[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

বিভিন্ন জনকল্যাণ মূলক কাজের জন্য প্রশংসিত মানিকছড়ির ইউএনও রক্তিম চৌধুরী

১৮৬

॥ মোঃ ইসমাইল হোসেন,মানিকছড়ি ॥

চলতি বছরের ১০ মার্চ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকে মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন রক্তিম চৌধুরী। যোগদানের পর থেকে একজন সুদক্ষ উপজেলা নির্বাহি অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। সেই সাথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও স্বপ্রণোদিত হয়ে খোঁজখবর নিয়ে বহু অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে না পারা পরিবারকে করেছেন আর্থিক সহায়তা। সেই সাথে তার দিক নির্দেশনায় উপজেলার ক্রীড়াঙ্গনে এসেছে আমূল পরিবর্তন। নবগঠিত মানিকছড়ি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্যদের সার্বিক সহযোগিতায় ও তার দূরদর্শী দিকনির্দেশনায় খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মানিকছড়ি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা। সেই সাথে জেলা দাবা প্রতিযোগিতায়ও চ্যাম্পিয়ন মানিকছড়ি। এছাড়াও তিনি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, থানার ওসি, ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় রেখে কাজ করছেন তিনি।

বিশেষ করে তিনি প্রশংসা কুড়িয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি ঘর বরাদ্দ দেয়ার ক্ষেত্রে। দাপ্তরিক কাজ কর্মের পাশাপাশি সরকারি ঘর বরাদ্দের ক্ষেত্রে দিনরাত খুঁজে বেড়িয়েছেন প্রকৃত অসহায় গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও স্থানীয়দের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তাদের পরিবারের সন্ধান করতে গিয়েছেন বাসগৃহে। দেখেছেন তাদের বাস্তব চিত্র। শুনেছেন তাদের অসহায়ত্বের কথা। সরকারি ঘর পাওয়ার যোগ্য মনে হলেই সেই পরিবারকে দিয়েছেন সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর বরাদ্ধ।

মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদানের পর তৃতীয় পর্যায়ের ১২২টি অসমাপ্ত ঘরের কাজ সমাপ্ত করেছেন। এছাড়াও চতুর্থ ধাপে চাহিদার অনুকূলে ২শ টি সরকারি ঘর বরাদ্ধ পেয়েছেন তিনি জেলা প্রশাসক থেকে। যার নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। প্রত্যেকটি ঘর প্রদানের পূর্বে নিজেই গিয়ে যাচাই-বাছাই করে প্রতিটি ঘর প্রদান করেছেন তিনি। যে সকল পরিবার কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবেনি সেঁমিপাকা সরকারি ঘরে থাকতে পারবেন। এমন অসংখ্য পরিবারকে দিয়েছেন সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। তাছাড়া তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে উপজেলার সাপুড়িয়া পাড়ায় ১২টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার পাচ্ছে সরকারি ঘর। আরও বেশ কিছু ঘরও বরাদ্ধ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ইউএনও রক্তিম চৌধুরী।

এ সকল সরকারি ঘর প্রদানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও যাচাই-বাছাই কার্যক্রমের দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন দপ্তর প্রদানগণের সার্বিক সহযোগিতা নিয়েছেন। ছুটে চলেছেন প্রতিটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে প্রাপ্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাইয়ের নিখুঁত কার্যক্রম নিজেই পরিচালনা করেছেন। যে সকল স্থানে গাড়ি যোগে যাতায়াতের ব্যবস্থা নেই, সেখানে মোটরসাইকেলে গিয়ে পরিদর্শন করেছেন তিনি। এ কার্যক্রম পরিচালনা করতে কোনো কোনো দিন পড়ান্ত বিকেল পেড়িয়ে ফিরেছে রাতে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জবরুত খান জানান, ইউএনও স্যারের নির্দেশনার আলোকে প্রকৃত গৃহহীন ও ভূমিহীন খুঁজে বের করতে কাজ করেছি। সত্যিকার্থেই যারা সরকারি ঘর বরাদ্ধ পাওয়ার যোগ্য তাদের যাচাই-বাছাই শেষে সঠিক মূল্যায়ন তালিকা প্রেরণ করছি। এ কাজে কিছুটা কষ্ট হলেও সরকারের লক্ষ বাস্তবায়নে কাজ করতে পেরে বেশ ভালো লাগছে।

উপজেলা তথ্য আপা প্রকল্প কর্মকর্তা সুমাইয়া আক্তার জানান, সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর যাতে প্রকৃত গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে প্রদান করা যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করছে ইউএনও স্যার। আর সেই কাজে সহায়তা করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ঘর গুলো পরিদর্শন করছি। কোথাও কোথাও ২-৩ কিলোমিটার পায়ে হেটে যাচাই-বাছাই করতে হচ্ছে। তবুও প্রকৃতরাই যাতে সরকারি ঘর বরাদ্ধ পায় সে লক্ষেই কাজ করছি। ইউএনও স্যারের ঘর বরাদ্ধ প্রদান পূর্বক যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সত্যিই তৃণমূল পর্যায়ে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন ।

