খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে জমকালো আয়োজনে
সাফজয়ী পাহাড়ের সাহসী পাঁচ নারী ফুটবলার ও সহকারি কোচকে সংবর্ধনা
॥ খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি ॥
সাফজয়ী পাহাড়ের পাঁচ নারী ফুটবলার আনুচিং মগিনী, আনাই মগিনী, মনিকা চাকমা, রুপনা চাকমা, ঋতুপূর্ণা চাকমা ও সহকারী কোচ তৃষ্ণা চাকমাকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। এ সময় প্রত্যেককে ২লক্ষ ১হাজার করে আর্থিক অনুদান ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেন অতিথিরা।
এ উপলক্ষে সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকালে ছাদখোলা জীপ গাড়িতে করে ও মোটর শোভাযাত্রাসহ শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন পার্বত্য চট্টগ্রামের ফুটবল কন্যারা। পরে একে একে তাদের উত্তরীয় ও ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান নেতারা। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
খাগড়াছড়ি সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য ও ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স’র চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, এমপি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু’র সভাপতিত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা, রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, মং সাকেল চিফ সাচিংপ্রু চৌধুরী, পুলিশ সুপার মোঃ নাইমুল হক, অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কে. এম. ইয়াসির আরাফাত বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সাফজয়ী ফুটবলারদের ঐতিহ্যবাহী পাহাড়িদের উত্তরীয় পরিয়ে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। পরে পাহাড়ের পাঁচ কৃতী সাহসী ফুটবলার ও সহকারী কোচকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ২লক্ষ ১হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হয়। এসময় পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ অর্থ বছরে আনাই ও আনুচিং এবং মনিকা চাকমার বাড়ি যাওয়ার জন্য ২কোটি ব্যয়ে ব্রীজ নির্মাণ করে দেওয়ার ঘোষণা দেন।
অনুষ্ঠানে খাগড়াছড়ি ডিজিএফআই ডেট কমান্ডার কর্নেল সরদার ইসতিয়াক আহমেদ, জেলা এনএসআই যুগ্ম পরিচালক মোঃ ফিরোজ রাব্বানী, খাগড়াছড়ি ৩২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল এমএইচ হাফিজুর রহমান, খাগড়াছড়ি এএসইউর ডেট কমান্ডার লে. কর্নেল চৌধুরী মোহাম্মদ শামসুল আলম, সাবেক সংসদ সদস্য যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বীর মুক্তিযোদ্ধা রণ বিক্রম ত্রিপুরা, ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী টাস্কফোর্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণ চন্দ্র চাকমা, শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. সুধীন কুমার চাকমাসহ জেলার সকল দপ্তরের প্রধানগণ, বিভিন্ন সামরিক-বৈসামরিক কর্মকর্তা, ফুটবলারদের মা-বাবা, মিডিয়ার প্রতিনিধি এবং বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবর্ধনাকালে খাগড়াছড়ি বিজিবির সেক্টর কমান্ডারের পক্ষ থেকে ফুলের তোরা ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়। পরে খাগড়াছড়ি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের সৌজন্যে সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শত বাধা পেরিয়ে পাহাড়ের কন্যারা এখন শুধু পার্বত্যবাসীর গর্ব নয়, বাংলাদেশের গর্ব। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত জনপদের মেয়ে হয়েও তারা দেশের সুমান উজ্জ্বল করেছেন। নারীদের সাফল্যে পাহাড়বাসী আজ ধন্য ও গর্বিত।