[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

বিপন্ন প্রাণ-প্রকৃতি পরিবেশ এবং ইসলাম

১২০

॥ মোঃ সিরাজুল হক (সিরাজ) ॥

………সকালে ঘুম থেকে উঠার পর থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত পলিথিন-প্লাষ্টিক পণ্যের ব্যবহার ছাড়া আমাদের যেন আর কোন বিকল্প নেই। দীর্ঘদিন যাবৎ পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশের মানুষ এই পরিবেশ বিধ্বংসী প্লাষ্টিক সামগ্রী ব্যবহার করে আসছে। প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এ পণ্যটি আমরা ব্যবহার শেষে আশেপাশে ছুড়ে ফেলি। এখন প্রতিটি ক্ষেত্রেই রয়েছে পলিথিন-প্লাষ্টিকের ব্যবহার। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ এ দেশের মানুষের প্রয়োজনে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ প্লাষ্টিকজাত পণ্য ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু সে সব পণ্যের কম অংশ-ই আবার রিসাইকেল হওয়ার জন্য কারখানায় ফিরে যায়। এখন সিঙ্গেল ইউজ প্লাষ্টিক আমাদের প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশ-কে বিপন্ন করে চলেছে। এ পরিবেশ ঘাতক সিঙ্গেল ইউজ প্লাষ্টিকের বিরুদ্ধে এখন সারা বিশ্বের পরিবেশবাদীদের কঠোর অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের এক গবেষণায় বলেছে, মুদি দোকান থেকে কেনা পণ্য বহন করার জন্য যে সব পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা হয়, সে গুলো প্রকৃতিতে মিশে যেতে ২০ বছর পর্যন্ত সময়ের প্রয়োজন হয়। চা, কফি, জুস কিংবা কোমল পানীয় জাত দ্রব্যের জন্য যে সব প্লাষ্টিকের কাপ ব্যবহার করা হয়ে থাকে, সে সব প্লাষ্টিক বর্জ্যগুলো ৫০ বছর পর্যন্ত প্রকৃতিতে ঠিকে থাকে। এছাড়া ডায়াপার এবং প্লাষ্টিক বোতল ৪৫০ বছর পর্যন্ত পচেঁ না। এভাবে প্রতিনিয়ত প্লাষ্টিক সামগ্রীর ব্যবহার পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ সারা দেশের প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য মারাত্মকভাবে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের ঘটনা, কানাডায় একটি গাছে মাস্কের সাথে আটকে একটি পাখি ঝুলছিল। ইন্টারনেটের কল্যাণে এ হৃদয় বিদারক দৃশ্যটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।

তামাম দুনিয়ার মানুষগুলো স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশের কতটা ভয়াবহ ক্ষতি করেছে, এ দৃশ্যটি তার-ই অন্যতম প্রমাণ। পাখিদের নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে এক গবেষনায় দেখা গেছে যে, কেবল অ্যান্টার্কটিকা ছাড়া সব মহা-দেশেই প্লাষ্টিকের মধ্যেই পাখিদের বসবাস। বর্তমানে সারা বিশ্বের পাখিগুলো এক কঠিন সময়ের মুখোমুখী। প্লাষ্টিকের মধ্যেই বাসা বাঁধছে। সমগ্র পৃথিবীর পাখিগুলো এখন বাসা কিংবা ঘর বাঁধতে ব্যবহার করছে প্লাষ্টিকের দঁড়ি, প্লাষ্টিকের বরশির সুতো, মাছ ধরার জালে ব্যবহৃত প্লাষ্টিকের বেলুন আর রিবন কিংবা ফেলে দেওয়া প্লাষ্টিকের স্যান্ডেল। প্লাষ্টিকের বর্জ্য ও পাখিদের উপর এর প্রভাব নিয়ে অনলাইনে “বার্ডস অ্যান্ড ডেবরিস” নামে একটি গবেষনা পরিচালনা করা হয়। চার বছর ধরে চলা এই প্রজেক্টে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নিজ নিজ এলাকার জীব-বৈচিত্র্যের ছবি আহ্বান করা হয়েছিল। প্রায় এক শতাংশ ছবিতে দেখা গেছে যে, বিপুল পরিমান ফেস মাস্ক জমেছে পাখিদের বিচরণ ক্ষেত্রে, যা কোভিড মহামারির দুই বছরে বর্জ্য হিসাবে ফেলে দিয়েছে মানুষ। আর পাখিরা সেগুলো দিয়ে বাসা তৈরী করেছে। এমনও ছবি দেখা গেছে, যেখানে মাস্কের ফিতা ও তাদের গলায় কিংবা মুখে আটকে আছে। মানুষের ফেলে দেয়া ফেস মাস্ক ও বিপুল পরিমাণ প্লাষ্টিক সামগ্রী এখন প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশ-কে মারাত্মকভাবে হুমকির দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিভিন্ন গবেষনায় জানা গেছে যে, পরিবেশ দুষনের ক্ষেত্রে পলিথিন-প্লাষ্টিক দ্রব্য এখন প্রধান ভূমিকা পালন করছে। অপচনশীল এ পদার্থ আমাদের প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করছে।