যোগ্যাছোলা ইউপি চেয়ারম্যান ক্যয়জরী মহাজন জানান, মানিকছড়ি উপজেলার সদর থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী প্রত্যন্ত এলাকা রয়েছে যোগ্যাছোলা ইউনিয়নে। এবার ইউএনও স্যার নিজেই যাচাই বাছাই করে ইউনিয়নে ৩৫টি ঘর বরাদ্দ দিয়েছে এবং প্রতিটি ঘরেই তিনি নিজেকে গিয়ে পরিদর্শন করেছেন। দিনরাত পরিশ্রম করে অসহায় পরিবার খুঁজে বের করেছেন। স্যারে এমন কার্যক্রমকে স্থানীয়রা সাধুবাদ জানিয়েছেন।

উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, স্যারের আন্তরিকতা ও যথা সময়ে সঠিক দিক নির্দেশনার ফলে এবারের ডিসি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। পাশাপাশি দাবা টুর্নামেন্টও চ্যাম্পিয়ন। সেইসাথে বয়সভিত্তিক খেলাধুলায়ও সাফল্য এসেছে অনেক। বর্তমান ইউএনও স্যারের আন্তরিকতায় মানিকছড়ির ক্রীড়াঙ্গন আরো বহুদূর এগিয়ে যাবে এমনটাই প্রত্যাশা তার।

এ যাবৎ কাল পর্যন্ত কোনো সরকারি কর্মকর্তার পা পড়েনি ২নং বাটনাতলী ইউনিয়নের জমিনের আগা এলাকার নাউক্রা মারমা বলেন, জীবনে কোনো দিন সরকারি কর্মকর্তাদের দেখিনি এ পাড়ায়। কিন্তু বর্তমান ইউএনও স্যার এসেছেন, আমার অসহাত্বের চিত্র দেখে দিয়েছেন সরকারি ঘর বরাদ্ধ। স্যারে এমন কর্মকাণ্ড আমি বেশ আনন্দিত হয়েছি। উপজেলার আরেক নানা সুবিধা বঞ্চিত গ্রাম গোরখানা। সেখানকার মিনুয়ারাও স্যারের আন্তরিকতায় পেছেন সরকারি ঘর।

উপজেলা সদরের কাছাকাছি হলে বিভিন্ন সরকারি সুবিধা থেকে বহুদিন পিছিয়েছিল সাপুড়িয়াপাড়ার অর্ধশতাধিক পরিবার। তবে তারাও বর্তমানে সরকারি নানা সুযোগে-সুবিধার আওতায় এসেছেন। কিন্তু তৃতীয় পর্যায় পর্যন্ত কোনো সরকারি কপালে জুটেনি সেখানে প্লাস্টিক আর বাশ দিয়ে ঝুপড়ি ঘরে বসবাসরত পরিবার গুলোর। তবে বর্তমান ইউএনও স্যারের আন্তরিকতায় সেখানেও দেয়া হয়েছে ১২টি সরকারি ঘর বরাদ্ধ। পর্যায়ক্রমে আরো ঘর বরাদ্ধ প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন ইউএনও রক্তিম চৌধুরী। তাছাড়া ২নং বাটনাতলী ইউনিয়নের ডলু মৌজার অন্তর্ভুক্ত ডিসি পার্কেরও নান্দনিকতার কাজও দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে তারই অধিনে।

এমন প্রশংসনীয় নানা কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রক্তিম চৌধুরী জানান, মুজিববর্ষে ‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ভূমিসহ একটি সেমিপাকা গৃহ নির্মাণের কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। চলছে চতুর্থ ধাপের কার্যক্রম। সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষ গুলোকে উন্নয়নের মূল ধারায় নিয়ে আসার জন্য শেখ হাসিনা সরকার এমন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। যে সকল গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের থাকার জায়গা নেই, ঘর নেই। সে সকল পরিবারকে সরকারি ভাবে ২শতক জমি ও সেমিপাকা একটি ঘর উপহার হিসেবে দিচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা। যা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রী করে দেখাতে পারেননি। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এমন সাহসী উদ্যোগ বাস্তবায়নের লক্ষে প্রকৃত গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে খুঁজে বের করতে উপজেলা প্রত্যন্ত অঞ্চলে আমার ছুটে চলা। যা নিয়মিত কাজের রুটিন হিসেবে নিয়েছি।প্রধানমন্ত্রী স্বপ্ন যাতে বাস্তবায়ন হয়, সে লক্ষেই কাজ করে যাচ্ছি। তাছাড়া নিজের জায়গা থেকে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছি। যতদিন প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকব ততদিন দেশ ও দেশের মানুষের কল্যানে কাজ করে যেতে চাই।