে থেকে নিরাপত্তার বিষয় ভাবার অনুরোধ করেন। লামা থানা পুলিশের অফিসার্স ইনচার্জ এর এমন আচরণ দেখে সবাই মুগ্ধ হন, সেই সাথে অফিসার ইনচার্জ এর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য, ঢাকা কলেজ, চুয়েট, ক্যান্টমেন্ট ইংলিশ কলেজ চট্টগ্রাম, বেপজা কলেজ, চট্টগ্রাম এর শিক্ষার্থীগন লামা থানা পুলিশের পর্যটক বান্ধব সুন্দর আচরনের জন্য বাংলাদেশ পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এছাড়াও গাইড ইয়াছিন এর কাছ থেকে পর্যটকদের দেওয়া অগ্রীম টাকা উদ্ধার করে পর্যটদেরকে ফেরৎ দেওয়া হয়েছে।