প্লাষ্টিক বর্জ্য অতি মাত্রায় বায়ু, মাটি ও পানি দুষণে অন্যতম ভূমিকা রাখছে। এখন খাল-বিল, নদী-নালা, হ্রদ, সাগর, মহা-সাগর থেকে শুরু করে পরিবেশের এমন কোন উপদান নাই যে, যা পলিথিন-প্লাষ্টিকের দুষন থেকে বাদ যাচ্ছে না। এখন জলে-স্থলে মানুষসহ প্রতিটি প্রাণীর শরীরে প্রচুর প্লাষ্টিক কনার অস্থিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে মায়ের দুধেও বিষাক্ত প্লাষ্টিক কনার অস্তিত্ব সারা বিশ্বের বিবেকবান মানুষের উদ্বিগ্নের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষের ফেলে দেয়া পলিথিন কিংবা প্লাষ্টিক বর্জ্য এখন পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশের প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশ-কে হুমকির মুখে ফেলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাঙ্গামাটির রিজার্ভ বাজার লঞ্চ ঘাট এলাকায় হ্রদের জলে আর্বজনার ভাগাড় আমাকে উদ্বিগ্ন করেছে। হ্রদের জলে ভাসতে দেখি, পঁচা পেপে, পঁচা আনারস, পঁচা জাম্বুরা, চিপসের খালী প্যাকেট, বোতলজাত পানীয় পণ্যের খালী বোতল, পলিথিনসহ নানা রকম আবর্জনা। শুধু তাই নয়, হ্রদের বিশাল এলাকা জুড়ে ফেলে দেয়া লঞ্চ-বোটের পোড়া মুবিল, স্বচ্ছ জলরাশি-কে বির্বণ করেছে। কাপ্তাই হ্রদ দৃষণকারী এসব বর্জ্য লঞ্চ, বোট কিংবা বসতবাড়ী থেকে সরাসরি হ্রদের পানিতে ফেলা দেয়া এখানকার অধিকাংশ মানুষের দীর্ঘদিনের বদ-অভ্যাস। এভাবে সমগ্র কাপ্তাই হ্রদ সহ পার্বত্য চট্টগ্রামের নদ-নদী, খাল-বিলগুলোতে প্রতিনিয়ত কোন না কোন ভাবে ক্ষতিকর প্লাষ্টিক-পলিথিনসহ নানা ধরণের পরিবেশ দূষণকারী বর্জ্য ফেলা হচ্ছে।

