মানিকছড়িতে শয়নকক্ষ থেকে প্রবাসী যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার
॥ মোঃ ইসমাইল হোসেন, মানিকছড়ি ॥
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলাধীন যোগ্যাছোলা ইউনিয়নের অন্তর্গত সেমুতাং গ্যাসফিল্ড এলাকার নিজ বাড়ির শয়নকক্ষ থেকে মোঃ সাজ্জাদ হোসেন (২৪) নামের এক প্রবাসীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে মানিকছড়ি থানা পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে কে বা কারা রাতের আধাঁরে ঘরে প্রবেশ করে তাকে গলাকেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়। তিনি ঐ এলাকার মোঃ মাসুদ রানার ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত সাজ্জাদ মাসখানেক আগে কাতার থেকে বাড়িতে এসে ঘরের কাজ শুরু করেছেন। ঘরের কাজ চলার কারণে তিনিও তার মা-ভাই খাবার দাবার তার নানার বাড়িতে করতেন। ঘটনার দিন আনুমানিক রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাসায় সাজ্জাদ, তার ছোটভাই মোঃ মোস্তাফিজ, বন্ধুবর মোঃ আবু বক্কর পার্শবর্তি সিএনজি চালক মোঃ ওমর ফারুক একসাথে ছিলেন। কিছুক্ষণ পর আবু বক্কর ভাতের জন্য তার নানার বাড়িতে যান। তার একটু পরেই সিএনটি চালক ওমর ফারুক তার কাজে সেখান থেকে চলে আসেন। তারপর নিহতের ছোটভাই মোস্তাফিজও বাসা থেকে বেরিয়ে যান। তখন নিহত সাজ্জাদ তার নিজ বাড়ির শয়নকক্ষেই ছিলেন। ঘন্টাখানেক পর একই সাথে তার ভাই মোস্তাফিজ ও আবু বক্কর এক সাথে বাসায় ফিরলে বাইরের লাইট বন্ধ দেখে। পরে ঘরে প্রবেশ করেই সাজ্জাদের গলাকাটা লাশ পান। পরে স্থানীয়রা ছুটে আসেন এবং পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে সহকারি পুলিশ সুপার মানিকছড়ি সার্কেল একেএম কামরুজ্জামান ও মানিকছড়ি থানার ওসি মোহাম্মদ শাহানূর আলম সঙ্গীও ফোর্সসহ ঘটনাস্থালে ছুটে যান। পরে ভোর ৫টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে মানিকছড়ি থানায় নিয়ে আসেন।
মানিকছড়ি থানার ওসি মোহম্মদ শাহানূর আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য লাশ খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে। তবে কে বা কারা এ ঘটনার সাথে জড়িত এখন পর্যন্ত তা জানা যায়নি। তবে তার সাথে থাকা তিনজনকেই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে আনা হয়েছে। এ ঘটনার সহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।
নিহতের মামা মোঃ শরিফ জানান, কোরআনে হাফেজ তার ভাগিনা মোঃ সাজ্জাদ হোসেন কাতার থাকতেন। সেখানে তিনি একটি মসজিদের ইমামতি করতেন। মাস খানেক আগে তিনি দেশে আসেন। এসেই তিনি তার বাড়ির গাইডওয়ালসহ অন্যান্য কাজ শুরু করেন। কাজ শুরু করার কারণে খানাদানা তার নানার বাড়িতে করতেন। ঘটনার দিন সন্ধায় নিহত সাজ্জাদ যোগ্যাছোলা বাজারে চা-নাস্তা খেয়ে তার নানার বাড়িতে মা ও নানা-নানির সাথে ভাত খেয়ে তার নিজ বাড়িতে চলে আসেন। সেখানে তার ছোটভাই মোস্তাফিজ, মায়ের বান্ধবির ছেলে বক্কর ও প্রতিবেশি সিএনজি চালক ওমর ফারুক একসাথেই ছিলেন। তার ছোটভাই মোস্তাফিজ ডাটা রিচার্জ করতে যান এবং তার ছোটভাইয়ের জন্য আবু বক্কর ভাত আনতে যায় ও প্রতিবেশি সিএনজি চালক তার কাজে চলে গেলে তাদের অবর্তমানে কে বা কারা ঘরে প্রবেশ করে তার ভাগিনাকে ( নিহত সাজ্জাদ) গলাকেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
কাতার প্রবাসী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন’র গলাকাটা লাশ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে জনপদে এক ধরণে আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবীও জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী বলছেন এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।