থানচিতে মহারথ উৎসর্গের শেষ হচ্ছে প্রবারণা উৎসব
॥ চিংথোয়াই অং মার্মা,থানচি ॥
আনন্দ-মুখরিত উৎসবের মধ্য দিয়ে বান্দরবানে থানচিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসবের মহারথ টানা শেষে উৎসবের উৎসর্গের সাঙ্গু নদীতে রথ বিসর্জনের শেষ হচ্ছে প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব। এ উৎসব ঘিরে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে খুশীর আনন্দের মুখরিত পরিবেশ ছিলেন।
বুধবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় এ প্রবারণা উৎসব উপলক্ষে থানচি সদরে হেডম্যান পাড়া মাঠ প্রাঙ্গনে থেকে এক বিশাল মনোমুগ্ধকর মহারথ টানা শুরু হয়। এ সময় রথে থাকা বুদ্ধমূর্তিকে পূজারীরা মোমবাতি, ধুপকাঠি জ্বালিয়ে প্রণাম নিবেদনের পাশাপাশি সুখ-শান্তি লাভের আশায় বিভিন্ন পরিমাণ টাকা দান করে, পরে বাজারে অলিগলি ও প্রধান সড়কের প্রদক্ষিণ শেষে সাঙ্গু নদীতে মহারথ বির্সজনের উৎসবটি সমাপ্তি ঘটে।
এদিকে গত তিন দিনব্যাপী বিহারে বিহারে প্রার্থনা, হাজার প্রদীপ প্রজ্জলন, রঙবেরঙে ফানুস উড়ানো, পিঠা তৈরিসহ সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্টানের মধ্য দিয়ে থানচিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের গ্রামে গ্রামে নানান আয়োজনে চলে এই প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব। রঙবেরঙে রঙিন ফানুস বাতির আলোয় মুখর ওঠে পাহাড়ের আকাশ। ভেদাভেদ ভুলে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ অংশগ্রহন করেছে। এ উৎসবের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রতিটি বিহারে বিহারে চলছে ধর্মীয় দেশনা।
থানচির ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ উদযাপন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি উথোয়াইওয়াং মার্মা বলেন, এ উৎসব উদযাপন উপলক্ষে এবারে কেন্দ্রীয় ভাবে ফুটবল টুর্নামেন্ট, ফানুস উড়ানো, পিঠা উৎসব, রথযাত্রাসহ ধর্মীয় দেশনা ও মঙ্গল প্রার্থনা আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ উৎসবের রথযাত্রা শেষে রাতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এ অনুষ্ঠানে উপজেলাবাসী সকল সম্প্রদায়ের মানুষের আমন্ত্রিত জানান তিনি।
এদিকে মহারথ টানা আনুষ্টানিকতা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইহ্লা মং মারমা বলেন, এ প্রবারণা উৎসবের বিভিন্ন বিহারে বিহারে মোমবাতি প্রজ্জলন, হাজার প্রদীপ জালানো, ফানুসবাতি উড়ানো, ধর্মীয় দেশনাসহ নানান আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, উপজেলায় বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসার মানুষের আনন্দের মুখরিত পরিবেশের রথযাত্রা শেষে সাঙ্গু নদীতে রথ উৎসর্গের মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের তিনদিন ব্যাপী এ প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব শেষ হয়েছে।
এ প্রবারণা উৎসবের নিরাপত্তা বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহাঃ আবুল মনসুর বলেন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ‘ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ’ উৎসব যেন নির্বিগ্নে পালন করতে পারে সেজন্য ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উৎসব পালন করেছে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা। আনন্দের মুখরিত পরিবেশের সকল সম্প্রদায়ের মানুষ অংশগ্রহন করছে। এ উৎসবের ঘিরে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।