পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৫তম বর্ষপুর্তি তিন পার্বত্য জেলায় অনাড়ম্বরভাবে পালিত
উগ্রবাদীরা সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভুল বুঝাচ্ছে!
গেল ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৫তম বর্ষপুর্তি তিন পার্বত্য জেলায় অনাড়ম্বরভাবে পালিত হয়েছে। সরকারি দলের পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন, আইনসৃংখলা বাহিনীও চুক্তির বর্ষপূতি পালন করেছে। এছাড়াও চুক্তির অন্যতম স্বাক্ষরদাতা প্রতিষ্ঠান পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) ও তাদের অংগসংগঠনগুলো পালন করেছে চুক্তির বর্ষপূর্তি। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক একটি চুক্তি। শুধু বাংলাদেশেও নয় বিশ্বের কাছে এবং মানবতার কাছে এ চুক্তি আলোচিত, আলোকিত এবং জুম্ম জাতির অধিকার প্রতিষ্টার একটি সুন্দর দিক নির্দেশনাও বটে। চুক্তির কারনে পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি অস্থিরতার অবসান ঘটলো। কিন্তু এ চুক্তির মাধ্যমে দীর্ঘ বছরের অশান্তির অবসানের বিপরীতে শান্তি স্থাপনে নানান উন্নয়নের উন্মেষ ঘটলেও এখনো নানান আপত্তি অভিযোগ যেন পিছুই ছাড়ছে না। রাজনৈতিক প্রতিকুল পরিস্থিতি এবং অসহযোগীতার অভিযোগের কারনে চুক্তি বাস্তবায়নে নানান অন্তরায় সৃষ্টি হয়ে রয়েছে। বর্তমান সরকারের নীতি নির্ধারনীদের একটাই লক্ষ্য পর্যাযক্রমে চুক্তির পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়ন হবেই।
দেখা যাচ্ছে, চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে পক্ষ বিপক্ষের ভিন্ন মত। সরকারকে সহযোগীতা না করার কারনে চুক্তি বাস্তবায়নে অন্তরায় সৃষ্টি হচ্ছে। রাজনৈতিক মতভেদেরে কারনে জনসংহতি সমিতির সাথে সরকার দল আওয়ামীলীগের সাথে জনসংহতি সমিতির দুরত্ব বাড়ছে। শুধু বাড়ছেই নয় বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে আওয়ামীলগের সাথে জনসংহতি যোজন যোজন ফাঁরাক। লক্ষ্য করা যাচ্ছে এই যোজন যোজন ফাঁরাককে কেউ কেউ আরো লম্বায় নিয়ে দাঁড় করিয়েছে। প্রতিনিয়ত পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতিকে করা হয়েছে ঘোলাটে। এখানে কেউ ক্ষতায় টিকে থাকতে আবার কেউ কেউ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেপড়ে লেগেছে। চুক্তির বর্ষপূর্তি পালনে জনসংহতি সমিতি অভিযোগ করছেন, জনসংহতি সমিতিকে স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন বানানোর অপচেষ্টা অনেকেই মরিয়া। দেশ বিদেশকে দেখানো হচ্ছে জনসংহতি সমিতি গনতান্ত্রিক দল বলে অথচ তারা অস্ত্রধারী, চাঁদাবাজ সংগঠন এবং তারা দেশের জন্য হুমকী। তিনি সরকারের সাথে পার্বত্য চুক্তি বাতিলও হয় নাই, আবার বাস্তবায়ন ঝুলেও আছে। বাইরে বলা হচ্ছে-চুক্তি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আসলে চুক্তি’র সবগুলো ভিতরে ভিতরে বস্তা বন্দি। চুক্তি বাস্তবায়ন হলে কি এমন ক্ষতি হবে। এখানকার অধিবাসীরা তাদের ভূমির অধিকার ফিরে পাবে। পাহাড়ের জন্য সরকারের যে নীতি সেটাই আসল। সন্তু লারমা সরকারকে সহযোগীতা করছে না এটা ভুল বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। চুক্তি বাস্তবায়ন করার জন্যই তো সংগ্রাম তাই সেইদিন সরকারের আশ্বাসের ভিত্তিতে সব ছেড়ে দিয়ে চুক্তি করা হয়। উগ্রবাদীরা সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভুল বুঝাচ্ছে। ভুল তথ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে পথভ্রষ্ট করছে।
কিন্তু কথা হলো পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে শুধু সরকার নয় এখানকার রাজনৈতিক সকল দলকেই আন্তরিক হতে হবে। অপসুবিধাবাদী শক্তিগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে। যেসব কারনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অন্তরায় সৃষ্টি হচ্ছে সেবগুলোও চিহ্নিত করে সকল অন্তরায়গুলোকে দুর করতে হবে। ঐতিহাসিক পার্বত্য চুক্তি নিয়ে সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামীলগের সাভাপতি শেখ হাসিনা’র দুরদর্শিতার যে পরিচয়, শান্তি প্রতিষ্ঠার যে পরিচয় তাতে তিনিও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার যে অধিকারের কথা বলা হচ্ছে তাতে চুক্তি নিয়ে অন্তরায় সৃষ্টিগুলোকে আগে রাজনৈতিক দুরদর্শিতা দিয়ে চিহ্নিত করা জরুরী হয়ে পড়েছে। তাই দোষারোপ নয় পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে উভয়কেই আরো আন্তরিক হতে হবে শান্তি প্রতিষ্টার জন্য এবং এ শান্তিকে নিয়ে প্রাপ্য অধিকারও আদায় করার জন্য।