[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

লামায় ম্রো পরিবারে আবারো হামলা-অগ্নি সংযোগ

আদিবাসীদের উচ্ছেদে ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি, নির্বাক প্রশাসন

৭২

॥ আকাশ মার্মা মংসিং, বান্দরবান ॥

গেল বেশ কয়েকমাস ধরে লামার রাবার ইন্ডাস্ট্রির অত্যাচার নিপীড়নে শিকার হয়েছেন রেংয়েন কারবারী পাড়াসহ তিন গ্রামের অর্ধ শতাধিক পাড়াবাসী। ৪০০ একর জায়গায় দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে পড়েছে রাবার ইন্ডাস্ট্রির কোম্পানি। একের পর এক অপকর্মে তান্ডব চালিয়ে তিন শতাধিক গ্রামের মানুষকে পথে বসিয়েছেন রাবার কোম্পানি। অভিযোগ উঠেছে রেংয়িন পাড়া গ্রামের ৭টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, হামলা ও লুটপাট সহ নানা কর্মকান্ড চালিয়েছে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রির কোম্পানি। আদিবাসীদের উচ্ছেদে ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে রাবার ইন্ডাস্ট্রির কোম্পানি। বারবার এসব ঘটনা ঘটে গেলেও প্রশাসন যেন নির্বাক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রবিবার দিবাগত-রাত লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ এর দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত দেলোয়ার, নুরু ও মহসিনের নেতৃত্বে বাগানের শ্রমিক ও ৪ ট্রাক বহিরাগত ভাড়াটে লোকসহ প্রায় ২শত জনের অধিক মিলিত হয়ে অগ্নি সংযোগ, হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয় রেংয়েন পাড়া গ্রামে। এছাড়াও দুইঠেঙ ম্রো, রেঙনক, রেংইয়ুঙ ম্রো, লাংরুঙ, চিতলিত ম্রো ও ইয়ংরিঙ ম্রো’র ঘর ও ঘরের সোলার-ব্যাটারিসহ জিনিসপত্র ভেঙে চুরমার করে দেয়। ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীকে মারধর ও পালিত পশু ছাগল, সহ চাউল পর্যন্ত চুরি করে নিয়ে গেছে এই কোম্পানি হামলাকারীরা। এতে ভুক্তভোগীরা হলেন, চামরুম ম্রো, চিংচ্যং ম্রো, রেঙয়িং ম্রো, লাংনক ম্রো, তারা সরই ইউনিয়নের রেংঙয়িং কারবারি পাড়া বাসিন্দা।


প্রত্যক্ষদর্শী রেঙয়িন কার্বারি জানান, লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ এর কয়েকশ লোক গভীর রাতে গ্রামের প্রবেশ করে বর্বর তান্ডব চালায়। এসময় ৯টি বাড়িতে আগুন দেয়। শুধু তাই নয় আদিবাসীদের পালিত গরু, ছাগল, মুরগীসহ ব্যবহৃত মোবাইলও চুরি করে নিয়ে যায়। গ্রামবাসীরা এখন দিশেহারা।

এছাড়া পাশ্ববর্তী লাংক পাড়া গ্রাম প্রধান (কারবারি) লাংক ম্রো জানান, তিন ট্রাকে প্রায় ৩শতের মত লোক এসে আগুন লাগিয়ে দেয়। ৭টি পরিবারের মধ্যে ৩টি ঘর ভষ্মিভুত ও ৪টি ঘর ভাংচুর করে দিয়েছে। সাথে মুরগী ছাগল ও নিয়ে গেছে। তারা সবাই লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রির কোম্পানি লোক বলে জানান তিনি।

এদিকে গত বছর (২০২২) ৯ এপ্রিল থেকে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ সরই ইউনিয়নের রেংয়েন কার্বারি (ম্রো) পাড়া, লাংকম কার্বারী (ম্রো) পাড়া ও জয়চন্দ্র ত্রিপুরা পাড়াবাসীদের ভোগদখলীয় ৪০০ একর জুমভূমি জবরদখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। ইতোমধ্যে আগুন দিয়ে জুমভূমি পুড়িয়ে দেওয়া, পানির উৎসে বিষ প্রয়োগ, ভূমি রক্ষা আন্দোলনের নেতার ওপর হামলা, মিথ্যা মামলাসহ বিভিন্ন উৎপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে পাড়াবাসীদের উচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়েছে রাবার কোম্পানির লোকেরা। তাদের এই কর্মকাণ্ডের হাজারটা অভিযোগও রয়েছে।

সরই ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ইদ্রিজ কোম্পানী বলেন, রাতে আগুন দিয়েছে সেটা শুনেছি। কিন্তু রাবার মালিক পক্ষ অস্বীকার করেছে তাদের লোক যায়নি। ঘটনা ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নয়। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কোন সহযোগিতা রয়েছে কিনা এব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখন ইউনিয়ন থেকে কোন সহযোগীতা করতে পারছি না। ব্যক্তিগত ভাবে সহযোগীতা করা যেতে পারে। তবে আমি এখন ঢাকায়।


এব্যাপারে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রির কোম্পানি কামাল এর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।

লামা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, অগ্নিসংযোগ ঘটনাটি ব্যাপারে আমার জানা নাই বলে উল্লেখ করেন। তবে খোঁজ নিয়ে জানাচ্ছি।

লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোস্তফা জাবেদ কায়সার বলেন, গতকাল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাটি ব্যপারে জানিয়েছেন। লিখিত একটা অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে সহযোগীতা করার ব্যাপারে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি।