ইউপিডিএফ থেকে পদত্যাগ করলেন জেলা আহবায়ক ছোটন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা
॥ বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি ॥
আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এর বান্দরবান জেলা আহ্বায়ক ছোটন কান্তি তঞ্চঙ্গা দলীয় পদ হতে পদত্যাগ করেছেন। বুধবার (৩০নভেম্বর) দুপুরে জেলা সদরের একটি হোটেল কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিং করে তিনি তার পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
প্রেস ব্রিফিং এর লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৯৭ হতে প্রসিত বিকাশ খীসার নেতৃত্বে সংগঠনের দিকে ঝুঁকে পড়ে পরবর্তীতে ১৯৯৮সালের ২৬ডিসেম্বর ইউপিডিএফ নামক নতুন সংগঠন গঠন করা হলে, বান্দরবান জেলা ইউনিট আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব প্রাপ্ত হই। দীর্ঘদিন ধরে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে গিয়ে প্রসিত বিকাশ খীসা পূর্ণ শায়ত্ব-শাসন দাবী করলে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত শুরু হয়। ইতিমধ্যে এর ব্যাপকতা আরো বৃদ্ধি পায়, পার্বত্য চুক্তির দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপক সমর্থন থাকলেও চুক্তির বিরোধিতা ব্যাপক প্রচার করতে থাকায় চুক্তি বাস্তবায়নে বিলম্ব হওয়ায় ও অধিকার বঞ্চিত জনগণ চুক্তির বহু বছর পরেও শান্তির মুখ দেখতে পায়নি।
তিনি আরো বলেন, আন্দোলনকারী সংগঠন গুলোতে বিভক্তি বেড়ে গিয়ে বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় আছে। উক্ত পরিস্থিতি যত দীর্ঘ হবে ততো অধিকারবঞ্চিত জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সমস্ত আশার আলো ধ্বংস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে বিধায় এহেন দ্বন্দ্ব পরিহার করে ঐক্য স্থাপনের কোন বিকল্প নেই।
পদত্যাগ করার মূল বিষয়ে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক ও ভঙ্গুর, উচ্চ রক্তচাপ ও লিভার সিরোসিস রোগের ভুগিতেছি। তাই স্বেচ্ছায় প্রসিতপন্থি ইউপিডিএফ সংগঠনের পদবী ও অর্পিত দায়িত্ব হতে সম্পূর্ণ অব্যাহতি নিচ্ছি। আজ হতে কোন জবাবদিহিতা ও দায়িত্ব কর্তব্য পালনে বাধ্য থাকবো না। পার্বত্য অঞ্চলের শান্তিচুক্তির প্রসঙ্গ টেনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ইতিমধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে সকল সংগঠন আত্মপ্রকাশ করেছে তাদের মধ্যে মতের মিল না থাকার কারনে পাহাড়ে শান্তিচুক্তির দীর্ঘায়িত হচ্ছে বলেও মত দেন এই নেতা।
তাঁর মতে, যেকোন দলকে ছাড় দিয়ে ঐক্যে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করা এবং উভয়ের সমন্বয় সাধন মাধ্যমে সকলেই অধিকার সমান রেখে ঐক্যতে গেলে পাহাড়ে দীর্ঘদিনের আন্দোলন সমাপ্তি ঘটবে। পদত্যাগ গ্রহণ করায় নিজের উপর কোন রাজনৈতিক চাপ আসবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শাররীক অসুস্থতার কারনে আমি পদত্যাগ করছি। নিজের ও পরিবারের উপর কোন রাজনৈতিক আক্রোশ না রাখার জন্য বিরোধী দল গুলোর প্রতি অনুরোধ জানান এই নেতা।