ফলতঃ প্রতিদিন কাপ্তাই হ্রদ সহ এখানকার নদ-নদী, খাল-বিল গুলোর তলদেশে অসংখ্য পলিথিন-প্লাষ্টিক বর্জ্য জমা হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে কাপ্তাই হৃদের জায়গা দখল করে এখানকার ক্ষমতাবান ব্যক্তি থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষগুলোও নির্মাণ করেছে অসংখ্য কাঁচা-পাকা স্থাপনা। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদও কাপ্তাই হ্রদের জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করেছে। এখানে হ্রদ, খাল-বিল, নদী-নালা দখল করে যারা স্থাপনা নির্মাণ করেছে, সেই স্থাপনায় বসবাসকারী মানুষের পলিথিন-প্লাষ্টিক বর্জ্যসহ নানা ধরণের বর্জ্য সরাসরি জলে ফেলার কারণেও প্রতিনিয়ত হ্রদ, নদ-নদীর পানি দূষিত হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে কাপ্তাই হ্রদসহ পাহাড়ের নদ-নদী, খালগুলোর জীব-বৈচিত্র্য এখন প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে পড়ছে। সচরাচর পাওয়া যেত এমন অনেক মাছ-ই এখন কাপ্তাই হ্রদসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের নদ-নদী, খাল-বিলে দুর্লভ। বিভিন্ন গবেষনা থেকে আরো জানা গেছে যে, প্লাষ্টিক বর্জ্যরে প্রায় ৬০ শতাংশ সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা গেলেও বাকিগুলো প্রকৃতিতেই ছড়িয়ে পড়ে। পলিথিন-প্লাস্টিক বর্জ্যরে ৪৮ শতাংশ মাটিতে, ১২ শতাংশ খাল, নদী ও হ্রদে এবং ০৩ শতাংশ নালায় গিয়ে পড়ে। মাটিতে পড়া প্লাষ্টিকের বড় অংশ পলিথিন ব্যাগ, পণ্যের মোড়ক ও পেকেট। এসব পলিথিন-প্লাষ্টিক বর্জ্য শহরের পানি নিষ্কাশন ও পয়ঃনিষ্কাশনে বাঁধা সৃষ্টি করে। পলিথিন-প্লাষ্টিক বর্জ্য প্রকৃতিতে কোন বাঁধা ছাড়াই থেকে যাচ্ছে। এ বর্জ্য মাটির গুনাগুণ নষ্ট করে গাছ পালা কিংবা ফসলের শিকড়ের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ করছে। প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এ বিষাক্ত বর্জ্য মাটিতে জমা হওয়ার ফলে মাটির মধ্যে স্বাভাবিক বাতাস ও পানি চলাচল ব্যাহত করছে। এতে মাটির প্রাকৃতিক গুনগত মান ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া ক্লোরিণযুক্ত প্লাষ্টিক দীর্ঘ মেয়াদে মাটিতে বিষাক্ত পদার্থ নিঃসৃত করে, যা ভূ-মধ্যস্থ পানি বা নিকটস্থ পানির উৎসে মিশে খাদ্য চক্রের মাধ্যমে জীব-জন্তু সহ মানুষের দেহে প্রবেশ করে। শুধু তাই নয় প্লাষ্টিক দ্রব্যে নানা ধরণের রঞ্জক পদার্থ মেশানো হয়, যা খাদ্য চক্রের মাধ্যমে জীব-জন্তু সহ মানব স্বাস্থের ক্ষতি করে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন এ ক্ষতিকর বিষাক্ত বর্জ্যে মানবদেহে অ-সংক্রমক দীর্ঘ মেয়াদী কঠিন ও জঠিল রোগের জন্ম দিচ্ছে। ক্যান্সারের জন্য প্রদান কারণ গুলোর মধ্যে প্লাষ্টিক অন্যতম। প্লাষ্টিকের ছোট ছোট কনা ও বাতাসের মাধ্যমে মানব দেশে প্রবেশ করছে। তাই পলিথিন-প্লাষ্টিকের বিরূপ প্রভাব থেকে প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশ-কে মুক্ত করার জন্য পাঠজাত পণ্যের ব্যবহারসহ বিকল্প আরো উপায় এখন ভাবতে হবেই। আধুনিক বিশ্বে প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংসের পিছনে প্রধান ভূমিকা পালন করছে সৃষ্টির সেরা জীব নামধারী মানুষের অবিবেচক কার্মকান্ড। মানুষেরই কর্মফলে এখন পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে জলে-স্থলে প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশ বিপন্ন হতে চলেছে। বিগত ১৭ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ দেশে মানুষের হাতে ৯০ টি হাতির মৃত্যুও হয়েছে। সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা কমতে কমতে এখন ১১৪টিতে এসে নেমেছে।

এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদিস শরিফের একটি ঘটনা আলোকপাত করা প্রয়োজন। ইয়া’লা ইবনু মুররাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদিসে তিনি বলেন, একদা বিশ্বনবী হজরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ) এর নিকট বসেছিলাম। এমন সময় একটি বয়স্ক উট দ্রুত গতিতে রাসুল (সাঃ) এর সামনে এসে তার ঘাড়ের সামনের অংশ ঝুঁকাতে থাকল। তখন উটটির চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরছিল। এসময় বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ) আমাকে বললেন, এর মালিককে খুঁজে বের কর। কারণ এর সাথে বিশেষ ঘটনা জড়িত। আমি তার মালিককে খুঁজতে বের হলাম। খুঁজে দেখলাম যে, এর মলিক একজন আনসার সাহাবি। আমি তাকে নবীজির নিকট ডেকে নিয়ে আসলাম। অতঃপর নবীজি উক্ত সাহাবিকে বললেন, তোমার এই উটটির ঘটনা কি? সাহাবি উত্তর দিলেন আল্লাহর কছম আমি তার কিছুই জানি না। তবে আমরা তাকে দিয়ে কাজ করিয়েছি, পানি বহন করিয়েছি, কিন্তু এখন সে আগের মত কাজ করতে পারে না। তাই আমরা গত রাতে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, তাকে জবেহ করে নিজেদের মাঝে মাংস ভাগ করে নেব। বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ) বললেন, তোমরা এটা করবে না, এই উটটি আমার কাছে বিক্রি করে দাও অথবা আমার কাছে দান করে দাও। তারপর সাহাবি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এটি আপনাকে দিয়ে দিলাম। অতঃপর সেটিকে ছাদাকার উটের আলামত লাগিয়ে মদিনায় পাঠিয়ে দেওয়া হল।- (আহমাদ হা/১৭৫৮৩)। অন্য বর্ণনায় রয়েছে বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ) উটের মালিককে বললেন, তোমার উটের কি হয়েছে যে, সে তোমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে? উটটি বলেছে যে, তুমি তাকে দিয়ে বিশ বছর যাবত পানি বহন করিয়েছ, আর এখন সে বার্ধ্যকে উপনীত হয়েছে। অথচ তোমরা তাকে জবেহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছ। উটটির মালিক বললেন, হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ), আপনি সত্যিই বলেছেন, আমি তাকে জবেহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আল্লাহর কসম, আমি তা আর করব না।-(মাজমা উয যাওয়ায়েদ হা/১৪১৫৭)। অন্য বর্ণনায় আছে, নবিজী বললেন, তোমরা কি জান, এই উটটি কি বলছে? সে বলছে যে, তার মালিক তাকে জবেহ করতে চায়।

অথচ এখন মানুষ নির্দয়ভাবে বিনাকারণে অনেক ক্ষেত্রেই জীব-জন্তু, পশু-পাখি তথা অবুঝ প্রাণীকুলের অস্থিত্ব বিলীন করার মহা-উৎসবে মগ্ন রয়েছে। মানুষের অবিবেচক কর্মকান্ডের ফলে পশু-পাখি, মাছ-সহ জলজ ও স্থলজ প্রাণী, বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ তরুলতা দ্রুত বিলুপ্ত ও বিপন্ন হচ্ছে। এমন ধারা অব্যাহত থাকলে একদিন মানব প্রজাতিও বিপন্ন কিংবা বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। এখন বিপন্ন প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষায় ইসলামের নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ পূর্বক আইনের কঠোর প্রয়োগ ছাড়া বিকল্প নেই। আমরা ভুলে গেলে চলবে না যে, প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস করে আমাদের প্রজন্মের বাস যোগ্য পৃথিবী গড়া কখনো সম্ভব-পর নহে। তাই স্বার্থপরের মতো বলতে হয় কেবল মাত্র আপনার, আমার, সকলের ছোট শিশুটির বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে, বিপন্ন প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষায় আসুন, সচেতন হই এবং এগিয়ে আসি।..

লেখক-মোঃ সিরাজুল হক (সিরাজ)

কবি, কলামিষ্ট ও সাংস্কৃতিক কর্মী