[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়োজনে বিশ্ব তামাক দিবস উদযাপনরাঙ্গামাটির রাজস্থলীস্থ কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার নিরাপত্তায় দেওয়াল নির্মানের দাবিকাপ্তাইয়ে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ সম্পন্ন ও পুরস্কার বিতরণবরকলে গৃহহীন পরিবারের পাশে আইমাছড়া ইউপি চেয়ারম্যানবান্দরবানের থানচিতে পাহাড় ধসের শঙ্কা, নিম্নাঞ্চলের মানুষের জনজীবন দুর্ভোগেবান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে বিজিবির জব্দ গরু ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা সংঘর্ষে আহত ৪বান্দরবানের থানচিতে পাহাড় ধসে গুরুতর আহত ১রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলায় বন্যহাতির তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড বসতবাড়িকাপ্তাই উপজেলায় পাহাড় ধ্বসের ঝুঁকিতে এক হাজার পরিবারদীঘিনালায় আশ্রয় কেন্দ্রে বিএনপি’র ত্রান সহায়তা
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

ফুটবলকে মিনিটে ২০৮বার স্পর্শ করে বান্দরবানের প্রেনচ্যং ম্রো’র গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড

১২২

ফুটবলকে শূন্যে ভাসিয়ে পায়ের পাতা দিয়ে মিনিটে সর্বোচ্চ ২০৮ বার স্পর্শ করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়েছেন বান্দরবানে দুর্গম চিম্বুক পাহাড়ের বাসিন্দা প্রেনচ্যং ম্রো। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের অফিস থেকে পাঠানো একটি সনদ গত ১৮ জানুয়ারি বান্দরবানে সুয়ালকে তার বাসায় এসে পৌঁছেছে।

প্রেনচ্যং ম্রো বান্দরবান সদরের ৪নং সুয়ালক ইউনিয়নের চিম্বুক পাহাড়ের পাদদেশে লামাপাড়ার মৃত পিয়াচ্যং ম্রোর ছেলে। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং চট্টগ্রাম ক্লাবের নিয়মিত খেলোয়াড়।

প্রেনচ্যং ম্রো বলেন, ‘ছোটবেলা কেটেছে চিম্বুক পাহাড়ে। সেখানে মাঠের কোনো অস্তিত্বই ছিলো না। পরে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অধীন পরিচালিত বান্দরবানের ম্রো আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০০৪-০৫ সালে ভর্তি হই। সেখানেই খেলাধুলা ও ফুটবলের হাতেখড়ি।’

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘২০২২ সালের শুরুর দিকে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের ব্যাপারটা আমার মাথায় আসে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডধারী বাংলাদেশি কনক কর্মকারের ভিডিও দেখি। তারপর ভাবলাম আমিও চেষ্টা করে দেখি। প্রথমে সহজ ক্যাটাগরি থেকে একটা বেছে নিলাম যেটি হলো গড়ংঃ ভড়ড়ঃনধষষ (ঝড়পপবৎ) ঞড়ব ঞধঢ়ং রহ ঙহব গরহং।’ ‘ফুটবলার হিসেবে এই রেকর্ডটা কঠিন ছিল না। টুকটাক ফুটবল ফ্রিস্টাইল করতে পছন্দ করতাম আর ভিডিও তৈরি করে নিজের পেজে পোস্ট করতাম। পরে এক পর্যায়ে ২ দিন প্র্যাকটিস করে ভিডিও বানিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে আবেদন করলাম। এক মাস পর গিনেস ওয়ার্ল্ড কর্তৃপক্ষ সাড়া দিলো’ বলে জানান তিনি।

প্রেনচ্যং ম্রো আরো বলেন, ‘২০২২ সালের ২৪ এপ্রিল রেকর্ড অ্যাটেম্প করি। এক মাস পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাবমিট করি। ওই ভিডিও তৈরির পর আরও অন্য রেকর্ড ভাঙার চেষ্টা করেছিলাম। ২ নভেম্বর গিনেস থেকে আমাকে মেইল পাঠায় যে তারা এটি অ্যাপ্রুভ করেছে। তবে সনদ দিতে সময় লাগবে।’ ‘আমি যখন রেকর্ডটা ব্রেক করার চেষ্টা করছিলাম তখন রেকর্ড ছিল কুমিল্লার কনক কর্মকারের। তিনি ১ মিনিটে ১৯৭ বার ফুটবল স্পর্শ করেছিলেন। এর মাঝে ঢাকার মুনাকিমুল ২০৭ বার করে ফেলেছিলেন,’ বলেন তিনি।

‘আমি সবসময় এমন কিছু করতে চেয়েছি যেটা আমার ও আমার জাতির জন্য নতুন কিছু হবে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের ঘটনা সম্ভবত আমাদের পাহাড়িদের থেকে এখন পর্যন্ত কারও নেই। এই রেকর্ডটা অনুপ্রেরণা হবে পরবর্তী আরেকটা নতুন রেকর্ড ভাঙার জন্য,’ যোগ করেন প্রেনচ্যং ম্রো।
পরিবারের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেনচ্যুং বলেন, ‘আমার বাবা-মা জুমচাষ করতেন। আমরা ২ভাই ও তিন বোন। আমি সবার ছোট। পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষার সময় ব্রেইনস্ট্রোক হয়ে মা প্যারালাইজড হয়ে যান। এরপর থেকে অভাবে দিন কাটে আমাদের। এমনও দিন গেছে ফুটবল খেলে আমাকে সংসারের খরচ চালাতে হয়েছে।’

‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বড়ভাই লেংঙি ম্রো আমাকে বিনা পয়সায় পড়াতেন। তার প্রচেষ্টায় আর কঠোর পরিশ্রমের পর ফুটবল ইভেন্টে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সাইন্স বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাই।’

তিনি বলেন, ‘বাবাকে সংবাদটা জানালে তিনি খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়েন। মায়ের সেবাযত্ন করতে করতে মানসিক চাপে এক সময় ব্রেইনস্ট্রোক হয়ে বাবা মারা যান। তিনি মারা যাওয়ার ৪ মাস পর মাও মারা যান।’
বর্তমান খেলাধুলার অবস্থা জানতে চাইলে প্রেনচ্যং ম্রো বলেন, ‘২০২০-২১ মৌসুমে ফর্টিস এসসির হয়ে ঢাকায় প্রথমবারের মতো বিসিএল খেলি। সেখানে ভালো কিছু করতে পারিনি। ২০২১ মৌসুমে ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের হয়ে চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার লিগ খেলা শুরু করি। সে বছর ব্রাদার্স ইউনিয়ন চ্যাম্পিয়ন হয়। পাশাপাশি জেলা টিম ও বিশ্ববিদ্যালয় টিমে খেলছি।’

 

সূত্রঃ দ্যা ডেইলি স্টার