[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
সীমান্তে পুশইন ও চোরাচালান ঠেকাতে তৎপর রয়েছে বাঘাইহাট বিজিবিলংগদু উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবির টহল জোরদার: লে. কর্ণেল নাহিদ হাসানরাঙ্গামাটিতে বিয়ের প্রলোভনে কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় যুবক আটকপুশইন ও চামড়া পাচার রোধে রামগড় ৪৩ বিজিবির নিরাপত্তা জোরদাররাজস্থলীতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী পালনচামড়া পাচার ও সীমান্ত দিয়ে পুশইন ঠেকাতে বিজিবি টহল বাড়িয়েছেমাটিরাঙ্গা সেনা জোন কর্তৃক ঈদ উপহার ও মানবিক সহায়তা প্রদানউন্নয়ন কর্মকান্ডে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না: বিজিবি রাজনগর জোন কমান্ডারবান্দরবানের লামা হাসপাতালে প্রথম সাপে কামড়ানো রোগীকে বাঁচালো চিকিৎসকদুর্যোগকালীন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১০আরই ব্যাটালিয়নের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

লামায় ভূমি রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রমে দালালের দৌরাত্ম্য বেড়েছে

১০১

॥ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ॥

আমজাদ হোসেন (৬০)। বান্দরবানের লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ২৯৮নং লাইক্ষ্যং মৌজায় আর/২২৫ হোল্ডিংয়ে ৫ একর ৩য় শ্রেণীর জমির মালিক। ১৯৮১-৮২ সালে সরকার হতে বন্ধোবস্তি পেয়ে জায়গা ভোগদখলে আছেন। আর্থিক সংকটে ২০১২ সালে উক্ত ৫ একর জায়গা হতে ৪.৮০ একর জমি মোঃ শহীদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির কাছে দলিল মূলে বিক্রি করেন ও দখল বুঝিয়ে দেন। কিন্তু মূর্খ ও বৃদ্ধ আমজাদ হোসেনের সরলতার সুযোগ নিয়ে রূপসীপাড়া ইউনিয়নের আবুল হোসেন নামের একটি ভূমি দালাল সিন্ডিকেট উক্ত জায়গা গত ৩১ অক্টোবর ২০২২ইং মাতামুহুরী টুরিজম এন্ড এগ্রো লিমিটেড কাছে আর/২২৫ হোল্ডিং বিক্রির বায়নানামা দলিল করার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। পূর্বের বিক্রিত জমি পুণরায় বিক্রির জালিয়াতির বিষয়টি জানাজানি হলে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভূমি রেজিষ্ট্রেশন কর্মকতা বায়নানামা কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।

এদিকে একই মৌজায় সরকারি তৌজি মূলে আর/৩০১ হোল্ডিংয়ের ৫ একর ৩য় শ্রেণী জায়গার মালিক মৃত কদম আলীর ছেলে আব্দুল মান্নান (৬৩)। গত ৩ মে ২০০৯ইং উক্ত জায়গা হতে ৪.৫০ একর জমি লামা রেজিষ্ট্রেশন অফিসের বায়নানামা দলিল ৩৩৯/০৯ মূলে মৃত ওসমান গনির ছেলে মোঃ ইদ্রিছ এর কাছে বিক্রি করেন এবং ভোগদখল বুঝিয়ে দেন। কিন্তু একই দালাল সিন্ডিকেট এই জায়গাটিও গত ৩১ অক্টোবর ২০২২ইং মাতামুহুরী টুরিজম এন্ড এগ্রো লিমিটেড কাছে বিক্রির বায়নানামা দলিল করার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। এই জালিয়াতির বিষয়টিও জানতে পেরে বায়নানামা কার্যক্রম বন্ধ করেন ভূমি রেজিষ্ট্রেশন কর্মকতা। অদ্ভুত বিষয় হলো দালাল সিন্ডিকেটের প্রধার আবুল হোসেন পূর্বের ও বর্তমানের উভয় দলীলের স্বাক্ষী।

জমির মালিক আমজাদ হোসেন ও আব্দুল মান্নান জানান, রূপসীপাড়ার মৃত তফেজ গাজীর ছেলে মোঃ আবুল হোসেন, নূর হোসেনের ছেলে আনোয়ার হোসেন, মৃত আব্দুর রব এর ছেলে রাজা মিয়া, মৃত রুস্তম আলীর মেয়ে তাছলিমা বেগম সহ একটি ভূমি দালাল সিন্ডিকেট আমাদের টাকার লোভ দেখিয়ে ও ভুল বুঝিয়ে পুণরায় অন্য কোম্পানির কাছে জায়গা বিক্রির প্রস্তার দেয়। তারা ওদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আমাদের ২০ হাজার করে টাকা দেয়। আমরা এই বিষয়ে গত ১লা নভেম্বর ২০২২ইং লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভূমি রেজিষ্ট্রেশন কর্মকতার বরাবরে লিখিতভাবে দলিলের উপর আপত্তি দিয়েছি। এই দালাল চক্র এলাকার অনেককে ভূমিহীন করেছে ও তাদের কারণে ভূমি বিরোধ বাড়ছে। তাদের বিচার হওয়া দরকার।

এবিষয়ে মধ্যস্ততাকারী আবুল হোসেন বলেন, হোল্ডিং আর/২২৫, আর/৩০১ দুইটি বায়নানামা স্তগিত করেছেন ইউএনও সাহেব। নতুন করে অন্য কাগজ নিয়ে বায়নানামা করা হবে। পূর্বের বিক্রিত জায়গা পুণরায় কেন বিক্রি করেছেন এমন প্রশ্ন করলে তিরি উত্তর দেননি।

সম্প্রতি সময়ে লামা ভূমি ও রেজিষ্ট্রেশন অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্য বেড়ে গেছে। এদের উপদ্রবে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। জানা গেছে, লামা ভূমি অফিসে দালালরা অযথা ও অহেতুক বিভিন্ন জমি সংক্রান্ত কাজে আসা মানুষদের নানা কলাকৌশলে ফাঁদে ফেলে কম সময়ে কম খরচে কাজ করে দেয়ার নামে আর্থিক এবং মানসিকভাবে হয়রানি করছেন।

সচেতন মহল জানান, ভূমি অফিস একটি সরকারি সেবামুলক প্রতিষ্ঠান হলেও এটি এখন দালালদের নিজস্ব অফিসে পরিণত হয়েছে। দালালরা ২৪ ঘন্টা ভূমি অফিসে অবস্থান নিয়ে সর্বসাধারণকে হয়রানি করে চলেছে। ভেতরে-বাইরে দালালদের দৌরাত্ম্যের কারণে মানুষ স্বাভাবিকভাবে প্রয়োজনীয় কাজ করতে গিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এতে করে ভূমি অফিসমুখী মানুষ দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে প্রশাসনিক পদক্ষেপ কামনা করেছেন।

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভূমি রেজিষ্ট্রেশন কর্মকতা মোঃ মোস্তফা জাবেদ কায়সার জানান, লামার ২৯৮নং লাইক্ষ্যং মৌজার হোল্ডিং আর/২২৫, আর/৩০১ দুইটি বায়নানামা সহ আরো কয়েকটি রেজিষ্ট্রেশনে জালিয়াতির বিষয় আমাদের তদন্তে বেরিয়ে আসায়, আপাতত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভূমি রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। কোন প্রকার দালালের সহায়তা ছাড়া মানুষ যেন সেবা নিতে পারে, এমন পরিবেশ সৃষ্টিতে আমরা কাজ করছি।